1. dailybogratimes@gmail.com : dailybogratimes. :
ফসলী জমিতে পুরাতন ব্যাটারি পুড়িয়ে তৈরি হচ্ছে সীসা, হুমকিতে জনজীবন-ফসল » Daily Bogra Times
Logo বুধবার, ১৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:৩৩ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ :
প্রেম ও হাত খরচ নিয়ে অভিমান, হত্যার পর মাকে ফ্রিজে রেখে দেয় ছেলে পবিত্র ওমরাহ হজ পালন করতে সৌদি আরবে সাকিব ফুলছড়িতে প্রশিকার উদ্যোগে আইনগত সহায়তা কর্মসূচির মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত উল্লাপাড়ায় ধান বীজ পাচ্ছেন ২ হাজার ৬শ কৃষক লালমনিরহাটে কৃষকের বাড়িতে সাড়ে ১১ কেজির বিষ্ণুমূর্তি উদ্ধার মিষ্টি আলু চাষে সফল আটঘরিয়ার কৃষক নুর মুহাম্মদ  ভারতে পালিয়ে যাওয়ার সময় বেনাপোল ইমিগ্রেশনে অর্থঋন মামলার সাজাপ্রাপ্ত আসামি গ্রেপ্তার পলাশবাড়ীতে ইঁদুর দমন অভিযান উপলক্ষ্যে র‍্যালী ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত আত্রাইয়ে প্রধান শিক্ষকদের সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত রাণীনগরে গাঁজাসহ দুই মাদক ব্যবসায়ী আটক বৈষম্যহীন কর্মক্ষেত্র সময়ের দাবি এই স্লোগান নিয়ে জয়পুরহাটে গণ প্রকৌশল দিবস পালিত রাশিয়ার সঙ্গে কৌশলগত চুক্তিতে সই করলেন কিম জং উন পাকিস্তান থেকেই সরে যাচ্ছে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি! ক্রিপ্টোকারেন্সি বিটকয়েনের দাম ৯০ হাজার ডলার বোবার শত্রু নাই, চুপ থাকাই ভালো : চমক

ফসলী জমিতে পুরাতন ব্যাটারি পুড়িয়ে তৈরি হচ্ছে সীসা, হুমকিতে জনজীবন-ফসল

মোঃ সিফাত রানা -
  • বৃহস্পতিবার, ৭ নভেম্বর, ২০২৪
ফসলী জমিতে পুরাতন ব্যাটারি পুড়িয়ে তৈরি হচ্ছে সীসা, হুমকিতে জনজীবন-ফসল
print news

চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি। সারি সারি রাখা হয়েছে পুরাতন ব্যাটারি। প্রায় অর্ধেক দামে কিনে নেয়া হয় অটোরিকশা ও চার্জার ভ্যানের পুরাতন ব্যাটারি। এরপর ব্যাটারিতে থাকা এ্যাসিড বের করে খুলে নেয়া হচ্ছে বিভিন্ন পার্টস। আলাদা করা হচ্ছে প্লাস্টিক ও সীসা। দিনে ব্যাটারি ভাঙ্গার কাজ করা হলেও রাতের অন্ধকারে তৈরি হয় সীসা। 

চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার ঝিলিম ইউনিয়নের জলাহার এলাকায় অবৈধভাবে ফসলী জমিতে গড়ে উঠেছে সীসা তৈরির কারখানা। প্রশাসনের নজর এড়াতে কাপড়, টিন ও ইট দিয়ে ঘিরে রাখা হয়েছে কারখানার আশপাশ। ব্যাটারি পুড়ানোর কালো ধোঁয়া ও বিষাক্ত এ্যাসিড ছড়িয়ে দূষিত হচ্ছে পরিবেশ। ক্ষতি হচ্ছে এই এলাকার প্রধান অর্থকারী ফসল ধানের। 

পুরাতন ব্যাটারি থেকে বের হওয়া এ্যাসিড পানি ছাড়া হচ্ছে সেচ কাজের বড় নালায়। নালা থেকে সেচের মাধ্যমে এসব বিষাক্ত পানি যাচ্ছে ফসলী জমিতে। এতে ফলন কমার পাশাপাশি ধানে দেখা দিয়েছে বিভিন্ন রোগ-বালাই ও চিটা। স্থানীয় বাসিন্দা ও কৃষকরা বলছেন, জনবসতিহীন এলাকা হওয়ায় নির্জনতার সুযোগে এই কারখানা গড়ে তোলা হয়েছে।  

