অনিয়ম-দুর্নীতি, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ছাত্র-জনতার বিপক্ষে অবস্থান নেওয়াসহ বিভিন্ন অভিযোগে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের (রাসিক) ১৫৯ কর্মচারীকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে দুইজনকে বহিষ্কার ছাড়াও ৩৮ কর্মকর্তা-কর্মচারীকে শোকজ করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) রাসিক সূত্রে জানা গেছে, গত ১০ সেপ্টেম্বর থেকে ২৯ অক্টোবর পর্যন্ত পাঁচ ধাপে রাসিকের মাস্টাররোলে নিয়োজিত ১৫৯ কর্মচারীকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া রাসিকের কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি দুলাল শেখ ও সাধারণ সম্পাদক আজমীর আহমেদ মামুনকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়। তারা দুজনই সিটি কর্পোরেশনের স্থায়ী কর্মচারী ছিলেন। এ ছাড়া তারা রাজনৈতিকভাবে আওয়ামী লীগের পদে ছিলেন। এর বাইরে রাসিকের ১৭ স্থায়ী কর্মকর্তা-কর্মচারী ও ২১ অস্থায়ী কর্মকর্তা-কর্মচারীকে শোকজ করেছেন প্রশাসক।
স্থায়ী শোকজ করা কর্মকর্তা-কর্মচারীরা হলেন- রাসিকের প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা আবু সালেহ মো. নূর-ঈ-সাইদ, নির্বাহী প্রকৌশলী (বিদ্যুৎ) এবিএম আসাদুজ্জামান সুইট, হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা নিজামুল হোদা, জনসংযোগ কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান মিশু, উপপ্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা সেলিম রেজা রঞ্জু, সাবেক মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটনের ব্যক্তিগত সহকারী এবং রাসিকের খাদ্য ও স্যানিটেশন কর্মকর্তা বিপুল কুমার সরকার, ট্যাক্সেশন কর্মকর্তা (বাজার) আবুল বাশার মাহমুদ মো. তাজউদ্দিন, অডিটর সাখাওয়াত, আদায়কারী একেএম আবু সাকের, মিলন আকতার, সাগর দাস, মনিরুজ্জামান মনির, মাসুক আলম খান সুমন, সুলতান আলী, দপ্তরি আজহার আলী, এমএলএস মাহমুদন্নবী ও ইসমাইল হোসেন রনি।
স্থায়ী কর্মরতদের মধ্যে গত ১৫ সেপ্টেম্বর ১৬ জনকে ও ১২ নভেম্বর তিনজনকে শোকজের চিঠি পাঠানো হয়েছে। অস্থায়ী কর্মরতদের মধ্যে ২৫ সেপ্টেম্বর ৯ জন ও ১২ নভেম্বর ১২ জনকে শোকজের চিঠি পাঠানো হয়। এসব চিঠিতে পরবর্তী ১০ কার্যদিবসের মধ্যে শোকজের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
শোকজের বিষয়ে রাসিকের প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা আবু সালেহ নূর-ঈ-সাইদ বলেন, চিঠি পেয়েছি। আমার বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন অভিযোগ আনা হয়েছিল। আমি তার লিখিত জবাব দিয়েছি।
এ বিষয়ে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক ও রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ূন কবীর বলেন, অস্থায়ী কর্মচারীরা কর্মচারীসুলভ আচরণ না করে শৃঙ্খলা পরিপন্থি আচরণ করেছেন। তাই তাদের অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া কারও কারও কর্মদক্ষতা সন্তোষজনক না। আর অস্থায়ী কর্মচারীরা দৈনিক মজুরিভিত্তিক। কর্তৃপক্ষের প্রয়োজন না হলে তাদেরকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিতেই পারে। স্থায়ী কর্মচারীদের সাময়িক বরখাস্ত আদেশ এবং শোকজে তাদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের বর্ণনা দেওয়া আছে।