বিএনপির সিনিয়র যুগ্মমহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ভারত চট্টগ্রাম দাবি করলে বাংলা বিহার উড়িষ্যা ফেরত দিতে হবে। ফাপা আওয়াজ দিলে হবে না। বাংলাদেশের মানুষ দিল্লীর আগ্রাসন প্রতিরোধ করতে প্রস্তুত রয়েছে।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনাকে ফেরাতে ভারত যা করছে তা আগ্রাসন। এমন নজির পৃথিবীতে আর নেই। দিল্লী থেকে কোলকাতা পর্যন্ত মিথ্যা অপপ্রচার করে বিশ্বব্যাপী বিভ্রান্তী চালানোর চেষ্টা করছে ভারত।
https://dailybogratimes.com/বিএনপির এই নেতা বলেন, ভারত বিদ্বেষপরায়ন হয়ে সীমান্ত বন্ধ করে দেওয়াসহ বিদ্যমান পরিস্খিতি আরো খারাপ করার চেষ্টা করছে। এর ফল ভারতের জন্য ভালো আসবে না। পার্শ্ববর্তীদেশ প্রতি মুহুর্তে নাশকতার চেষ্টা করছে৷ ভারত চট্টগ্রাম দাবি করলে বাংলা বিহার উড়িষ্যা ফেরত দিতে হবে। ফাপা আওয়াজ দিলে হবে না। বাংলাদেশের মানুষ দিল্লীর আগ্রাসন প্রতিরোধ করতে প্রস্তুত রয়েছে। তিনি বলেন, দেশের ১৮ কোটি মানুষ দিল্লির আধিপত্যবাদ প্রতিহত করতে প্রস্তুত আছে।
রোববার (০৮ ডিসেম্বর) সকালে নয়াপল্টনে যুবদল-স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের পক্ষ থেকে ভারতীয় দূতাবাস অভিমুখে পদযাত্রা শুরুর আগে এসব কথা বলেন তিনি।
রিজভী বলেন, আমাদের এই কর্মসূচি শান্তিপূর্ণ। সুশৃঙ্খলভাবে আমরা এই পদযাত্রা করবো। ভারত নানা ধরণের ষড়যন্ত্র করছে। আমরা শান্তির পক্ষে।
তিনি বলেন, ভারতের মন ভালো নেই। কারণ তাদের সঙ্গে ভুটান নেই, নেপাল নেই। কেউ তাদের সঙ্গে বন্ধুত্ব করতে পারে না। এখন বাংলাদেশকে নিয়েও তারা ষড়যন্ত্র করছে।
ভারতের ভিসা দেওয়া বন্ধ করার প্রসঙ্গ তুলে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, কোনো লাভ নেই। ভিসা বন্ধ করে তো আমাদের উপকারই করেছে ভারত। ডলার পাচার হবে না। অনেক টাকা চলে যেত ভারতে যেতে আসতে। এখন টাকাও যাবে না। আর ভোগ্যপণ্য না দিলে দেশের মানুষ বেশি পরিশ্রম করে ফসল উৎপন্ন করবে। আমাদের রিজার্ভ বাড়বে। এতে আমাদের লাভই হলো।
ভারতের লোকজন বাংলাদেশের ইলিশের জন্য তাকিয়ে থাকে এমন ইঙ্গিত দিয়ে রিজভী বলেন, আমাদের সুস্বাদু ইলিশের জন্য সবাই তাকিয়ে থাকে। ইলিশ নেন কেন? আসলে ভারত সবসময় বিদ্বেষ ছড়ায়। এরা বাংলাদেশকে সহ্য করতে পারে না।
রিজভী আরও বলেন, বাংলাদেশকে মিথ্যা কলঙ্ক দিয়ে সম্প্রীতি ভাতৃত্ববোধকে ম্লান করতে পারবে না ভারত। অন্যায় অবিচারমুলক প্রপাগান্ডার বিরুদ্ধে আগ্রাসনের বিরুদ্ধে আগুন জ্বলছে। নানা অপপ্রচার দিয়ে ভাসিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে। কোলকাতার হাসপাতালগুলো বন্ধ। সেখানো কোনো রোগি নাই। ভারতের ৪০ শতাংশ সেনিটাইজেশনও নাই। কিসের বড়াইই করে ভারত?
বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, ভারতের রাজনীতি নেই বলে শেখ হাসিনাকে পেয়েছে। যে শেখ হাসিনা দেশের মানুষকে বন্দী করে রেখেছিল, সেই হাসিনাকে ১৫ বছর ধরে সমর্থন দিয়েছে।
ভারতীয় হাইকমিশন অভিমুখে বিএনপির পদযাত্রা শুরু: আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে হামলা, জাতীয় পতাকার অবমাননা ও সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা বাধানোর ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে ঢাকায় ভারতীয় দূতাবাস অভিমুখে পদযাত্রা শুরু করেছে বিএনপির ৩ সংগঠন।
পদযাত্রায় নেতাকর্মীদের ‘দিল্লি না ঢাকা, ঢাকা ঢাকা’, ‘ভারতীয় আগ্রাসন, রুখে দাঁড়াও জনগণ’, ‘এক জাতি এক দেশ, বাংলাদেশ বাংলাদেশ’, ‘ওয়াসিম-সাঈদ-মুগ্ধ, শেষ হয়নি যুদ্ধ’ ‘স্বাধীনতার সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে কোনো আপস নয়’, ‘বিদেশে আমাদের বন্ধু আছে, প্রভু নয়’, ‘সবার উপরে দেশ, আমার প্রিয় বাংলাদেশ’ ইত্যাদি প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করতে দেখা গেছে।
বিএনপি জানিয়েছে, ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে হামলা ও জাতীয় পতাকার অবমাননা এবং সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা সৃষ্টির অপচেষ্টার প্রতিবাদে বিএনপির অঙ্গ সংগঠন জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল, যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দল যৌথভাবে এ কর্মসূচির ডাক দিয়েছে। প্রতিবাদী পদযাত্রা নিয়ে ভারতীয় দূতাবাসে যাওয়া হবে। সেখানে স্মারকলিপি দেবে যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদল।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী, যুবদলের সভাপতি আবদুল মোনায়েম মুন্না ও সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ নুরুল ইসলাম নয়ন, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এসএম জিলানী ও সাধারণ সম্পাদক রাজিব আহসান, জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব ও সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দীন নাসিরসহ অন্যান্য নেতাকর্মীরা এই পদযাত্রায় অংশ নিয়েছেন।