একের পর এক গতিময় ডেলিভারিতে জ্যামাইকার স্যাবাইনা পার্কে ঝড় তুলেছিলেন নাহিদ রানা। ডানহাতি পেসারের গতিতে পরাস্ত হয়ে উইকেট দিয়ে গেছেন ক্রেইগ ব্রার্থওয়েট, কাভেম হজ, আলজারি জোসেফরা। সাদা পোশাকের ক্রিকেটে প্রথমবারের মতো নাহিদ পেয়েছেন পাঁচ উইকেটের দেখাও।
রূপকথার গল্পে স্বপ্নের ডানা মেলে ইচ্ছেমতো সেই নায়কের বীরত্ব গাঁথা লেখা হয়ে থাকে। কিন্তু বাস্তবের নাহিদ রানার কাছে যেন সেই রূপকথার গল্পের নায়কও হার মানবে।
প্রথম শ্রেণির অভিষেকের মাত্র ৩ বছরের মাথাতেই গতির ঝলকানিতে হয়ে উঠছেন জাতীয় দলের প্রাণভোমরা। ক্যারিয়ারের মাত্র পঞ্চম টেস্ট খেলতে নেমেই তুলে নিয়েছেন প্রথম ফাইফার।
এই এক তথ্যেই রানার পারফরম্যান্সকে ব্যাখ্যা করা মুশকিল। বরং ক্যারিবিয়ান দ্বীপে গতির ঝড়ে রীতিমতো ভড়কে দিয়েছেন প্রতিপক্ষকে, ভয়ংকর বাউন্সারে হাসপাতালে পাঠিয়েছেন কেমার রোচকে। স্পিডোমিটারে নিয়মিত ছুঁয়েছেন দেড়শ'র কাঁটা। বাংলাদেশি একজন পেসার গতি দিয়ে প্রতিপক্ষকে এভাবে নাচাবেন এমনটা ছিল স্বপ্নের মতো।
২০১৩ সালে বাংলাদেশের পেসার রবিউল ইসলাম টেস্টে ইনিংসে ৫ উইকেট পেয়েছিলেন। এরপরের ৮ বছরের খরা কাটে ২০২২ এ মাউন্ট মঙ্গানুই টেস্ট জয়ে ভূমিকা রাখা এবাদতের হাত ধরে। সেই ধারা তৈরি হওয়ার পর এখন বাংলাদেশে শুধু পেসারদের রাজত্ব। একই বছর ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে ফাইফার পান খালেদ আহমেদ।
২০২৩ সালটা পেসারদের জন্য খুব একটা ভালো না গেলেও ২০২৪ সালে ফাইফারের মেলা বসিয়েছেন পেসাররা। হাসান মাহমুদ ভারত ও পাকিস্তানের মাটিতে ফাইফার পেয়েছেন। কয়েকদিন আগে ক্যারিয়ারের প্রথম ফাইফার পেয়েছেন তাসকিনও।
এবার দুর্দান্ত পারফরম্যান্স করে ফাইফার পেলেন গতিতারকা নাহিদ। তবে এই ফাইফারের মাহাত্ম্য আলাদা। কারণ প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশ ১৬৪তে গুটিয়ে যাওয়ার পর ধারণা করা হচ্ছিল, আরও একবার বড় হারের মুখে পড়তে যাচ্ছে দল।
তবে নাহিদ রানার কল্যাণে ম্যাচে রঙ ফিরিয়েছে বোলাররা। দল পেয়েছে লিডও। আরও একবার ক্যারিবিয়ান দ্বীপে জয়ের স্বপ্নও বুনছে দল।