বাংলাদেশের সংবিধানে সকল নাগরিকের বিচার পাওয়ার অধিকারের কথা উল্লেখ থাকলেও অনেক ক্ষেত্রে অস্বচ্ছল, অসহায়, নির্যাতিতা, সমাজের পিছিয়ে থাকা লোকজন বিচারের আশায় আদালতের দারস্থ হতে পরতেন না। ফলে তারা আইনের আশ্রয় নিতে ব্যর্থ হয়ে সাংবিধানিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হতেন।
জাতীয় আইনগত সহায়তা দিবস উপলক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বগুড়ার সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ এ কে এম মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেছেন, সংবিধানে রাষ্ট্রের সকল নাগরিককে আইনের দৃষ্টিতে সমান অধিকার দেওয়া হয়েছে।
লিগ্যাল এইড সমাজের সেসব পিছিয়ে থাকা মানুষের বিচার পাওয়ার অধিকার সুনিশ্চিত করেছে। ফলে সকলে সরকারের এই মানবিক কার্যক্রমের সুফল ভোগ করছেন।
যারা আর্থিক ভাবে অস্বচ্ছল, সহায় সম্বলহীন ও হতদরিদ্র জনগণকে সরকারি খরচে আইনী সেবা দেওয়ার জন্য সরকার ২০০০ সালে আইন প্রণায়ন করে সরকারি খরচে হতদরিদ্র এবং গরিব-দুঃখীদের মামলার ব্যয়ভার বহন করে যাচ্ছে। এজন্য প্রতিটি জেলায় সিনিয়র সহকারী জজ পদ মর্যদার একজন বিচারককে লিগ্যাল এইড অফিসার হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
পারিবারিক বা দাম্পত্য বিরোধ, দেওয়ানী বিরোধ বা আপষযোগ্য ফৌজদারী মামলাসমূহ জেলা লিগ্যাল এইড অফিসারের মাধ্যমে সরাসরি মধ্যস্থার মাধ্যমে নিস্পত্তি করা হচ্ছে। লিগ্যাল এইডের সুফল আরও জনমুখি করার জন্য তিনি সকলকে আন্তরিকতার সাথে দায়িত্ব পালনের আহবান জানান।
বগুড়া জেলা লিগ্যাল এইড কমিটির উদ্যোগে আজ রোববার (২৮ এপ্রিল) বিকেলে জাতীয় আইনগত সহায়তা দিবস উপলক্ষ্যে শহীদ টিটু মিলনায়তনে আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ কথাগুলো বলেন।
সভার শুরুতে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন জেলা লিগ্যাল এইড অফিসার এসএম মাহবুব ইসলাম। সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সোপশাল জজ মো. শহিদুল্লহ্, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল নং-২ এর বিচারক নুর মোহাম্মদ শাহারিয়ার কবির, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল নং-১ এর বিচারক আশিকুল কবির, চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. মনিরুজ্জামান, বগুড়া পৌরসভার মেয়র রেজাউল করিম বাদশা, টিএমএসএস’র নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপিকা ড. হোসনে আরা বেগম, বার’র সভাপতি এড. আতাউর রহমান খান মুক্তা, পিপি এড. আবদুল মতিন, লাইট হাউস’র প্রধান নির্বাহী হারুন রশিদ, টিএমএসএস’র সিনিয়র সহকারী পরিচালক নজিবর রহমান, প্যানেল আইনজীবী এড. হুসনে নুর রশিদ রূপালী ও লিগ্যাল এইড’র সুবিধাভোগী সৈয়দা জান্নাত আকতার মিনা।
সভায় লিগ্যাল এইড’র শ্রেষ্ঠ আইনজীবী হিসেবে এড. আজিজুল হক ফিরোজ ও এড. হুসনে নুর রশিদ রূপালী ক্রেস্ট এবং বিশেষ অবদান রাখায় শুভেচ্ছা স্মারক হিসেবে পৌরসভার মেয়র রেজাউল করিম বাদশা, টিএমএসএস’র প্রধান নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপিকা ড. হোসনে আরা বেগম ও লাইট হাউস’র প্রধান নির্বাহী হারুন রশিদকে ক্রেস্ট প্রদান করা হয়। পরে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।
এর আগে সকাল জেলা জজ আদালত প্রাঙ্গণে দিবসের উদ্বোধন করা হয়। এসময় রাগেবুল আহসান রিপু এমপি, জেলা ও দায়রা জজ এ কে এম মোজাম্মেল হক চৌধুরী, পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী দিবসের উদ্বোধন করে বিচারবৃন্দ, আইনজীবীগণ, বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তা, এনাজিও প্রতিনিধিগণসহ বিচার বিভাগের কর্মকর্তারা র্যালিতে অংশগ্রহণ করেন।