ব্রাজিলের রিও ডি জেনিরোতে অনুষ্ঠিত জি-২০ সম্মেলনের ফাঁকে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর এবং চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই প্রথমবারের মতো একে অপরের সঙ্গে মুখোমুখি বসলেন। এটি তাদের প্রথম বৈঠক, যা ভারত-চীনের সীমান্ত সমস্যার সমাধান পরবর্তী সময়ে অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠকে সীমান্তে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা (LAC) বরাবর সেনা সরানোর বিষয়টি আলোচিত হয়েছে। ২০২২ সালের গালওয়ান সংঘর্ষের পর দুদেশের মধ্যে সম্পর্কের উত্তেজনা বাড়ে, তবে চলতি বছরের অক্টোবরে রাশিয়ার কাজানে ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলনে ভারত ও চীন সীমান্ত থেকে সেনা সরানোর বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছায়।
এবারের বৈঠকে, জয়শঙ্কর ও ওয়াং ই সীমান্তের সেনা সরানোর প্রক্রিয়া এবং তার অগ্রগতি নিয়ে আলোচনা করেছেন। তারা দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের উন্নতি এবং বৈশ্বিক পরিস্থিতি নিয়েও আলোচনা করেছেন। চীন ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক আরও মসৃণ করার বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেছে।
গালওয়ান সংঘর্ষের পর উত্তেজনা
২০২০ সালের এপ্রিল থেকে পূর্ব লাদাখের এলএসি বরাবর চীনা সেনাদের অনুপ্রবেশের অভিযোগ ওঠে, যা উত্তেজনা বৃদ্ধি করে। ২০২০ সালের ১৫ জুন গালওয়ানে সংঘর্ষে ২০ ভারতীয় সেনা নিহত হয়, এবং পাল্টা হামলায় বেশ কয়েকজন চীনা সেনাও নিহত হন। এর পর থেকেই ভারত-চীনের সম্পর্ক কিছুটা শীতল হয়ে পড়ে।
সেনা সরানোর চুক্তি এবং সম্পর্কের উন্নতি
গালওয়ান সংঘর্ষের পর কূটনৈতিক ও সামরিক স্তরে একাধিক আলোচনা হয়, এবং গত মাসে ভারত ও চীন সীমান্ত থেকে সেনা সরানোর বিষয়ে চুক্তিতে পৌঁছায়। দেপসাং ও ডেমচক এলাকা থেকে সেনা সরানোর পাশাপাশি, গত চার বছরে তৈরি হওয়া অস্থায়ী সেনাছাউনি সরিয়ে ফেলার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের উন্নতি এবং ভবিষ্যত প্রভাব
সেনা সরানোর পর, চলতি বছরের দীপাবলিতে চীনা সেনাদের সঙ্গে ভারতীয় সেনাদের মধ্যে মিষ্টি বিনিময়ও হয়, যা সম্পর্কের উন্নতির একটি ইতিবাচক চিত্র। বিশেষজ্ঞরা আশাবাদী যে, ভারত-চীনের সম্পর্ক আরও উন্নত হলে, তা পুরো এশিয়া অঞ্চলের কূটনীতি এবং নিরাপত্তার ওপর গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলবে।