আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে অস্ট্রেলিয়ার পেসারদের মধ্যে সেরা বোলিংয়ের রেকর্ড এতদিন ছিল জেমস ফকনারের। দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে তাকে টপকে গেলেন স্পেন্সার জনসন। তার নতুন কীর্তির কল্যাণে পাকিস্তানকে আবার হারিয়ে সিরিজ নিজেদের করে নিল অস্ট্রেলিয়া।
শনিবার সিডনিতে দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে ১৩ রানে জিতেছে অজিরা। টস জিতে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে ৯ উইকেটে ১৪৭ রান তোলে তারা। লক্ষ্য তাড়ায় বাঁহাতি জনসনের তোপে ২ বল বাকি থাকতে সফরকারীরা ১৩৪ রানে গুটিয়ে যায়।
এক ম্যাচ হাতে রেখেই তিন ম্যাচের সিরিজ জয় নিশ্চিত করল জশ ইংলিসের দল। গত বৃহস্পতিবার ব্রিসবেনে বৃষ্টিবিঘ্নিত প্রথম টি-টোয়েন্টিতে ২৯ রানে জিতেছিল তারা।
ইনিংসের প্রথম ওভারে এলোমেলো বোলিংয়ে ১২ রান দেন জনসন। এমন বিবর্ণ শুরুর পর দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়ান তিনি। নিজের পরের ওভারে শর্ট ডেলিভারিতে সাজঘরে পাঠান সাহিবজাদা ফারহানকে। দুই ওভারের প্রথম স্পেলের পর তিনি আক্রমণে ফেরেন দশম ওভারে। পরপর দুই বলে উইকেট নিয়ে হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনাও জাগান। পাকিস্তানের অধিনায়ক মোহাম্মদ রিজওয়ান ও আগা সালমান কাটা পড়েন ক্যাচ দিয়ে। নিজের বোলিং কোটা শেষ করতে ১৬তম ওভারে বল হাতে পান জনসন। ওই ওভারে তিনি উসমান খানকে আউট করে দলকে দেন গুরুত্বপূর্ণ ব্রেক থ্রু। এক বল পর তার শিকার হন আব্বাস আফ্রিদি।
ম্যাচসেরা হওয়া ২৮ বছর বয়সী জনসন ৫ উইকেট নেন ২৬ রান খরচায়। অস্ট্রেলিয়ার দ্বিতীয় পেসার হিসেবে এই সংস্করণে ৫ উইকেট শিকারের নজির গড়লেন তিনি। এর আগে পাকিস্তানের বিপক্ষেই ২০১৬ সালে ফকনার ২৭ রান খরচায় পেয়েছিলেন ৫ উইকেট।
ব্যাটিংয়ে নেমে উড়ন্ত সূচনা পায় স্বাগতিকরা। ম্যাথু শর্ট ও জেমস ফ্রেজার-ম্যাকগার্কের ঝড়ে মাত্র ৩.১ ওভারে স্কোরবোর্ডে পঞ্চাশ উঠে যায়। কিন্তু ৫২ রানের উদ্বোধনী জুটি ভাঙার পর পথ হারিয়ে ফেলে তারা। অস্ট্রেলিয়াকে দেড়শর নিচে আটকে ফেলেন দুই পেসার হারিস রউফ ও আব্বাস এবং বাঁহাতি স্পিনার সুফিয়ান মুকিম মিলে। রউফ ২২ রানে ৪, আব্বাস ১৭ রানে ৩ ও মুকিম ২১ রানে ২ উইকেট শিকার করেন। শাহিন ও নাসিম ৮ মিলে ওভারে ৮৩ রান দিয়ে থাকেন উইকেটশূন্য।
শর্ট ১৭ বলে ৩২ রান করেন দুটি করে চার ও ছক্কায়। ফ্রেজার-ম্যাকগার্ক তিনটি চার ও একটি ছয়ে ৯ বলে আনেন ২০ রান। এক পর্যায়ে ৯৫ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে ফেলা অজিরা লড়াইয়ের পুঁজি পায় শেষদিকে অ্যারন হার্ডির কারণে। তিনি একটি করে চার ও ছক্কায় ২৩ বলে ২৮ রান করেন।
লক্ষ্য বড় না হলেও ইনিংসের প্রথম ১০ ওভারে মন্থর ব্যাটিংয়ে পাকিস্তান জটিল করে তোলে পরিস্থিতি। ৪৪ রান তুলতে পড়ে যায় তাদের ৪ উইকেট। বাবর ৩ বলে ৩ রানে আউট হন। ফারহান করেন ১০ বলে ৫ রান। ২৬ রান করতে অধিনায়ক রিজওয়ানের লেগে যায় ২৬ বল। সালমান গোল্ডেন ডাকের তেতো স্বাদ নেন।
উসমান ও ইরফান খান পঞ্চম উইকেট জুটিতে করেন পাল্টা আক্রমণ। ৩৫ বলে ৫৮ রানের জুটি হলে তৈরি হয় আশা। কিন্তু উসমান সাজঘরে ফিরলে আবার ছন্দপতন ঘটে পাকিস্তানের ব্যাটিংয়ে। শুরু হয় ব্যাটারদের আসা-যাওয়ার মিছিল। ৩২ রানে শেষ ৬ উইকেট খুইয়ে অলআউট হয় তারা। উসমান খেলেন ৫২ রানের ইনিংস। ৩৮ বল মোকাবিলায় চারটি চার ও একটি ছক্কা মারেন তিনি। হারের ব্যবধান কমানো ইরফান অপরাজিত থেকে যান ৩৭ রানে। তিনিও চারটি চার ও একটি ছক্কা মারেন ২৮ বল খেলে।
জনসনের পাশাপাশি জাভিয়ের বার্টলেট ও অ্যাডাম জ্যাম্পা দারুণ বোলিং করেন। পেসার বার্টলেট ১৮ রানে নেন ১ উইকেট। ২ শিকার ধরতে লেগ স্পিনার জ্যাম্পার খরচা ১৯ রান।