1. dailybogratimes@gmail.com : dailybogratimes. :
বন্যাদুর্গতদের জন্য ৪০ লাখ ডলার ঘোষণা জাতিসংঘের » Daily Bogra Times বগুড়া টাইমস
Logo শনিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৪, ০২:২২ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ :
ধুনটে সাংবাদিকসহ আ’লীগের ৮১ জনের বিরুদ্ধে নাশকতার মামলা দিনাজপুর আঞ্চলিক মহাসড়ক ইজিবাইক-অটো রিকশার দখলে খুলনা বিভাগের কমিটি গঠনের দায়িত্ব পেলেন কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের যুগ্ম-সাঃসম্পাদক সোহেল রানা গাবতলীতে বিএনপির প্রস্তুতি সভা অনুষ্ঠিত মহাদেবপুরে এসিআই মটরসের সোনালিকা ডে উদযাপন বাংলাদেশে অতি দরিদ্র মানুষের সংখ্যা ৪ কোটি ১৭ লাখ : ইউএনডিপি জনগণকে কষ্টে রেখে কোনো উদ্যোগ সফল হবে না : তারেক রহমান বগুড়ায় বিদ্যুতের অ্যানালগ মিটার প্রতিস্থাপনের দাবিতে মানববন্ধন বগুড়ার শেরপুরে সাবেক এমপি ও পুত্রের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা বদরগঞ্জে এক গৃহবধুর লাশ উদ্ধার অধিকাংশ সবজির দাম ৮০ থেকে ১০০ টাকা রাবিতে দুই ছাত্রলীগ নেতা আটক  পাঁচবিবিতে সন্ত্রাসী হামলা ও অফিস ভাঙচুরের প্রতিবাদে বিএনপির সংবাদ সম্মেলন বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সারিয়াকান্দি উপজেলা শাখার শুভ উদ্বোধন হিলি কাস্টমসের বৈষম্যের কারণে ডিম আমদানি করতে পারছে না আমদানিকারকরা

বন্যাদুর্গতদের জন্য ৪০ লাখ ডলার ঘোষণা জাতিসংঘের

নিউজ ডেস্কঃ-
  • শুক্রবার, ৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
বন্যাদুর্গতদের জন্য ৪০ লাখ ডলার ঘোষণা জাতিসংঘের
print news

ভয়াবহ বন্যায় বিধ্বস্ত বাংলাদেশের জন্য জাতিসংঘের সেন্ট্রাল ইমার্জেন্সি রেসপন্স ফান্ড থেকে ৪০ লাখ মার্কিন ডলার বরাদ্দ করা হয়েছে। জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক নিয়মিত ব্রিফিংয়ে এ কথা জানিয়েছেন

তিনি বলেন, জাতিসংঘের ভারপ্রাপ্ত জরুরি ত্রাণ সমন্বয়কারী জয়েস মাসুয়া বাংলাদেশে ক্ষতিগ্রস্ত প্রায় ৬০ লাখ মানুষকে বন্যা মোকাবিলায় এই অর্থ বরাদ্দ করেছেন। তথ্য বলছে, প্রায় ১৭ লাখ শিক্ষার্থী বন্যায় প্রভাবিত হয়েছে। বন্যায় প্রাণিসম্পদ ও মৎস্য খাতে আনুমানিক ১৫৬ মিলিয়ন ডলারের ক্ষতি হয়েছে।
স্টিফেন ডুজারিক বলেন, আমরা আমাদের মানবিক অংশীদারদের সঙ্গে মিলে সরকারের নেতৃত্বে বন্যা মোকাবিলায় সহায়তা করছি। আমরা এই বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত দুর্বল মানুষ এবং গোষ্ঠীগুলোকে সহায়তা করার জন্য স্থানীয় প্রচেষ্টায়ও সহায়তা করছি।

ঘূর্ণিঝড় রেমাল এবং চলমান বিধ্বংসী আকস্মিক বন্যাসহ এ বছর বাংলাদেশ চারটি বড় জলবায়ু সম্পর্কিত দুর্যোগের কবলে পড়েছে। এর ফলে দেশের প্রায় ৩০ শতাংশ এলাকাজুড়ে প্রায় ১ কোটি ৩০ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

