বগুড়ায় বেড়েই চলেছে শীতের তীব্রতা। এতে স্থবির হয়ে পড়েছে জনজীবন। কস্টে আছেন নিম্ন আয়ের মানুষ । আজ মঙ্গলবার (১৬ জানুয়ারি) সকালে বগুড়া জেলায় ১০ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর; যা জেলাটিতে এ মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। গতকাল সোমবার (১৫ জানুয়ারি) জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১১ দশমিক ৪ ডিগ্রি।
সামনে শীতের তীব্রতা আরও বাড়ার পাশাপাশি বৃষ্টি হতে পারে বলে জানিয়েছেন বগুড়া আবহাওয়া অফিসের উচ্চ পর্যবেক্ষক গোলাম কিবরিয়া।
এদিকে ঘন কুয়াশা ও হিমেল হাওয়ায় জেলার জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। নিম্ন আয়ের মানুষের ভোগান্তি চরমে। গরম কাপড় গায়ে জড়িয়ে আবার কেউ রাস্তায় খড়কুটো, কাগজ জ্বালিয়ে শীতনিবারণের চেষ্টা করছে। অনেকেই ঘর থেকে বের হচ্ছে না, যতক্ষণ না সূর্যের দেখা মেলে।
ভোর থেকে ঘন কুয়াশার কারণে সড়ক-মহাসড়কে হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করছে যানবাহন। রিকশাচালক, দিনমজুরদের শীত এলেই ভোগান্তি বাড়ে। খেটে খাওয়া এসব মানুষ জীবিকা নির্বাহের জন্য ঘন কুয়াশা উপেক্ষা করে ঘর থেকে বের হলেও কাজ পাচ্ছে না।
শেরপুরের ধুনট মোড় এলাকায় দিনমজুর সাইফুল ইসলামের সঙ্গে কথা হয় । তিনি বলেন, ‘শীতের কারণে ঘর থেকে বের হওয়া কষ্টকর তবু কাজের সন্ধানে বের হয়েছি। এ শীতে জরুরি ছাড়া মানুষ ঘর থেকে বের হচ্ছে না। ফলে কয়েক দিন যাবৎ তেমন কাজ পাচ্ছি না। এ রকম চলতে থাকলে সংসার চালানো কঠিন হয়ে দাঁড়াবে।’
হোটেল শ্রমিক শামিম বলেন, ‘পানিতে হাত দিতেই ভয় লাগছে। মনে হচ্ছে বরফ। কিন্তু আমরা যে কাজ করি বাধ্য হয়েই পানিতে হাত দিয়ে কাজ করতে হচ্ছে।’
রাস্তায় রিকশা নিয়ে বের হয়েছেন আজহার আলী। যাত্রীর জন্য অপেক্ষা করছেন। কিছুক্ষণ পরপরই এদিক-সেদিক তাকিয়ে যাত্রী খুঁজছেন। এ সময় তার সঙ্গে কথা হয়। তিনি বলেন, ‘সংসার চালাতে এই মাঘের শীতেও রিকশা নিয়ে বের হয়েছি। কিন্তু কোথাও যাত্রী খুঁজে পাচ্ছি না। অনেক বেশি প্রয়োজন না হলে কেউ ঘর থেকে বের হচ্ছে না। মানুষজন বের না হওয়ায় বিপাকের মধ্যে পড়েছি। এভাবে চলতে থাকলে সংসার চালানো কঠিন হয়ে পড়বে।’
বগুড়ার আবহাওয়া অফিস কর্মকর্তা গোলাম কিবরিয়া বলেন, ‘জেলায় আজ সকালে ১০ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে, যা চলতি মৌসুমে সর্বনিম্ন। জেলার ওপর দিয়ে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। ১৯ বা ২০ জানুয়ারি জেলায় বৃষ্টি হতে পারে। এতে শীত আরও বাড়বে।