বগুড়ার শেরপুরে কোটা বিরোধী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশের দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়েছে। এতে পুলিশের ওসি, সাংবাদিকসহ অন্তত অর্ধশতাধিক ব্যক্তি আহত হয়েছেন।
এরমধ্যে গুরুতর আহত পুলিশের ওসি রেজাউল করিম রেজাকে স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে ।
আজ বুধবার (১৭জুলাই) বেলা সোয়া একটার দিকে শহরের ধুনট মোড় এলাকায় এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
পরে পুলিশ বেশ কয়েক রাউন্ড রাবার বুলেট ও টিয়ারশেল ছুড়ে আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ দেয়। কিন্তু কোটাবিরোধী শিক্ষার্থীরা উপজেলার বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে অবস্থান নিয়ে মহাসড়ক অবরোধের চেষ্টা চালাচ্ছে।
এতে করে শহরজুড়ে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। আতঙ্কে মার্কেটসহ সব ধরনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দিয়েছেন দোকানিরা। পুলিশও পাল্টা রাবার বুলেট, কাঁদানে গ্যাস ও শটগানের গুলি ছোড়ে। এতে প্রায় ১০ জন শিক্ষার্থী আহত হয়। এ ছাড়াও রুহুল আমিন নামে একজন সাংবাদিক, তিনজন পুলিশ সদস্য ও বেশ কিছু পথচারী ঢিলের আঘাতে আহত হয়। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ছোড়া ঢিলে আব্দুস সামাদ নামের এক পথচারী এবং রহমত আলী ও নজরুল ইসলাম নামে দুই দোকানি আহত হয়েছেন।
পুলিশের গুলিতে আহত অবস্থায় নাছির উদ্দিন ও বাবুকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বগুড়ার শহিদ জিউর রহমান মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে বলে শেরপুর থানা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে।
পুলিশ, প্রত্যক্ষদর্শী ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, চলমান কোটা সংস্কার আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা ও নিহতের ঘটনায় বুধবার বেলা এগারোটার দিকে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে উপজেলার বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা শেরপুর শহীদিয়া আলিয়া মাদ্রাসায় জমায়েত হয়। এরপর বিক্ষোভ মিছিল বের করেন তারা।মিছিলটি শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে।
এভাবে প্রায় তিনঘন্টা ধরে চলে তাদের এই কর্মসূচি। এসময় পুরো শহরটি কোটা আন্দোলনকারীরা দখলে চলে যায়। একপর্যায়ে আন্দোলকারীরা বেলা সোয়া একটার দিকে মহাসড়ক দখল নিয়ে
বিক্ষোভ শুরু করলে পুলিশ তাদের মহাসড়ক থেকে সরে যেতে বলেন। এনিয়ে উভয়ের পক্ষের মধ্যে বাকবিত-া ও সংঘর্ষ শুরু হয়। পরে পুলিশ আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে কয়েক রাউন্ড রাবার বুলেট ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে। প্রতিবাদে ছাত্ররাও পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট পাটকেল নিক্ষেপ করে। এতে শেরপুর থানার ওসি রেজাউল করিম রেজা, অন্তত অর্ধশত ব্যক্তি আহত হয়েছেন ও সাংবাদিক এনামুল হকের মুঠোফোন টি ইটের ঢিলে ভেঙ্গে যায়।
জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সুমন জিহাদী এ প্রসঙ্গে বলেন, আন্দোলনকারীরা মহাসড়ক অবরোধ করে যানবাহন ভাংচুরের চেষ্টা চালালে পুলিশ তাদের ছত্রভঙ্গ করে দিয়েছে।
এছাড়া আইনশৃংখলা নিয়ন্ত্রণে রাখতে শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন রয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে রয়েছে বলে জানান তিনি।