এদিকে স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যার পানি ধীরে ধীরে নামতে শুরু করেছে। তবে অপরিবর্তিত রয়েছে লাকসাম ও মনোহরগঞ্জ উপজেলার বন্যা পরিস্থিতি। বন্যার পানি কমে যাওয়ায় আশ্রয় কেন্দ্র থেকে বাড়িঘরে ফিরতে শুরু করেছে বন্যা কবলিত বানভাসি মানুষ। তবে বাড়িতে ফিরে তাদের পরতে হচ্ছে নানা সঙ্কটে। অপরদিকে বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে বন্যার্তদের ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ অব্যাহত রয়েছে। আমাদের সংবাদদাতাদের পাঠানো তথ্যে প্রতিবেদনÑ
লাকসাম-মনোহরগঞ্জ (কুমিল্লা) উপজেলা সংবাদদাতা জানান, ফেনী, নোয়াখালীসহ কয়েকটি জেলার বন্যা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেও অপরিবর্তিত রয়েছে লাকসাম ও মনোহরগঞ্জ উপজেলার বন্যা পরিস্থিতি। উপজেলা দুটির মধ্য দিয়ে ডাকাতিয়া নদী অতিবাহিত করলেও শাখা খালগুলোতে ¯øুইস গেইট, অবৈধভাবে দখল, বাঁধ নির্মাণ, অবৈধ ভেসাল ও কচুরি পানাসহ নানা প্রতিবন্ধকতার কারণে বন্যার পানি একেবারে ধীর গতিতে অপসারিত হলেও প্রতিদিনই আবার হচ্ছে বৃষ্টি। এতে করে উপজেলা দুইটিতে বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। ভোগান্তি বাড়ছে সর্স্থরের মানুষের।

উপজেলা দুটিতে সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, চলতি বছরের বন্যা পরিস্থিতি কুমিল্লার লাকসাম-মনোহরগঞ্জ উপজেলার অতীতের সকল রেকর্ড ভঙ্গ করে ভয়াবহ বন্যায় পরিণত হয়। এতে উপজেলা দুটির প্রায় ৯০ শতাংশ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। দুই উপজেলায় ৪ লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়েছে এবং ১৭২টি আশ্রয় কেন্দ্রে প্রায় ৪০ হাজারের বেশি লোক আশ্রয় নিয়েছেন। পাশাপাশি পানিবন্দি মানুষের ভোগান্তি পৌঁছে চরমে। গত কয়েকদিন থেকে বন্যার পানি কমতে শুরু করলেও প্রতিদিন থেমে থেমে বৃষ্টি, অবৈধভাবে খাল ও জলাশয় দখল করে স্থাপনা নির্মাণ, অবৈধ মাছ ধরার ভেসাল ও খালগুলোতে অতিরিক্ত কচুরিপানা এবং ডাকাতিয়া নদীর সংযোগ খালগুলোতে ¯øুইস গেইট এখন গলার কাঁটা হয়ে দাড়িয়েছে।

