বগুড়ার শাজাহানপুর থানায় হামলা চালিয়ে আসামি ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা ও পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় দুইটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। গতকাল রবিবার সন্ধ্যায় মামলার রেকর্ডের বিষয় নিশ্চিত করেছেন শাজাহানপুর থানার অফিসার ইনচার্জ শহিদুল ইসলাম।
পুলিশের এই কর্মকর্তা জানান, পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় ইউপি চেয়ারম্যান ও স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা নুরুজ্জামানসহ ৪২ জনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাত অনেককে আসামি করে মামলা দায়ের হয়েছে। এছাড়াও আগ্নেয়াস্ত্রসহ উদ্ধারের ঘটনায় নুরুজ্জামান ও তার সহযোগী নাজমুলের বিরুদ্ধে পৃথক মামলা দায়ের হয়েছে। এই দুই মামলার বাদী যথাক্রমে থানার এসআই আনিুসর রহমান ও ফারুক হোসেন।
এর আগে, শনিবার (৬ এপ্রিল) রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে শনিবার রাত ৯টায় আড়িয়া বাজার এলাকায় অভিযানে মদ্যপ অবস্থায় মাদক, ২টি বার্মিজ চাকু ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক মিঠুনকে গ্রেপ্তার করা হয়। মিঠুনের নামে হত্যা, মাদকসহ বেশ কয়েকটি মামলা চলমান। এ ঘটনার পর রাত ১০টার দিকে মাঝিড়া ইউপি চেয়ারম্যান ও উপজেকা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক নুরুজ্জামান ওরফে নুরু অর্ধশতাধিক মোটরসাইকেলের বহর নিয়ে থানায় প্রবেশ করে আসামি মিঠুন মিয়াকে ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় থানার ওসি শহিদুল ইসলামকে ধাক্কা দেয় এবং অপর পুলিশ সদস্যদের ওপর অতর্কিত হামলা চালিয়ে মারপিট করে পালিয়ে যায়। মারপিটে অন্তত পাঁচজন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছে। আহতদের মধ্যে এসআই আনিছুর রহমান, কনস্টেবল ইসমাইল হোসেন, জাহাঙ্গীর আলম, রুহুল আমিন গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে। পরে নুরুজ্জামানসহ আরও লোকজন নিয়ে সংঘবদ্ধ হয়ে আবারও আক্রমণ করতে মাঝিড়ায় ঢাকা-বগুড়া মহাসড়কে অবস্থান নেয়। এ সময় জেলা পুলিশ, র্যাব ও ডিবির সদস্যরা নুরুসহ সাদ্দাম হোসেন রবিন, রমজান আলী, সাইদুর রহমান খোকন, বোরহান উদ্দিন, সেরাজুল ইসলাম, আমিনুল ইসলাম, মো. মিতুল এবং ওয়াবুজ্জামান রাতুলকে গ্রেপ্তার করে। এসময় অভিযান পরিচালনা করে নুরুর বাড়ি থেকে ৭ রাউন্ড গুলিসহ একটি পিস্তল এবং নুরুর ম্যানেজার নাজমুলের বাড়ি থেকে ৮ রাউন্ড গুলিসহ আরও একটি পিস্তল উদ্ধার করা হয়। এ ছাড়াও ৩৬টি মোটরসাইকেল জব্দ করা হয়।
রবিবার বিকালে নিজ কার্যালয়ে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে পুলিশ সুপার( অতিরিক্ত ডিআইজি পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত) সুদীপ কুমার চক্রবর্ত্তী জানান, আসামি নুরুজ্জামানের বিরুদ্ধে হত্যা, অস্ত্র, জমি দখল, সরকারি কাজে বাধা, মাদক আইনে অন্তত ৮-১০টি মামলা রয়েছে। এর আগে সরকারি টেন্ডার চুরির ঘটনায় মাঝিড়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান নূরুজ্জামান বরখাস্ত হয়েছিলেন।
পুলিশ সুপার বলেন, গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে দুইটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলা দায়েরের পর তাদেরকে আদালতে পাঠানো হয়।