বগুড়াসহ উত্তরাঞ্চলের বিভিন্নস্থানে বিএনপি জামায়াতের ৩০০ নেতা কর্মী গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
বগুড়া প্রতিনিধিঃ নাশকতাসহ পুলিশের উপর হামলা ও অন্যান্য সহিংস ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে বগুড়াসহ উত্তরাঞ্চলেল বিভিন্নস্থানে বিএনপি ও জামায়াদের তিনশতাধিক নেতা-কর্মীকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। এদের মধ্যে বেশ কয়েকজনকে ঢাকায় মহা সমাবেশ থেকে ফরার পথে গ্রেফতার করা হয় বলে জানা গেছে।
আমাদের প্রতিনিধিরা জানিয়েছেন,
দুপচাঁচিয়া (বগুড়া) প্রতিনিধি: দুপচাঁচিয়া থানা পুলিশ গতকাল শনিবার রাতে বিশেষ অভিযান চালিয়ে নাশকতা মামলায় বিএনপি ও জামায়াত শিবিরের ২১ জনকে গ্রেফতার করেছে।
পুলিশ জানায়, ঘটনার দিন গতকাল শনিবার রাতে পুলিশ পরিদর্শক আব্দুর রশিদ সরকার ও এসআই আলেফ উদ্দীনের নেতৃত্বে বেশ কয়েকটি টিম বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালান। এসময় নাশকতা পরিকল্পনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ৮জন বিএনপি নেতাকে গ্রেফতার করেন।
এরা হলেন পলিপাড়া গ্রামের আবু কাশেমের ছেলে মোমিনুর রহমান (২৮) হেড়ুঞ্জ পশ্চিমপাড়া গ্রামের জোব্বার হোসেনের ছেলে মোস্তাফিজুর রহমান (৪০), জিয়ানগর সোনারপাড়া গ্রামের আফতাব উদ্দীন প্রামানিকের ছেলে আজিজার রহমান (৪২), চৌমুহনী সর্জনকুড়ি গ্রামের মৃত আলহাজ্ব পিয়ার আলীর ছেলে আজিজার রহমান (৬০), উনাহত সিংড়া গ্রামের মৃত মোহাম্মদ আলীর ছেলে আতিকুর রহমান (৩৮), খোলাশ সোনারপাড়া গ্রামের ফয়জাল প্রামানিকের ছেলে মামুনুর রশিদ (৩৬), তারাজুন পশ্চিমপাড়া গ্রামের মৃত হবিবর রহমান কবিরাজের ছেলে আব্দুর রাজ্জাক (৫০) ও কাথহালী দক্ষিণপাড়া গ্রামের জালাল উদ্দীনের ছেলে মানিক হোসেন (৩৮)।
এছাড়াও নাশকতা মামলায় জামায়াত শিবিরের গ্রেফতারকৃতরা ১৩জন হলেন তালোড়া শাহ্পাড়া গ্রামের সাদ্দাম হোসেনের ছেলে দেলোয়ার হোসেন ওরফে মোমিন (৩০), স্বর্গপুর গ্রামের মৃত আব্দুল মালেকের ছেলে নুর প্রামানিক (৩৬), জামাল মোল্লার ছেলে শফিকুল মোল্লা (২৭), মৃত চাঁদ মিয়া ওরফে চান মিয়ার ছেলে মনছুর রহমান (৫০), স্বর্গপুর মন্ডলপাড়া গ্রামের দেলোয়ার হোসেনের ছেলে নাজমুল হোসেন ওরফে খোকন (৩৩), সরঞ্জাবাড়ি গ্রামের জামাল মন্ডলের ছেলে রাসেল মন্ডল (২৭), শ্রীপুর গ্রামের সাইফুল ইসলামের ছেলে জোবায়েত হোসেন ওরফে জাকারিয়া (৪২), তালোড়া পিপড়া গ্রামের মৃত বছির উদ্দীন শাখিদারের ছেলে শহিদ শাখিদার (৫৩), দড়িনন্দক গ্রামের সেকেন্দার মন্ডলের ছেলে আরিফ (২২), সাবরুল গ্রামের মজিবর রহমান ফকিরের ছেলে আজিজুল হক (৫০), মৃত সেকেন্দার আলী ফকিরের ছেলে আবুল খায়ের (৪৬), নন্দগ্রামের মৃত আব্দুর জোব্বারের ছেলে ইউসুফ আলী (৬০) ও জোরা গ্রামের মৃত ইয়াছিন আলীর ছেলে মাহবুবুল আলম দুলাল (৫৫)।
থানা অফিসার ইনচার্জ আবুল কালাম আজাদ জানান, গ্রেফতারকৃত আসামীদের বিএনপি ও জামায়াতের পৃথক দুটি নাশকতা মামলায় আজ রোববার বগুড়া কোর্ট হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।
আদমদীঘি (বগুড়া) প্রতিনিধি: বগুড়ার আদমদীঘিতে বিস্ফেরক দ্রব্য মামলায় বিএনপির তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গতকাল শনিবার রাতে সান্তাহার ও মুরইল এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃতরা হলো, সান্তাহার নতুন বাজার এলাকার কায়েব আলীর ছেলে পৌর বিএনপি’র এাণ ও পুনর্বাসন সম্পাদক শাকিল আলম (৫২), আদমদীঘির নসরতপুর ইউপি’র সাবেক ছাত্রদল নেতা মুরইল গ্রামের আবু জাফরের ছেলে আপেল মাহমুদ (৪৬) ও একই এলাকার সিরাজুল ইসলামের ছেলে বিএনপি নেতা শহিদুল ইসলাম চাঁন (৪৫)।
