পাট চাষে আগ্রহ হারাচ্ছে আদমদীঘির কৃষক ।
আদমদীঘি (বগুড়া) প্রতিনিধি ঃ দেশের শষ্যভান্ডার হিসেবে খ্যাত বগুড়ার জেলা ধান উৎপাদনের জন্য বিখ্যাত। এক সময় এই জেলায় পাট চাষ হতো ব্যাপক। কিন্তু নায্যমুল্য না পাওয়ায় পাট চাষে আগ্রহ হারাচ্ছেন এ জেলার কৃষকরা।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এ বছর উপজেলায় পাট চাষের কোন লক্ষমাত্রা নেই। কিছু কৃষক ঝুঁকি নিয়ে পাট আবাদ করেন। পাটের তুলনায় অনান্য আবাদ লাভজনক বলে কৃষকরা এই আবাদ করতে চায় না। সান্তাহার ইউনিয়নের ছাতনি-ডেকড়া,প্রান্নাথপুর, সান্দিড়া প্রভৃতি গ্রামগুলিতে কৃষক পাট চাষ করে থাকে।
উপজেলার নশরৎপর ইউনিয়নের কৃষক গোলাম রব্বানী বলেন, গত দুই বছর দুই বিঘা জমিতে পাট চাষে করে তাঁকে লোকসান গুনতে হয়েছে। তাই এই বছর তিনি পাটের আবাদ করেননি। তিনি আরো বলেন,পাট চাষে অনেক শ্রম দিতে হয়। উৎপাদন খরচও বেশি। এক বিঘা জমিতে পাট চাষ করতে বীজ বপন থেকে শুরু পাটের আঁশ ছড়িয়ে শুকানো পর্যন্ত ১৪-১৫ হাজার টাকা খরচ হয়। এক বিঘা জমিতে ভালো ফলন হলে ১০ মন পাট হয়। এই হিসাবে এক মন পাটের দাম ২ হাজার টাকার বেশি হওয়া দরকার। কিন্তু গত বছর পাটের দাম ছিল ১ হাজার ৬০০ থেকে ১ হাজার ৭০০ টাকা পর্যন্ত।
উপজেলার সদর ইউনিয়নের চাষি জাহাঙ্গির খান বলেন,’পাট চাষের উৎপাদন খরচ বেড়েছে। সে তুলনায় পাটের দাম পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে নতুন করে পাট চাষে আগ্রহ নেই। তারাপরও আমরা চাষি মানুষ। চাষ করতে হয় আমাদের। এ বছর ৩০ শতক জমিতে পাটের আবাদ করেছি। দাম ভাল পেলে আগামী বছর পাট চাষে আগ্রহ বাড়বে। আর লোকসান হলে বিকল্প চিন্তা করতে হবে।
এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মিঠু চন্দ অধিকারী বলেন, কৃষকদের পাট চাষে আগ্রহ হারানোর পেছনে নায্যমূল্য না পাওয়া অন্যতম কারণ। আরো কারণ রয়েছে; এ বছর পাটের বীজ বপণের সময় মে মাসে প্রচুর বৃষ্টি হয়েছে। যেমন ফলে নিচু জমিগুলিতে পানি জমে যাওয়ায় অনেক কৃষক বীজ বপণ করতে পারেননি। তা ছাড়া আদমদীঘি উপজেলায় পাট জাগ দেওয়ার জায়গার সংকট রয়েছে। তা বৃষ্টি না থাকায় পাট জাগ দিতেও পারছে না কৃষক। এ সব কারনে পাট চাষে আগ্রহ হারাচ্ছেন চাষিরা।