লালমনিরহাট জেলা প্রতিনিধিঃ আদালতের নির্দেশে মামলার তদন্তের সার্থে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার শহিদ সুজনের লাশ পাঁচ মাস ২৩ দিন পর কবর থেকে উত্তোলন করা হয়েছে। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শাফায়াত আক্তার নুর এর উপস্থিতিতে বুধবার সকালে হাতীবান্ধা উপজেলার বড়খাতা ইউনিয়নের পশ্চিম সারডুবী গ্রামের পারিবারিক কবরস্থান থেকে শহিদ সুজনের লাশটি উত্তোলন করা হয়।
উপজেলার বড়খাতা ইউনিয়নের পশ্চিম সারডুবী গ্রামের সহিদুল ইসলাম ও রিজিয়া বেগম দম্পত্তির একমাত্র ছেলে সুজন হোসেন। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি,পরিবারের সচ্ছলতা ফেরাতে বাড়ি ছেড়ে ঢাকা আশুলিয়ায় একটি গার্মেন্টসে চাকুরি করতেন। গত বছরের ৫ আগস্ট স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা সরকার পদত্যাগের পর নতুন করে স্বাধীনতা পাওয়ার উল্লাসে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিজয় মিছিলে যোগ দিয়ে আশুলিয়ায় পুলিশের গুলিতে গুলিবিদ্ধ হন।
সহযোদ্ধারা তাকে গণস্বাস্থ্য হাসপাতালে নিয়ে গেলেও হাসপাতালে পৌচ্ছানোর আগেই তিনি শহিদ হন। তার পরের দিন সুজন হোসেনের মৃত দেহ গণস্বাস্থ্য হাসপাতাল থেকে তার নিজ গ্রাামে নেওয়া হয়। সন্তানের মৃত্যুর খবরে পরিবারটি দিশেহারা হয়ে পড়ে। পুরো এলাকা জুুড়ে শুরু হয় শোকের মাতম। ঐ দিন বাদ আছর তার জানাজা ও শেষকৃত সম্পন্ন করা হয়। পরবর্তিতে সুজনের বাবা বাদী হয়ে সাবেক প্রতিমন্ত্রী ও স্থানীয় এমপি জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি মোতাহার হোসেন সহ ১২৮ জনকে আসামী করে ঢাকা আশুলিয়া থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। সেই মামলা তদন্তের জন্য সুজনের লাশটি কবর থেকে উত্তোলন করা হয়।
সুজনের শারীরিক প্রতিবন্ধী বাবা শহিদুল ইসলাম বলেন,পাঁচজনের অভাবী সংসারের হাল ধরেছিল একমাত্র ছেলে, পুলিশের গুলিতে সেই ছেলে নির্মমভাবে নিহত হওয়ার পর পুরোপুরি থেমে গেছে সংসারের চাকা। অসচ্ছল পরিবারটির পাশে এখন পর্যন্ত নামমাত্র সহযোগীতা ছাড়া তেমন কোন ব্যক্তি বা দল দাঁড়ায় নাই। এমতাবস্থায় পরিবারটির জন্য সমাজের সজ্জন ব্যক্তি ও সরকারি সহায়তার বিশেষ প্রয়োজন।
হাতীবান্ধা থানার ওসি মাহমুদুন নবি বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত সুজনের লাশ বিজ্ঞ আদালতের আদেশে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে কবর থেকে উত্তোলন করে ফরেনসিক রিপোর্টের জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরন করা হলো।