আদমদীঘি থানা পুলিশ জানায়, ২০২২ সালের ২৩ নভেম্বর সন্ধ্যায় দেশে সন্ত্রাস ও নৈরাজ্যের বিরুদ্ধে আদমদীঘি উপজেলা যুবলীগের একটি বিক্ষোভ মিছিলে পুরাতন সোনালী ব্যাংকের সামনে পৌঁছালে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটনা ঘটে। এতে যুবলীগ ও ছাত্রলীগের পাঁচ নেতাকর্মী আহত হন। আগের এ মামলায় তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে।
শেরপুর (বগুড়া) প্রতিনিধি: নাশকতার আশঙ্কায় বিএনপি ও যুবদলের পাঁচ নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ। গতকাল শনিবার রাতে শহরের বিভিন্নস্থানে এই অভিযান পরিচালিত হয়। গ্রেফতারকৃতরা হলেন বিএনপির নেতা মো. শহিদুল ইসলাম ওরফে পাশা (৪০), আব্দুর রাজ্জাক (৫০), মাহবুব রহমান (৬৯), যুবদল নেতা মোস্তফা কামাল (৩৮) ও এরশাদ আলী (৩৭)।
শেরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বাবু কুমার সাহা এই তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে তিনজনের নামে আগের একটি নাশকতা ও বিস্ফোরক মামলা রয়েছে। ওই মামলায় আদালত থেকে তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা ছিল।
এছাড়া ২৮ অক্টোবর ঢাকায় বিএনপির সমাবেশে নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে সমাবেশ থেকে ফেরার পথে উপজেলার খানপুর ইউনিয়ন যুবদলের আহবায়ক মোস্তফা কামাল ও একই ইউনিয়নের যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক এরশাদ আলীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
গ্রেফতারকৃতদের আজ রোববার (২৯ অক্টোবর) বিকেলেই বগুড়ায় আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে বলে জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।
কাহালু (বগুড়া) প্রতিনিধি: কাহালু থানার পুলিশ গত শনিবার রাতে জামায়াতের ১৩ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে। গ্রেফতারকৃতরা হলেন কাহালু উপজেলার মালঞ্চা ইউনিয়নের মাগুরা দক্ষিণপাড়া গ্রামের বাবুল হোসেন মন্ডল (৫০), সুলতান মন্ডল (৪০), বড়পুকুরিয়া গ্রামের রুহুল আমিন (৪৫), আফছার আলী প্রাং (৪০), শাহ আলম (৪৫), সিন্দুরাইল গ্রামের সাহিবুজ্জামান (৪৫), মাগুরা মাদ্রাসাপাড়ার আবুল কালাম (৩৮), বগুড়ার শাহজাহানপুর উপজেলার আশেকপুর গ্রামের মাসুদ রানা (৩৪), একই গ্রামের সজীব উদ্দিন (৩৫), আব্দুল করিম (৩০), সাব্বির হোসেন(৩২) এবং নিশ্চিন্তপুর গ্রামের রবিউল ইসলাম (৩১)।
এদের মধ্যে ৭ জনকে গ্রেফতার করা হয় উপজেলার মালঞ্চা বাজার বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে। এরা ঢাকায় সরকার বিরোধী আন্দোলনে যোগদান শেষে নিজ বাড়ি ফিরছিল। অপর ৬ জনকে ঢাকা জেলার আশুলিয়া থানার বাইপাইল এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়। উল্লেখ্য গ্রেফতারকৃতরা সকলেই জামায়াতের কর্মী, সমর্থক ও অনুসারী বলে পুলিশ জানায়।
নন্দীগ্রাম (বগুড়া) প্রতিনিধি: নন্দীগ্রাম থানার ওসি মো. আনোয়ার হোসেন জানান, গতকাল শনিবার রাতে বঙ্গবন্ধু চত্বরে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় ৬ জনকে আটক করা হয়েছে। হরতালে কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।
শাজাহানপুর (বগুড়া) প্রতিনিধি: বিএনপি-জামায়াতের ডাকা দেশব্যাপী হরতাল চলাকালে যাতে কোন নাশকতা না হয় সে জন্য গতকাল শনিবার দিবাগত রাতেই চলে পুলিশের সাঁড়াশি অভিযান। এতে ৭ ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়। আজ রোববার (২৯ অক্টোবর) গ্রেফতারকৃতদের জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।
তবে শাজাহানপুর থানার ওসি শহিদুল ইসলাম জানিয়েছেন, গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা/ওয়ারেণ্ট ছিল।