বগুড়ার সোনাতলা উপজেলার মাঝ দিয়ে বয়ে গেছে যমুনা নদী। দীর্ঘদিন ধরে নদী ভাঙন চলে আসছে এ এখানে। পানি কমতে থাকায় নদীপারের কয়েকটি গ্রামে ভাঙন দেখা দিয়েছে। এরই মধ্যে এসব গ্রামের তিন শতাধিক পরিবার বাড়িঘর অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে গেছে।
নদীপারের বাসিন্দারা বলছেন, অক্টোবরে বন্যা না থাকলেও অতিবৃষ্টির কারণে নদীর পানি বেড়ে যায়। এখন পানি নামতে শুরু করেছে। ফলে ২৫ অক্টোবর থেকে উপজেলার পাকুল্যা ইউনিয়নের মির্জাপুর, পূর্ব সুজাইতপুর, রাধাকান্তপুর, আমতলী, মুশারপাড়া, আউচারপাড়া, মহব্বতের পাড়া, জন্তিয়ারপাড়া, চরসরলিয়া, পূর্ব তেকানী, চুকাইনগরে ভাঙন দেখা দিয়েছে।
উপজেলার মির্জাপুর গ্রামের বাহার উদ্দিন, লতিফ, সোনা মিয়া জানান, ১৭-১৮ বছর ধরে যমুনা নদীতে অব্যাহত ভাঙন দেখা দিয়েছে। নদী এখন ঘরের সামনে চলে এসেছে। এভাবে ভাঙতে থাকলে কয়েকদিনের মধ্যে ঘরবাড়ি বিলীন হয়ে যাবে। অনেকেই পরিবার নিয়ে অন্যত্র চলে গেছেন। প্রতি বছর বন্যা এবং বন্যা-পরবর্তী ভাঙনে শত শত একর আবাদি জমি, গাছপালা, বাড়িঘর বিলীন হয়ে যাচ্ছে। পরিবারগুলো দূরে চলে যাচ্ছে। এরমধ্যে আমরা চেয়ারম্যানের কাছে গিয়ে আমাদের বাড়ি নদীর ভেতরে যাওয়ার কথা বললে তিনি নদীর পারে বস্তা ফেলে দেওয়ার ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। এখন আমরা কিছুটা রেহাই পাব।
কাজের দায়িত্বে থাকা বগুড়া পানি উন্নয়ন বোর্ডর কার্যসহকারী নুর ইসলাম জানান, সামান্য বন্যা হলেও তেমন কোনো ক্ষতি হয়নি। তবে শুষ্ক মৌসুমে নদীর পানি কমতে থাকায় কোথাও কোথাও ভাঙন দেখা দিয়েছে। সোনাতলা উপজেলায় ভাঙন শুরু হওয়ার আগে চলতি বছর মির্জাপুর গ্রামে ভাঙন দেখা দেয়। সেখানে ২ হাজার ৩৩৫ জিও ব্যাগের মধ্যে ১০০ ব্যাগ বাকি ছিল, সেটা ফেলা হচ্ছে।
সোনাতলা উপজেলার পাকুল্যা ইউপি চেয়ারম্যান একেএম লতিফুল বারী টিম জানান, যমুনা নদীপারের মানুষ খুব সাহসী ও দরিদ্র। কিন্তু চারপাশ থেকে যখন নদী ভাঙন শুরু হয়, তখন কিছু করার থাকে না। ভিটেমাটি সব নদীতে চলে যায়। কয়েক দিন ধরে নদীর পানি কমতে থাকায় পাকুল্যা ইউনিয়নে ভাঙন দেখা দিয়েছে। উপজেলা প্রশাসন থেকে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। নদী ভাঙন রোধ করা কঠিন। তবে মির্জাপুর গ্রামে নদী ভাঙন রোধে পানি উন্নয়ন বোর্ড বস্তা ফেলানোর কাজ করছে।
বগুড়া পাউবোর উপসহকারী প্রকৌশলী মো. হাসানুজ্জামান জানান,পানি কমতে থাকায় পাকুল্যা ইউনিয়নের মির্জাপুরে ভাঙন দেখা দিয়েছে। সেখানে কিছু জিও ব্যাগ ফেলে মির্জাপুরের ভাঙন নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে।ভাঙন রোধে বা প্রয়োজনে আরো জিও ব্যাগ ফেলা হবে।