বদরগঞ্জ রংপুর প্রতিনিধিঃ রংপুরের বদরগঞ্জ পৌরশহরের প্রধান প্রধান সড়ক যানজট লেগেই থাকাসহ পৌরসভার নতুন ড্রেন উপর দখল করে দোকান বসিয়ে ব্যবসা করছেন ব্যবসায়ীরা। এছাড়াও সোমবার ও বৃহস্পতিবার দুই হাট বারে পৌর শহরের রাস্তার দুপাশ দখল করে নানা পণ্যের পসরা নিয়ে বসেন ব্যবসায়ীরা। এতে করে ভোগান্তিতে পড়ে পথচারীরা।
স্থানীয় কয়েকজন পথচারীরা সঙ্গে কথা হলে তাঁরা জানান, পৌর শহরের ভিতরে সড়কে নতুন করে অনেক ড্রেনেজ ব্যবস্থা হয়েছে। ড্রেনের উপরের স্লাব ও দেওয়া হয়েছে। সেই স্লাবের উপর ব্যবসায়ীরা দখল করে ব্যবসা করছেন। সড়কের যানজট হলে ওই স্লাবের উপর দিয়ে মানুষ যাতায়াত করতে পারতেন। কিন্তু ব্যবসায়ীরা তাদের দোকানের সামনে হওয়ায় দখল করে তাদের পণ্যগুলো বসিয়ে ব্যবসা করছেন। ব্যবসায়ীরা ড্রেনের উপরেই পাকা করন করে তাদের ব্যবসার স্থাপনা বসিয়েছেন। বিষয়টি পৌর কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি দেখা দরকার
রংপুরের ঐতিহ্যবাহী হাট বদরগঞ্জ।সোমবার ও বৃহস্পতিবার থানা রোড হতে শহীদ মিনার রোডে ব্যবসায়ীরা নানা ধরনের পণ্যের পসরা নিয়ে সড়কের জায়গার ওপর বসেন। এতে এই সড়কে চলাচল করতে গিয়ে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন কয়েক হাজার মানুষ।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় প্রায় ৪০ টি হাটবাজার রয়েছে। রংপুর থেকে বদরগঞ্জ পার্বতীপুর চলে গেছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় হাট বদরগঞ্জ। প্রতি সোম ও বৃহস্পতিবার এখানে হাট বসে। শহীদ মিনার থেকে হাসপাতাল রোড, শহীদ মিনার থেকে উপজেলা রোড, শহীদ মিনার থেকে বদরগঞ্জ মেলার মাঠ, এ সড়ক দিয়ে কয়েকশ রিকশা-ভ্যান, মিনিবাস, ট্রাক, টেম্পো, প্রাইভেটকার ও মোটরসাইকেলে দুই উপজেলার মানুষ যাতায়াত করে। এ ছাড়া এই সড়ক দিয়ে সহস্রাধিক শিক্ষার্থী হাটের কাছের ৭ টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আসা–যাওয়া করে।
সোমবার দুপুরে সরেজমিনে দেখা গেছে, বদরগঞ্জ হাটের দুই পাশে সড়কের ওপর, ধান, বীজ, পোশাক, সবজিসহ নানা পণ্যের পসরা নিয়ে বসেছেন ব্যবসায়ীরা। ক্রেতা বিক্রেতার ভিড়ে সড়কের ওই অংশ যেন হাটে পরিণত হয়েছে। এরই মধ্য দিয়ে চলাচল করছে যানবাহন।
গত সোমবার সড়কে দাঁড়িয়ে আছেন রফিকুল ইসলাম নামের ধান ব্যবসায়ী। সড়কের ওপর ধান বিক্রির কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, নির্দিষ্ট কোন জায়গা না দেওয়ায় সড়কের উপরেই ধান বিক্রি করছেন।
অপরদিকে ধান হাটি রোডে বীজের চারা ব্যবসায়ীরা রাস্তার মধ্যেই বীজ বিক্রি করছেন। তাদের কাছ থেকে জানতে চাইলে রাস্তার মধ্যে বীজ বিক্রি করছেন কেন ব্যবসায়ীরা বলেন আমাদের নির্দিষ্ট কোন জায়গা না দেওয়ায় পূর্ব থেকেই এই জায়গায় বীজ বিক্রি করে আসছি তাই এখানে বীজ বিক্রি করি।
বদরগঞ্জ মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী বলেন, যখন স্কুল খোলা থাকে, তখন এই সড়ক দিয়ে যাতায়াতে খুব কষ্ট হয়। বিশেষ করে সোমবার ও বৃহস্পতিবার হাটের দিন। স্কুলের গেট পর্যন্ত রিকশা-ভ্যান নিয়ে যাওয়া যায় না। হেঁটে ঠেলাঠেলি করে অতি কষ্টে যাতায়াত করতে হয়।
এক যুগের ব্যবধানে লাখ টাকার হাট এখন ৮ কোটি টাকার রাজস্ব আয়ে পরিণত হয়েছে বলে জানিয়েছেন পৌর হাট কমিটির এক সদস্য নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক, তিনি বলেন, কিছু ব্যবসায়ী ইচ্ছা করে সড়কে দোকান নিয়ে বসছেন। তাদের সড়কে ওপর থেকে উঠে যেতে বললেও তাঁরা শোনেন না। উল্টাপাল্টা কথা বলে।
এ বিষয়ে বদরগঞ্জ ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি সারওয়ার জাহান মানিক কে মুঠো ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে তিনি ফোনটি রিসিভ করেননি।
পৌরসভার সাবেক এক কাউন্সিলর বলেন, হাট বারে এমন অবস্থা তৈরি হয় যে দুই মিনিটের পথ ১ ঘন্টাও অতিক্রম করা সম্ভব হয় না। এছাড়াও পৌরসভার পক্ষ হতে যে ড্রেনেজ ব্যবস্থা করা হয়েছে। সেগুলো দখল করে নিয়েছে ব্যবসায়ীরা। ড্রেনের উপরে দোকান বসিয়ে ব্যবসা করছেন। দোকান না বসালে মানুষ ড্রেনের উপর স্লাব দিয়ে চলাচল করতে পারত।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান বলেন,শীঘ্রই উচ্ছেদের জন্য অভিযান পরিচালনা করা হবে।