সারা দেশের বাজারগুলোতে কমেছে সব ধরনের সবজি, ডিম ও মাংসের দাম। তবে সরবরাহ কমের অজুহাতে কাঁচামরিচের দাম বাড়তি রয়েছে। বাজারে মধ্যস্বত্বভোগী না থাকায় স্বস্তিতে ক্রেতারা। সিন্ডিকেট ভেঙে দেওয়াসহ বাজারে নিয়মিত নজরদারি বাড়াতে নতুন সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তারা।
চট্টগ্রাম
চট্টগ্রামে সবজি থেকে শুরু করে মুরগি, ডিম সবকিছুরই দাম এখন কিছুটা কম। তবে, সমুদ্রে মাছ কম ধরা পরায় মাছের দাম কিছুটা বাড়তি রয়েছে। শুক্রবার সকালে নগরীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, আলু এবং কিছু সবজি ছাড়া সব সবজির দাম কমেছে। আলু বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকায়।
বিক্রেতারা বলছেন, দেশের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার পর দেশের নানা জায়গা থেকে পর্যাপ্ত পরিমাণে সবজি আসছে। তাছাড়া যে অসাধু চক্রের হাতে তারা জিম্মি ছিলেন সেই চক্রও এখন নেই। তাই দাম কমের দিকে। তবে বৃষ্টির কারণে মাঝে মাঝেই দাম বাড়তে পারে।
কেজিতে ৫০ টাকা পর্যন্ত কমেছে মুরগি দাম। বর্তমানে দেশি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৫০০ টাকা, ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৮০ টাকা এবং সোনালি মুরগী বিক্রি হচ্ছে ২৭০ টাকায়। কোড়াল বিক্রি হচ্ছে ৭০০ থেকে ১০০০ টাকা, ইলিশের দাম ১৮০০ থেকে ২২০০ টাকা, সুরমা বিক্রি হচ্ছে সাড়ে ৮০০ টাকায়। সমুদ্রে মাছ কম ধরা পরায় দাম বাড়তি বলছেন বিক্রেতারা। দাম বাড়তি মাছের, কোড়াল তবে অপরিবর্তিত রয়েছে ডিমের দাম। প্রতি ডজন ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকায়।
রাজশাহী
রাজশাহীর বাজারে সবজির দাম কমলেও বেড়েছে কাঁচামরিচ ও পেঁয়াজের দাম। কাঁচা মরিচের কেজিতে ২০০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৪০০ টাকায়। আর পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১১০ টাকা কেজিতে।
পূর্বের দামেই আলু বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকায়। ২৫০ টাকার আদা বিক্রি হচ্ছে ২২০ টাকা কেজি দরে। রসুন বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকা। পটল বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকা কেজি, করলা ৫০ টাকা, বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা কেজি দরে। অপরিবর্তিত রয়েছে মুরগির ডিমের দাম। প্রতি ডজনে ডিম বিক্রি হচ্ছে ১২৬টাকায়। কেজিতে ২০ টাকা বেড়ে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৬০ টাকা এবং গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৫০ টাকা কেজি দরে।
বরিশাল
বরিশালের বাজারে সবজির কেজিতে কমেছে ১০ টাকা পর্যন্ত। মুরগির দামও কেজিতে ১৫ টাকা পর্যন্ত কমেছে। প্রকার ভেদে চালের কেজিতে ২ থেকে ৩ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে।
