মুজীব শতবর্ষ উপলক্ষে দেশের যে ৫২টি রেলওয়ে ষ্টেশনের উন্নয়ন প্রকল্প সরকার গ্রহন করেছিল,তার মধ্যে বগুড়ার সান্তাহার জংসন ষ্টেশনের একটি বৃহৎ উন্নয়ন প্রকল্প সম্পন্ন হয়েছে। প্লাটফরম বর্ধিতকরণ ও উচুকরন এই প্রকল্প বর্তমানে দৃশ্যমান। এই বৃহৎ প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছিল ৬ কোটি ৪০ লাখ। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান আরটিসি কোম্পানি ঢাকা এই প্রকল্পের কাজ করেছে। ১ বছর মেয়াদী এই উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ মাত্র ৯ মাসে সম্পন্ন হয়েছে। প্রথম শ্রেনীভুক্ত এই ষ্টেশনটি বর্তমানে মনোমুগ্ধকর, নান্দনিক, মনোরম সাজে সেজেছে। সান্তাহার ষ্টেশনটিকে ( কেপিআই) বা বৃহৎ স্থাপনা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।
সরজমিনে জানা গেছে, ১৯০০ সালে ব্রিটিশ শাসন আমলে তৎকালিন লর্ড হ্যন্ডিজের নেতৃত্বে স্থাপন করা হয় এই প্রাচীন,ঐতিহ্যবাহী রেলওয়ে জংসন ষ্টেশন। সেই সময় থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত কোনো উন্নয়নের বা আধুনিতার ছোয়া ছোঁয়াই স্পর্শ করেছিল না। বর্তমানে উন্নয়ন প্রকল্প শেষ হওয়ায় ষ্টেশনটি দৃষ্টিনন্দনে ও আধুনিকতায় পরিনত হয়েছে। প্রতিদিন নান্দনিক ষ্টেশনটি দেখতে নানা বয়সের দর্শণার্থীরা ষ্টেশনে আসেন, ছবি তোলেন।
২০২২ সালের ১১ নভেম্বর রেলমন্ত্রী মো.নুরুল ইসলাম আধুনিকায়নের এই কাজের উধ্বোধন করেন। সান্তাহার জংসন ষ্টেশনের প্লার্টফরম নিচু থাকার কারণে রেল যাত্রীদের ট্রেনে ওঠা খুব কষ্ট হত। বর্তমানে ১.২.৩.৪.৫.৬ নম্বর প্লাটফরম উচু ও প্রশস্থ হওয়ায় যাত্রীদের সেই কষ্ট দুর হয়েছে। সান্তাহার ষ্টেশনের শেডগুলি নষ্ট হয়ে যাওয়াতে আগে একটু বৃষ্টি হলেই পানি পড়তো। বর্তমানে সেই সমস্যা আর নেই।
সান্তাহার ষ্টেশন মাষ্টার ও সান্তাহার উর্দ্ধতন উপ-সহাকারী প্রকৌশলী /পুর্ত কার্যলয় থেকে পাওয়া সূত্র মতে, রেলওয়েকে আরামদায়ক ও যাত্রীবান্ধব নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে সান্তাহার সান্তাহার জংসন প্লাটফরম উন্নয়নের জন্য ৬ কোটি ৪০ লাখ টাকা বরাদ্দের অনুকুলে প্লাটফরমের শেড নির্মাণ, সীমানা বৃদ্ধি, প্লাফরম উঁচুকরণ, রং করা, বিদ্যুতায়ন ও ষ্টেশনের উভয়দিকে অতিরিক্ত নিরাপত্তা বেষ্টনীর কাজ ইতিমধ্যে শেষ হয়েছে। এই কাজের অংশ হিসেবে ১,২ প্লাটফরম ১২১৫ ফিট,৩,৪ নং প্লাটফরম ১২১০ ফিট ও ৫.৬ প্লাটফরম ৮০০ ফিট হিসেবে প্রসস্ত করা হয়েছে।
প্লাটফরমে উন্নয়ন প্রকল্প হিসেবে ৭৫টি ইলেকট্রিক আধুনিকমানের ফ্যান ও ৭৮ টি বিভিন্ন মানের রডলাইট লাগানো হয়েছে। যাত্রীদের বসার জন্য প্রায় প্রতিটি লাইটের ষ্ট্যান্ডে পাকাকরণের স্থান করা হয়েছে। প্রায় পুরো ষ্টেশন নতুন করে রং করা হয়েছে।
উন্নয়ন প্রকল্পের অংশ হিসেবে বর্তমানে সান্তাহার জংসন ষ্টেশনের দুপাশে ১৯ হাজার বর্গফুটের সীমানা প্রাচীরের নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। সীমানা প্রাচীরে মাত্র দুটি প্রবেশ দ্বার রয়েছে। ঠিকাদারী প্রতিষ্টান মেসার্স আনছারী এন্টারপ্রাইজ এই কাজটি করেছে।
সান্তাহার নাগরিক কমিটির সভাপতি অধ্যক্ষ মোসলেম উদ্দীন বলেন, ত্রিমুখি রেলের রেলের সংযোগস্থল এবং দুই জেলার মোহনায় অবস্থিত এই ষ্টেশনটি নানা দিক দিয়ে গুরুত্বপুর্ণ। ষ্টেশনের বার্ষিক আয়ও ভাল। বর্তমান উন্নয়ন প্রকল্প হিসেবে যে সীমানা প্রাচীর করা হয়েছে, তাতে করে অবৈধ টিকিট যাত্রী রোধ হবে, বহিরাগতরা আর আগের মত ষ্টেশনে প্রবেশ করতে পারবে না।
উর্দ্ধতন উপ-সহকারী প্রকৌশলী /পূর্ত মোঃ আব্দুর রহমান বলেন, সান্তাহার ষ্টেশনের পানি সহ অনান্য বাকী সমস্যা নিরসনে সংশ্লিষ্ট মহলে আবেদন করা হয়েছে।
সান্তাহার জংসন ষ্টেশনের ষ্টেশন মাষ্টার (অতিরিক্ত দায়িত্বে) হাবিবুর রহমান জানান, বর্তমান সরকার উন্নয়নের সরকার। ১৩৫ বছরে সান্তাহার ষ্টেশনে তেমন উন্নয়ন হয়নি। বর্তমানে হচ্ছে। ষ্টেশনের প্রাচীন ওভারব্রিজটি ভেঙে নতুনকরে করার জন্য টেন্ডার আহবান প্রক্রিয়াধীন।