সারা দেশের মতো রংপুর অঞ্চল দিয়ে বয়ে যাচ্ছে তীব্র তাপপ্রবাহ। কৃষকরা বাড়তি সেচ দিয়ে জমির ফসল রক্ষার চেষ্টা করছেন। এই অঞ্চলের পাঁচ জেলায় দেড় লাখের ওপর ডিজেলচালিত সেচযন্ত্র দিয়ে সোয়া দুই লাখের বেশি হেক্টর জমিতে সেচ দেওয়া হচ্ছে। সেই হিসাবে রংপুর অঞ্চলে শুধু অতিরিক্ত দাবদাহের কারণে বোরো চাষিদের বাড়তি খরচ হবে ১০০ কোটি টাকার ওপর।
বিঘাপ্রতি বাড়তি খরচ হবে ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা। রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা গছে, চলতি মৌসুমে ৫ লাখ হেক্টরের বেশি জমিতে বোরো আবাদ হয়েছে। গত বোরো মৌসুমে এই অঞ্চলে বিদ্যুৎ, ডিজেল ও এনএনপি, সোলারচালিত প্রায় ২ লাখ ৩০ হাজার সেচচালিত যন্ত্র দিয়ে জমিতে সেচ দেওয়া হয়েছে। এবারও সেই লক্ষ্যমাত্রায় সেচ দেওয়া হচ্ছে। বিদ্যুৎচালিত ২ হাজার ৭৭০টি গভীর নলকূপ দিয়ে ৬৩ হাজার ৩৯৫ হেক্টর, ডিজেলচালিত ২৩টি গভীর নলকূপ দিয়ে ২৯৫ হেক্টর, এনএনপি বিদ্যুৎচালিত ৪২টিতে ২৯১ হেক্টর, ডিজেল ৫২৬টি দিয়ে ৭৪৯ হেক্টর, সোলারচালিত ২৫টিতে ৪৯ হেক্টর জমিতে সেচ দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। অন্যদিকে বিদ্যুৎচালিত অগভীর ৭১ হাজার ২৫৪টি নলকূপ দিয়ে ২ লাখ ৪ হাজার ৪৭০ হেক্টর, অগভীর ডিজেলচালিত ১ লাখ ৫৫ হাজার ৬৫৯টি সেচযন্ত্র দিয়ে ২ লাখ ২০ হাজার ১০৩ হেক্টর জমিতে সেচ দেওয়া হচ্ছে। অগভীর ৯৯টি সোলারে ৮০৯ হেক্টর জমিতে সেচ দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে।
পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, রংপুর অঞ্চলে ২ লাখ ২০ হাজার হেক্টর জমিতে ডিজেল দিয়ে সেচ দিতে বাড়তি খরচ পড়বে প্রায় ১০০ কোটি টকার ওপরে। রংপুর নগরীর ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কৃষক ফজলুর রহমান বলেন, স্বাভাবিক সময়ে সেচ দিতে প্রতি বিঘায় খরচ পড়ে ১ হাজার ৪০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকা। অত্যধিক গরমের কারণে বিঘাপ্রতি খরচ হচ্ছে ২ হাজার থেকে ২ হাজার ২০০ টাকা পর্যন্ত। অর্থৎ প্রতি বিঘায় ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা বাড়তি খরচ হচ্ছে। পীরগাছা উপজেলার কল্যাণী ইউনিয়নের বোরো চাষি বুলবুল মিয়া, মাহাবুবসহ অনেকেই জানালেন, গরমের কারণে প্রতি বিঘায় তাদের বাড়তি খরচ হচ্ছে ৬০০ টাকার বেশি। প্রতি হেক্টরে প্রায় ৪ থেকে সাড়ে ৪ হাজার টাকা খরচ হচ্ছে।
রংপুর সদরের কৃষক গৌরাঙ্গ মহন্ত, কাউনিয়ার রফিকুল ইসলাম, আফজাল হোসেন, মিঠাপুকুরের আশরাফুল ইসলামসহ অনেকেই জানান, প্রথম দিকে আবহাওয়া অনুকূলে থাকলেও বর্তমানের তীব্র তাপপ্রবাহের কারণে আবহাওয়া অনেকটা প্রতিকূল অবস্থা বিরাজ করছে।
রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের অতিরিক্ত পরিচালক ওবায়দুর রহমান ম ল বলেন, বর্তমানে কিছুটা প্রাকৃতিক দুর্যোগ চলছে। কৃষকদের সেচ দিতে বাড়তি খরচ হচ্ছে।