লাকসাম ও মনোহরগঞ্জ উপজেলার অফিসের তথ্যমতে, গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুর ২টা পর্যন্ত ডাকাতিয়া নদীর পানি সব পয়েন্টে অনেকটা আগের অবস্থায় রয়েছে। বন্যায় লাকসাম উপজেলা ও মনোহরগঞ্জ উপজেলার প্রায় ৯০ শতাংশ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এতে প্রায় ৪ লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি রয়েছে। এছাড়াও লাকসাম উপজেলার ৬৭টি আশ্রয় কেন্দ্রে প্রায় ২০ হাজার মানুষ এবং মনোহরগঞ্জ উপজেলার ১০৫টি আশ্রয় কেন্দ্রে ২৫ হাজারের অধিক মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন। তবে কিছু আশ্রয় কেন্দ্রের নিচতলা ডুবে যাওয়ায় আশ্রয় গ্রহণকারীদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। খাবারসহ নানা ধরনের রোগ বালাই মারাত্মক আকার ধারণ করছে।
কুমিল্লার মনোহরগঞ্জ উপজেলায় ডাকাতিয়া নদীর শাখা নদনা খালের মুখে নির্মিত ¯øুইস গেইটটি কৃষকদের কোনো কাজেই আসছে না। কুমিল্লা পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, দক্ষিণ কুমিল্লা এবং উত্তর নোয়াখালীর পানি নিষ্কাশন ও সেচ প্রকল্পের আওতায় ২০০৬-২০০৭ অর্থবছরে ডাকাতিয়া নদীর নদনা খালের মুখে মনোহরগঞ্জের হাওরা এলাকায় প্রায় ২ কোটি টাকা ব্যয়ে ¯øুইস গেইটটি নির্মাণ করা হয়েছিল। কিন্তু নির্মাণের পর এটির আর কোনো মেরামত বা সংস্কার করা হয়নি।

এ বিষয়ে মনোহরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার উজালা রানী চাকমা জানান, মনোহরগঞ্জ উপজেলার বন্যা পরিস্থিতি অনেকটাই অপরিবর্তিত রয়েছে। বানভাসি মানুষের জন্য উপজেলা প্রশাসনের পাশাপাশি বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠন, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন যৌথভাবে কাজ করছেন। আমরা চেষ্টা করছি যাতে কোনো ব্যক্তি না খেয়ে কষ্টে দিন কাটাতে হয়।

তিনি আরো বলেন, দীর্ঘ দিন পর বন্যা হওয়ায়, মোকাবিলায় আমরা ছিলাম অপ্রস্তুত। তাই আগামী দিনে সকল উন্নয়ন ও কার্যক্রম বন্যা পরিস্থিতি মাথায় রেখে কাজ করতে হবে।

ব্রাহ্মণপাড়া (কুমিল্লা) উপজেলা সংবাদদাতা জানান, কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়ায় গোমতী নদী ও সালদা নদী ভাঙনের ফলে সৃষ্ট বন্যায় প্রায় ৫০ হাজার মানুষ আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছিল। বন্যার পানি কমে যাওয়ায় আশ্রয় কেন্দ্র থেকে ফিরতে শুরু করেছে বন্যা কবলিত বানভাসি মানুষ। তবে বাড়িতে ফিরে তাদের পরতে হচ্ছে নানা সঙ্কটে।
সরেজমিনে দেখা যায়, বানভাসি মানুষেরা আশ্রয় কেন্দ্র থেকে বাড়িতে ফিরে দেখেন, অনেকের ঘরবাড়ি ভেঙে পরেছে, কারোর ঘর হেলে পরেছে এবং অনেকের ঘরবাড়িতে কাঁদা মাটিতে ঢেকে আছে। ব্রাহ্মণপাড়া ভগবান সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের আশ্রয় কেন্দ্রে সার্বিক সহযোগিতাকারী সমন্বয়ক শাকিল বলেন, এই আশ্রয় কেন্দ্রটিতে প্রায় ১৫ শত মানুষ আশ্রয় নিয়েছিল বর্তমানে ৩-৪শ’ মানুষ আশ্রয় কেন্দ্রটিতে আছে।
এ আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নেওয়া ধান্যদৌল গ্রামের জামাল মিয়া বলেন, বাড়িতে পানি ওঠে যাওয়ায় পর ১৫ দিন যাবত এই আশ্রয় কেন্দ্র আছি। আমার বসত ঘরে পানি উঠলেও এখন পানি নেমে গেছে। সব কিছু এখনো ভেঁজা। এছাড়া পাকের ঘর স্যাতস্যাতে অবস্থায় আছে। শুকনো কোনো লাকড়ি খড়ি নেই রান্না করার জন্য। তবুও নিজের বাড়িতে চলে আসছি বউ বাচ্চা নিয়ে।

