বেড়া (পাবনা) প্রতিনিধি : মাস দেড়েক আগেও পাবনার বেড়া উপজেলায় ৫০ থেকে ৬০ টাকা দরে প্রতিটি লাউ বিক্রি হয়েছে। এখন কৃষকেরা এই লাউ হাটে নিয়ে চার-পাঁচ টাকার বেশি দামে বিক্রি করতে পারছেন না। বেগুনের অবস্থা আরও খারাপ।
মাস দেড়েক আগে যে বেগুন ৫০ থেকে ৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে সেই বেগুনের ক্রেতা নেই বললেই চলে। প্রতি কেজি বেগুন দুই থেকে তিন টাকা কেজিতে বিক্রি করতে গিয়েই কৃষকদের হিমশিম খেতে হচ্ছে।
তবে শুধু লাউ বা বেগুনই নয়, করলা, টমেটোসহ বেশিরভাগ সবজিই এখন কৃষকদের হাটে নিয়ে পানির দরে বিক্রি করতে হচ্ছে। কোনো কোনো কৃষক হাটে সবজি বিক্রি করতে না পারায় হাটেই তা ফেলে আসছেন। এ অবস্থায় অনেক উৎপাদিত সবজি খেতেই নষ্ট হচ্ছে। ফলে উৎপাদন খরচ না ওঠায় নিরাশ কৃষকেরা।
সংশ্লিষ্ট কৃষি কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, বেড়া উপজেলায় প্রচুর পরিমাণে সবজির আবাদ হয়। এবারও প্রতিটি এলাকায় সবজির বাম্পার ফলন হয়েছে।
উৎপাদিত সবজি দেশের বিভিন্ন এলাকার চাহিদা পূরণ করে থাকে। একদিকে অতিরিক্ত উৎপাদন অন্যদিকে ঢাকা, বগুড়াসহ বিভিন্ন এলাকায় সবজির চাহিদা পড়ে যাওয়ায় এবার বেড়ার হাট-বাজারগুলোতে সবজি বিক্রি হচ্ছে পানির দরে।
কৃষক ও উপজেলা কৃষি কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, রমজানের শুরু থেকেই কমতে থাকে লাউ, বেগুন, করলা ও মিষ্টি কুমড়ার দাম। কৃষকেরা বেগুন হাটে এনে কেজি দরের পরিবর্তে এখন বস্তা হিসেবে বিক্রি করছেন। প্রতি বস্তা বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১০০ টাকায়। এতে প্রতি কেজি বেগুনের দাম পড়ছে দুই থেকে তিন টাকা।
আবার লাউয়ের অবস্থাও অনেকটা একই রকমের। কৃষকেরা হাটে লাউ নিয়ে এসে প্রতিটি চার থেকে পাঁচ টাকা দরে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন। এতে কৃষকের উৎপাদন খরচ তো দূরের কথা পরিবহন খরচই উঠছে না। এছাড়া ১০ টাকা কেজি দরে করলা, ২০ টাকা কেজি দরে টমেটো, ৩০ থেকে ৪০ টাকা কেজি পটোল, ৪৫ থেকে ৫৫ টাকা কেজি পেঁয়াজ বিক্রি করতে হচ্ছে।
গতকাল শনিবার বেড়া পৌর এলাকার করমজা চতুরহাট ঘুরে দেখা যায়, লাউ, বেগুনসহ বিভিন্ন সবজি প্রচুর উঠেছে। এসব সবজির ক্রেতা খুব কম। সবজি বেচাকেনা না হওয়ায় বেশিরভাগ কৃষকের কপালে চিন্তার ভাঁজ। সবজি ব্যবসায়ীরা জানান, সবজির চাহিদা একেবারেই পড়ে গেছে। কৃষকেরা হাটে সবজি এনে দাম না পাওয়ায় হা-হুতাশ করছেন।