জানা যায়, পুরাতন ব্যাটারির এই কারখানায় কাজ করা বেশিরভাগ লোক বগুড়া ও গাইবান্ধার। তারা ব্যাটারির সকল যন্ত্রাংশ খুলে আলাদা করে ও ব্যাটারি পুড়িয়ে তা বগুড়ায় পাঠায়। সেখানে নতুন ব্যাটারিতে পুনরায় এসব যন্ত্রাংশ ব্যবহার করা হয়। শ্রমিকরা বলছেন, এখানে দৈনিক ১০০-১৫০টি ব্যাটারির যন্ত্রাংশ খোলা ও আগুনে পোড়ানো হয়। 

স্থানীয়রা জানায়, রাত গভীর হলেই পোড়ানো হয় পুরনো ব্যাটারির বিভিন্ন পদার্থ। আগুনে পুড়িয়ে পুরাতন ব্যাটারি থেকে ভিতরের সীসা বের করা হয়। পরে এসব পোড়া ব্যাটারির নির্গত সীসা ও অন্যান্য পদার্থ পুনরায় ব্যাটারি তৈরির কারখানায় বিক্রি করা হয়। স্থানীয়দের অভিযোগ, রাতে যখন ব্যাটারি জ্বালানো হয়, তখন আশপাশের ৩ কিলোমিটার জুড়ে বিষাক্ত ধোঁয়ার সৃষ্টি হয়। এমনকি ইতোমধ্যে আশেপাশের ফসলী জমিতে এ্যাসিড ছড়িয়ে পড়ছে।

কারখানার পাশেই ০৮ বিঘা ফসলী জমি রয়েছে চাঁপাইনবাবগঞ্জের নামোশংকরবাটি এলাকার তরিকুল ইসলামের। তিনি বলেন, এটা স্থাপনের ফলে আমার ধান পুড়ে গেছে। এমনকি আশেপাশের সকল জমির ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে। ফসল নষ্ট হচ্ছে। তাদেরকে বলতে গেলে তারা বলছে, প্রশাসনকে ম্যানেজ করা আছে। তোমাদের যা ইচ্ছে করার করো। 

কৃষক হানিফ আলী জানান, রাতের বেলা পুরানো ব্যাটারিতে আগুন দেয়া হয়। সেসময় বিশাল কুন্ডলী তৈরি হয়। ব্যাপক গন্ধযুক্ত ধোঁয়ায় বিষাক্ত হয়ে উঠে বাতাস। শুনলাম তারা এক বছরের জন্য চুক্তি করে এই ফসলী জমি নিয়েছে। এসব কাজ করতে থাকলে এই এলাকার সকল ফসলী জমি নষ্ট হয়ে যাবে। দ্রুত এই কারখানা উচ্ছেদ করা প্রয়োজন। 

স্থানীয় বাসিন্দা প্রভাত মুরমু বলেন, সুস্পষ্ট নির্দেশনা রয়েছে কৃষি জমিতে কোনধরনের কলকারখানা করা যাবে না। অথচ এখানে ব্যাটারির এ্যাসিড বের করা, বিভিন্ন যন্ত্রাংশ খোলা ও ব্যাটারি পোড়ানোর মতো কাজ করা হচ্ছে। নিজের ব্যবসায়ের স্বার্থে কৃষি জমি ও পরিবেশের ক্ষতি হলেও স্থানীয় প্রশাসন কোন ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না। 

কৃষক আমজাদ আলী বলেন, অটোরিকশার ব্যাটারিতে সালফিউরিক এ্যাসিডসহ বিভিন্ন কেমিক্যাল ব্যবহার করা হয়। ফসলী জমির পাশাপাশি মানবদেহে এসব এ্যাসিড মারাত্মক ক্ষতির কারন। এসব এ্যাসিডের প্রভাবে ক্যান্সার, কিডনীর বিভিন্ন সমস্যা, চর্মরোগসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। 

কারখানা মালিকদের দাবি, এসব কর্মকান্ডে পরিবেশ ও ফসলের কোন ক্ষয়ক্ষতি হয়না। তবে এবিষয়ে ক্যামেরার সামনে কথা বলতে রাজি হয়নি তারা। এবিষয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোছা. তাছমিনা খাতুন বলেন, জনজীবন ও ফসলের জন্য মারাত্বক ক্ষতিকর এই ব্যাটারি কারখানা। ফসলী জমির মাঝে এমন কারখানার বিষয়টি আমরা জানতে পেরেছি। এবিষয়ে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। 

প্রসঙ্গত, গতবছরেও সদর উপজেলার বারোঘরিয়া এলাকায় একই কারখানা স্থাপন করার পর স্থানীয় কৃষকদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে তা বন্ধ করে প্রশাসন।

AH/ Daily Bogra Times

আরো খবর
dbt
© All rights reserved by Daily Bogra Times  © 2023
Theme Customized BY LatestNews