কংকনা রায়, ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) প্রতিনিধি :
মৃদু ও মাঝারী শৈত্যপ্রবাহ, ঘন কুয়াশাসহ কনকনে শীতে দিনাজপুরের ফুলবাড়ী
উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় আলু, টমেটো, সরিষা, বোরোর বীজতলাসহ
বিভিন্ন সবজির আবাদ ঝুঁঁকির মধ্যে পড়েছে। বিশেষ করে আলুখেতে ব্যাপক
হারে পচন রোগ দেখা দিয়েছে। এ রোগে আলুর পাতায় কালো কালো ফোসকা
পড়ে মরে যাচ্ছে তরতাজা সবুজ গাছ। এ রোগ মহামারি আকারে ছড়ালে
উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করা সম্ভব হবে না বলে ধারণা করছেন আলুচাষিরা।
কৃষক ও কৃষিবিদদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, যখন আলুর গাছগুলো
সবুজ রং ধারণ করে সজীব হয়ে উঠেছে, ঠিক সেই মুহূর্তে ঘন কুয়াশা ও
কনকনে শীতের সঙ্গে শৈত্যপ্রবাহ অব্যাহত থাকায় আলুখেতে পচন রোগ দেখা
দিয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে আক্রান্ত খেতে বালাইনাশক ম্প্রে করেও সুফল পাচ্ছেন না বলে
জানিয়েছেন কৃষকরা।
চলতি মৌসুমে উত্তরের অন্যান্য জেলার মতো ফুলবাড়ী উপজেলার চাষিরাও
আগাম জাতের আমন ধান কেটে শুরু করেন আলুর চাষ। মৌসুমের শুরুতেই আলু
বীজের চরম সংকট দেখা দিলে চাষিরা চড়া দামে বীজ সংগ্রহ করে আলুখেত
তৈরি করেন। অল্প দিনের মধ্যেই সবুজে ভরে ওঠে আলুখেত। চাষিরাও বুক বাঁধে
বাম্পার ফলনের আশায়। কিন্তু প্রচন্ড শীত ও ঘন কুয়াশার কারণে সবুজ আলুখেত ও
ইরি-বোরোর বীজতলা বিবর্ণ হতে শুরু করেছে।
এদিকে আমন ধান কাটা মাড়াই শেষে ইরি-বোরো আবাদের ব্যাপক প্রস্তুতি
নিয়েছেন এলাকার কৃষকরা। উপজেলায় এবার ১৪ হাজার ১৭৯ হেক্টর জমিতে ইরি-
বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। আগাম প্রস্তুতি হিসেবে ইরি-বোরো বীজ
বপন করা হয়েছে প্রায় এক মাস আগে।
উপজেলা কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে উপজেলায় ১
হাজার ৮১০ হেক্টর জমিতে আলু চাষ করা হয়েছে, যা গত বছরের চেয়ে ৪০ হেক্টর
বেশি। এ ছাড়া উপজেলায় এবার ১৪ হাজার ১৭৯ হেক্টর জমিতে ইরি-বোরো চাষের
লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। এরজন্য ৭৫০ হেক্টর জমিতে বীজতলা তৈরি করা হয়েছে। ঘন
কুয়াশা আর তীব্র শীতের প্রভাবে ইরি-বোরো বীজতলায় ব্যাপক হারে চারায় মড়ক
ধরেছে। বোরোর চারা রক্ষায় পলিথিন দিয়ে বীজতলা ঢেকে রাখাসহ বেশ কিছু
পরামর্শ দিয়েছে কৃষি বিভাগ।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ রুম্মান আক্তার বলেন, চলমান ঘন
কুয়াশাসহ শীতের কারণে যাতে আলু ও বোরো বীজ তলার তেমন ক্ষতি না হয় জন্য
কৃষকদের কৃষি বিভাগ থেকে প্রয়োজনীয় পরামর্শসহ সহযোগিতা করা
হচ্ছে। তবে বেশিরভাগ বীজতলার চারা গাছ বড় হয়ে যাওয়ায় তেমন একটা ক্ষতির
সম্ভাবনা নেই।