পটুয়াখালীর বাউফলে ‘সেবা ক্লিনিক’ নামে একটি বেসরকারি ক্লিনিকে ভুল চিকিৎসায় অস্ত্রোপচার কক্ষেই আখিনুর (১৯) নামে এক প্রসূতির মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে ওই ক্লিনিক সিলগালা করে দেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. বায়েজেদুর রহমান।

ভ্রাম্যমাণ আদালত সূত্র জানায়, সেবা ক্লিনিকে অস্ত্রোপচার করার সময় ভুল চিকিৎসায় আখিনুর নামে এক প্রসূতির মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। এমন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে জেলা সিভিল সার্জন ডা. এসএম কবির হাসানের নির্দেশে অভিযুক্ত ক্লিনিকে অভিযান চালানো হয়। এ সময় ক্লিনিকের মালিকপক্ষের কাউকে পাওয়া যায়নি। ক্লিনিকের অভ্যর্থনাকারী ভ্রাম্যমাণ আদালতকে ক্লিনিকের কোনো বৈধ কাগজপত্র দেখাতে পারেনি। বৈধ কাগজপত্র না থাকায় ভ্রাম্যমাণ আদালত ওই ক্লিনিক সিলগালা করে দেন। একইসঙ্গে অভ্যর্থনাকারী মোসা. লিমাকে ৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।আখিনুরের পারিবারিক সূত্র জানায়, গত রবিবার বিকেলে উপজেলার কালাইয়া ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের বাহাদুর বয়াতির স্ত্রী আখিনুরকে প্রসবজনিত কারণে বাউফল স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করানো হয়। এরই মধ্যে এক দালাল ও হাসপাতালের নার্স তাদের ফুসলিয়ে সেবা ক্লিনিকে সিজার করার পরামর্শ দেন। দালালের পরামর্শ মোতাবেক আখিনুরকে সেবা ক্লিনিকে ভর্তি করানো হয়। ওইদিন সন্ধ্যার পর অপারেশন থিয়েটারে ডা. সোলায়মান নামে এক চিকিৎসক আখিনুরের সিজার করেন। কিন্তু ভুল চিকিৎসায় অপারেশন থিয়েটারেই প্রসূতি মারা যান বলে দাবি করেন আখিনুরের স্বজনরা।

তারা জানান, অপারেশন থিয়েটারে মৃত্যুর পর আখিনুরের লাশ উন্নত চিকিৎসার নামে বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়ে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ গা ঢাকা দিয়েছে। বরিশাল সেবাচিম হাসপাতালে নেওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের জানান, অনেক আগেই রোগীর তার মৃত্যু হয়েছে। তবে অপারেশনে আখিনুর জীবিত কন্যা সন্তানের জন্ম দেন।

সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. বায়েজেদুর রহমান বলেন, সেবা ক্লিনিকের কোনো বৈধ কাগজপত্র না থাকায় ক্লিনিকটি সিলগালা করে দেওয়া হয়েছে। জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে পরবর্তী সিদ্ধান্ত না দেওয়া পর্যন্ত ক্লিনিকের সকল কার্যক্রম বন্ধ থাকবে।