শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে গাজীপুরের জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখছেন সারজিস আলম। ছবি: সংগৃহীত
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে উদ্দেশ্য করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক সারজিস আলম বলেছেন, ‘যে পুলিশ প্রশাসনকে নতুন করে চেয়ারগুলোতে বসিয়েছেন সেই পুলিশ বাংলা সিনেমার মতো ঘটনা ঘটার পর আসে। আমরা কেন ঘটনার পর দুই ঘণ্টা ধরে যোগাযোগ করে পুলিশকে মাঠে নিয়ে আসতে পারি না। যে ছাত্র-জনতা রক্ত দিয়ে জীবন দিয়ে আপনাদের সরকারে বসিয়েছে তাদের জীবনের নিরাপত্তা কে দেবে?’
ছাত্র-জনতার ওপর হামলার প্রতিবাদে শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে গাজীপুরের জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশে এসব কথা বলেন তিনি।
সারজিস আলম বলেন, ‘খুনি শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়েছে। বাংলাদেশের যে ২/৩টি জেলায় একটি রণক্ষেত্র হয়েছিল সে দুই তিনটি জেলার ছাত্র-জনতা বুক পেতে রক্ত দিয়ে সামনে থেকে এই অভ্যুত্থানের নেতৃত্ব দিয়েছিল। তাদের মধ্যে একটি জেলা হচ্ছে গাজীপুর। এই অভ্যুত্থানে যারা সহযোদ্ধা তারা তখন জীবন দিতে প্রস্তুত ছিল এখনো প্রস্তুত আছে। কিন্তু এই খুনি হাসিনা, জাহাঙ্গীরের দোসরা যদি এই গাজীপুরে আবার উৎপাত করতে চায় তাহলে ছাত্র-জনতা তাদের আর ছাড় দেবে না।’
তিনি বলেন, ‘গতকালকে আমাদের অনেক সহযোদ্ধাকে রক্তাক্ত করেছে তারা (আওয়ামী লীগ)। সহযোদ্ধাদের জীবননাশের হুমকি দিচ্ছে। আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই, রক্ত আর জীবনের বিনিময়ে এই ছাত্র-জনতা বাংলাদেশকে মুক্ত করেছে তাদের জীবনের নিরাপত্তা দিতে হবে। আমরা দেখেছি খুনি হাসিনার আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা গাজীপুরে ঘুরে বেড়াচ্ছে। এখনো সোশ্যাল মিডিয়ায় আমার সহযোদ্ধাদের হুমকি দিচ্ছে।’
এ সমন্বয়ক বলেন, ‘গতকালকের হামলার সঙ্গে জড়িতদের আজ রাতের মধ্যে গ্রেপ্তার না করতে পারলে আমাদেরকে তাদের বিপক্ষে দাঁড়িয়ে যেতে হবে। বিগত দিন ধরে আমরা গ্রেপ্তার গ্রেপ্তার খেলা দেখছি। একদল গ্রেপ্তার করে দুইদিন পর খুনি হাসিনার দোসর তাদের জামিন দিয়ে দেন। হাইকোর্ট, সুপ্রিম কোর্ট থেকে শুরু করে প্রত্যেকটা জেলার কোর্টগুলোতে খুনির দোসর রয়েছে। এসব পা-চাটা অযোগ্যদের এখনই অপসারণ করতে হবে। এই কোর্টগুলোতে টাকার বিনিময়ে অনেক দাগি আসামিকে জামিন দিয়ে দিচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘আজ সকালে প্রশাসনের সঙ্গে মিটিং ছিল। সেখানে বলে এসেছি এসব গ্রেপ্তার খেলা বন্ধ করুন। বাংলাদেশে এই সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার করার জন্য নতুন অপারেশন চালাতে হবে।’
প্রসঙ্গত, গত শুক্রবার (৭ ফেব্রুয়ারি) রাতে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ধীরাশ্রম এলাকায় সাবেক মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের বাড়িতে ছাত্রদের ওপর হামলা করে আওয়ামী লীগের কর্মীরা। এদিন রাতে পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করলেও বিলম্ব করে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় পুলিশ সদস্যরা। হামলায় কমপক্ষে ১৪ জন ছাত্র-জনতা আহত হয়েছেন।
এ ঘটনার পর দিন শনিবার গাজীপুরের রাজবাড়ীর মাঠে দিনব্যাপী বিক্ষোভ সমাবেশ চলে।