জেলার বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, বাজারে শসা ৪০ টাকা, পটল ৩৫, বরবটি ৬০, করলা ৬০, কাঁকরোল ৬০, বেগুন ৭০, ঢেঁড়স ৪০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। তবে এখনও বাড়তি রয়েছে কাঁচামরিচের দাম। বাজারে কাঁচামরিচ ১৮০-২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে ব্রয়লার মুরগি ও সব ধরনের মুরগির দামও কেজিতে ১৫ টাকা পর্যন্ত কমেছে। মুরগি বাজারে ব্রয়লার ১৪৫-১৫০ টাকা, লেয়ার ৩৩০, সোনালি ২৪৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। তবে পেঁয়াজ আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে। আমদানি করা পেঁয়াজ ১০০ দেশি পেঁয়াজ ১১০-১১৫ টাকা, আলু ৫৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। তবে কমেছ আদার দাম। আদা ২৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
ক্রেতারা বলছেন, বাজারে নিত্যপণ্যে দাম এখনও বাড়তি। কিন্তু বিভিন্ন মাধ্যমে তারা দেখছেন দাম কমেছে। আর বাজারে এলে তাঁর কোনো প্রতিফল দেখতে পাচ্ছেন না। ব্যবসায়ীরা বলছেন, পাইকারি বাজারে দাম কমলে তারা পণ্যের দাম আরও কমিয়ে বিক্রি করতে পারবেন। বরিশালে আমদানি করা পেঁয়াজ ১০০ দেশি পেঁয়াজ ১১০-১১৫ টাকা, আলু ৫৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
খুলনা
খুলনার বাজারে গরুর মাংস, সবজির দাম কিছুটা কমলেও বেড়েছে কাঁচা মরিচের দাম। খুলনার বাজারে আজ প্রতি কেজি গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৬৫০ টাকা। অথচ ৪ দিন আগেও দাম ছিল ৭৫০ টাকা। সবজির দাম কেজিতে গত সপ্তাহের চেয়ে আজ ৫ থেকে ১০ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে।
বিভিন্ন বাজারে দেখা গেছে, ১০ টাকা কমে বেগুন ৫০ টাকা, করলা ৪০ থেকে ৪৫ টাক, পেঁপে ৩০ টাকা, বরবটি ৩০ থেকে ৩৫টাকা বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজিতে ৩০ টাকা কমে ব্রয়লার মুরগি ১৫০ টাকা, সোনালি ২৪০ টাকা, লেয়ার বিক্রি হচ্ছে ৩৩০ টাকায়। এদিকে সবজির দাম কিছুটা কমেছে। তবে বৃদ্ধি পেয়েছি কাঁচামরিচের দাম। আজ কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকা। এ ছাড়া পেঁয়াজ কেজিতে ৫ টাকা কমে ১১৫ টাকা, আলু ৫ টাকা কমে ৬০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। দাম কমেনি ডিমের। প্রতি হালি ডিম ৪৮ টাকা থেকে ৫২ টাকা বিক্রি হচ্ছে।
দাম নিয়ে বরাবরই অসন্তোষে এখানকার ক্রেতারা।
গাজীপুর
সরবরাহ ভালো থাকায় গাজীপুরে দাম কমেছে মুরগির। সিলেটে দাম কমেনি সবজি ও মাছ-মাংসের। সরবরাহ কম থাকায় বগুড়ায় কাঁচা মরিচের কেজিতে ১৬০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৩৬০ টাকায়।
মেহেরপুর
সপ্তাহের ব্যবধানে মেহেরপুরের বাজারগুলোতে সবজির দাম কিছুটা কমলেও অপরিবর্তিত রয়েছে আলু পেঁয়াজ রসুন ও আদার দাম। প্রশাসনিক তদারকি না থাকায় বাজার নিয়ন্ত্রণে থাকছে না বলে দাবি করেন ক্রেতারা। পটল, শসা, লাউ, করল, কচু, কলাসহ অন্যান্য সবজির দাম ক্রেতাদের নাগালের মধ্যে চলে এসেছে। কিন্তু অপরিবর্তিত রয়েছে আলু পেঁয়াজ, রসুন ও আদার দাম।
আজ শুক্রবার বাজারে খুচরা বাজারে প্রতিকেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা কেজি দামে, পেঁয়াজ ১২০ টাকা, রসুন ২২০ টাকা আর আদা বিক্রি হচ্ছে ৩২০ টাকা কেজি দামে। গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭০০ থেকে ৭৫০ টাকা আর খাসি ১ হাজার টাকা দামে।
ক্রেতারা জানান, আজ বাজারে আলু ৬০ টাকা কেজি, রসুন ২২০ টাকা, পেঁয়াজ ১২০ টাকা দামে বিক্রি হচ্ছে। কোনো বাজার নিয়ন্ত্রণ না থাকায় বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। প্রশাসনের হস্তক্ষেপ থাকলে বাজার নিয়ন্ত্রণে থাকত বলে জানান তারা।