সাহেবাবাদ লতিফা ইসমাইল উচ্চ বিদ্যালয়ের আশ্রয় কেন্দ্রে থাকা জয়নাল মিয়া জানান, বন্যার পানি কিছুটা কমে যাওয়ায় অনেকে আশ্রয় কেন্দ্র থেকে চলে গেছে। আমি প্রত্যেকদিন বাড়িতে গিয়ে আমার ঘরবাড়ি ঠিক করার চেষ্টা করছি। রাতের বেলায় আশ্রয় কেন্দ্র চলে আসি। কারণ এখানে থাকা এবং খাওয়ার কোনো চিন্তা করতে হয় না। ঘরবাড়ি প্রস্তুত করতে আরো অনেকদিন সময় লাগবে এরই মধ্যে আমি পরিবার নিয়ে বাড়িতে চলে যাব।
এছাড়া আশ্রয় কেন্দ্র থেকে বাড়ি ফেরত কয়েকজনের সাথে কথা বলে জানাযায়, আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে থাকতে শুকনো খাবার ও বিভিন্ন ত্রাণ সামগ্রীর সহযোগিতা পাওয়া যেত। এখন বাড়িতে ফিরে আসায় এ সহযোগিতাগুলো আর পাচ্ছিনা। রান্নার করার চুলা ভেঙে যাওয়ায় এবং শুকনো লাকরির অভাবে রান্না করতে পারছি না ফলে তাদের কষ্ট আরো দ্বিগুণ হচ্ছে। বাড়ির আশপাশে পানি থাকার কারণে ছোট ছোট ছেলেমেয়েদেরকে নিয়ে সবসময় আতঙ্কে থাকতে হয় কখন পানিতে পরে যায়। এছাড়া অনেকের বাড়িঘরে বিষাক্ত সাপেরও উপস্থিতি টের পাওয়া গেছে।

ছাগলনাইয়া (ফেনী) উপজেলা সংবাদদাতা জানান, ফেনীর ছাগলনাইয়ায় বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে বন্যার্তদের মাঝে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে। গতকাল দুপুরে ছাগলনাইয়া পৌরসভা ১, ২ ও ৩ নম্বর ওয়ার্ড ও মহামায়া ইউনিয়নের চাঁদগাজী বাজারসহ বিভিন্ন ওয়ার্ডে বিতরণ করেন ফেনী-১ আসনের বিএনপির সাংগঠনিক সমন্বয়ক ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহŸায়ক রফিকুল আলম মজনু।

এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা বিএনপির আহবায়ক নুর আহাম্মদ মজুমদার, সদস্য সচিব মো. আলমগীর বিএ, সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক কপিল উদ্দিন সরকার, কেন্দ্রীয় বিএনপি নেতা মশিউর রহমান খোকন, পৌর বিএনপির আহবায়ক ইউসুফ মজুমদার প্রমুখ।

রামগড় (খাগড়াছড়ি) উপজেলা সংবাদদাতা জানান, খাগড়াছড়ির রামগড়ে স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারদের মাঝে ত্রাণ সামগ্রি বিতরণ ও বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবাসহ ওষুধপত্র প্রদানের মধ্যেদিয়ে সেবাদান করে যাচ্ছে উন্নয়ন সংস্থা ব্র্যাক। গতকাল একশত পরিবারের মাঝে ত্রাণ সামগ্রি বিতরণ করা হয়।
ত্রাণ বিতরণ অনুষ্ঠানে রামগড় প্রেসক্লাবের সভাপতি সিনিয়র সাংবাদিক মো. নিজাম উদ্দিন লাভলু, রামগড় রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি সিনিয়র সাংবাদিক মো. বাহার উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক সিনিয়র সাংবাদিক রতন বৈষ্ণব ত্রিপুরা ছাড়াও ব্র্যাকের রামগড় এরিয়া ম্যানেজার এ কে এম মঞ্জুরুল হক, ব্রাঞ্চ ম্যানেজার আলা উদ্দিন, প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

AH/ Daily Bogra Times

আরো খবর
dbt
© All rights reserved by Daily Bogra Times  © 2023
Theme Customized BY LatestNews