বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে চাষিরা ব্যস্ত সময় পার করছে বোরো ধান কেটে ঘরে তোলার কাজে। আর এই ধান কাটায় ৮০ ভাগ ভুমিকারাখছে দেশের বিভিন্ন জনপদ থেকে আসা মৌসুমী শ্রমিকরা। কিন্তু বৈশাক মাসের প্রচন্ড তাপদাহে অত্যন্ত স্বাস্থ্যঝুঁকি নিয়ে ধান কাটছে এই উপজেলায় শত শত মৌসুমী শ্রমিকরা।
তবে অনেক মালিক এই শ্রমিকদের জন্য নিয়মিত পানি সরবরাহ, আরামদায়ক কক্ষে থাকার ব্যবস্থা ও
উন্নত খাবারের ব্যবস্থা করছে।
সরজমিনে আজ শনিবার ( ১৩ মে ) উপজেলার কয়েকটি মাঠে গিয়ে দেখা যায়, এই মৌসুমী শ্রমিকরা
প্রচন্ড তাপদাহে বোরো ধান কাটছে। সেই কাটা ধান নিয়ে গিয়ে গৃহস্ত্রের উঠানে রাখছে।
মাঝে মাঝে কাজের ফাঁকে কিছু সময়ের জন্য তারা বিশ্রাম করছে। মাথার উপরে সূর্য যেন
তাপ ঢালছে। বিস্তৃর্ন মাঠে কোথাও কোন স্থানে ছায়া নেই। সকাল থেকে সন্ধা পর্যন্ত
চুক্তিভিত্তিক ধান কাটছে এসব মৌসুমী শ্রমিকরা।
জানা গেছে, এক বিঘা ধান কাটতে শ্রমিকরা চুক্তিভিত্তিক ৪/৫ হাজার টাকা মজুরী নেন। এই
শ্রমিকদের গৃহস্থরা ৩ বেলা আহারের ব্যবস্থা করেন। কোন কোন গৃহস্থ এইসব শ্রমিকদের জন্য
স্যালাইন,সরবত, বিস্কুট সরবরাহ করেন। রাতে এই শ্রমিকদের থাকার ব্যবস্থা করেন গৃহস্থেরা।
আবার কোন কোন গ্রামে এই শ্রমিকরা স্কুল ঘরে অথবা ক্লাব ঘরে রাতে ঘুমান। ধান কাটা
শেষ হয়ে গেলে কোন কোন গৃহস্থ এই শ্রমিকদের জন্য উন্নত খাবারের ব্যবস্থা করেন।
মোঃ জলিল নামে একজন শ্রমিক জানান, এই গরমে ধান কাটতে কষ্ট তো হয়। কিন্তু আমাদের তো
খেটে খেতে হবেই। আমরা প্রতিবার এই অঞ্চলে ধান কাটতে আসি। যাওয়ার সময় ১০/১২ হাজার
টাকা আয় করে নিয়ে যাই। আমাদের বাড়ি পার্বতিপুর। আমরা মোট ১৬ জন ২ সপ্তাহ ধরে এই
এলাকায় ধান কাটছি। মহিন নামে একজন শ্রমিক জানান, অনেক মালিক ভাল ব্যবহার করেন।
অসুস্থ্য হলে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন।
আদমদীঘি কৃষি অফিসে থেকে প্রাপ্ত সূত্র মতে, উপজেলার প্রায় ৭০/৮০ ভাগে ধান কাটা হয়ে
গেছে। এর মাঝে কোন প্রকৃতিক বিপর্যয় দেখা দেয়নি। আবাদ ভাল হয়েছে বলে জানালেন
উপজেলা কৃষি অফিসার মিঠু চন্দ্র অধিকারী। তিনি বলেন, বিভিন্ন জনপদ থেকে আসা
মৌসুমী শ্রমিকরা এই এলাকার জন্য আর্শিবাদ হয়ে আসেন।