1. editor@dailybogratimes.com : dailybogratimes. :
সান্তাহারের শিক্ষা বিস্তারে জমিদার বনমালীদাস ও সুরেন্দ্রনাথের অসামান্য অবদান » Daily Bogra Times বগুড়া টাইমস
Logo বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭:৪১ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ :
সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ নির্ধারণের প্রস্তাব আমদানি হবে ৬ লাখ টন চাল ও গম, খাদ্যের মজুদ বাড়াচ্ছে সরকার পিআইবির নতুন মহাপরিচালক ফারুক ওয়াসিফ কাজিপুরে আন্তঃশ্রেণি ফুটবলের ফাইনাল অনুষ্ঠিত রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসির নতুন পরিচালক ড. মুর্শিদা ফেরদৌস  ধামইরহাটে তালা ভেঙ্গে কাপড়ের দোকানে চুরির অভিযোগ মহাদেবপুরে নৃ-গোষ্ঠীর কারাম উৎসব পালিত রাজশাহীর উপজেলা ও পৌরসভায় সেবা পেতে জনগণের ভোগান্তি  জয়পুরহাট সরকারি কলেজের উদ্যোগে আন্তঃ বিভাগ ফুটবল টুর্নামেন্ট শুভ উদ্বোধন বিস্ফোরণে কাপলো লেবানন : নিহত ৯, আহত ২৮০০ পশ্চিমবঙ্গে বন্যার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারকে দায়ী করলেন মমতা সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান অধ্যাপক আলী রীয়াজ আমরা বাংলাদেশকে সম্মান করি : গৌতম গম্ভীর অনলাইনেও দেখা যাবে বাংলাদেশ-ভারত সিরিজ আ.লীগ সরকারের রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত সব প্রকল্প বাতিল : পরিকল্পনা উপদেষ্টা

সান্তাহারের শিক্ষা বিস্তারে জমিদার বনমালীদাস ও সুরেন্দ্রনাথের অসামান্য অবদান

মোঃ রবিউল ইসলাম (রবীন) আদমদীঘি,বগুড়া
  • শুক্রবার, ১২ মে, ২০২৩
  • ৪৫ বার পঠিত
print news

সান্তাহার-বগুড়া মহাসড়ক থেকে ’বনমালি পরমেশ উচ্চ বিদ্যালয়ে’ কোল ঘেষে একটি সড়ক শহরের শেষ প্রান্ত্রে রথবাড়ি এলাকায় গিয়ে শেষ হয়েছে। সেখানেই বহু বছর ধরে কালের সাক্ষি হয়ে দাঁড়িয়ে আছে একটি প্রাচীন জমিদার বাড়ি। সেখানে বসবাস করতেন দুজন দানশীল, প্রগতিশীল,ক্ষনজন্মা রাজপুরুষ। জমিদার বনমালির
দাস ও তাঁর সন্তান বাবু সুরেন্দ্রনাথ দাস। স্থানীয়দের মধ্যে অনেকে জমিদার বনমালি দাস এবং
সুরন্দ্রেনাথ দাস কে ’সান্তাহারের আধুনিক রুপকার’ বলেন। গত ২২ এপ্রিল ছিল সুরন্দ্রেনাথ দাসের
প্রয়ান দিবস।

জানা গেছে, জমিদার বনমালী দাসের পুত্র সুরেন্দ্রনাথ দাস। এই বংশের এক কীর্তিমান,দানশীল
ব্যক্তি ছিলেন বনমালী দাস। তিনি সান্তাহারে মধ্য-ইংরেজী বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা। এটিই
রাজশাহী বিভাগের সর্ব্বপ্রধান মধ্য-ইংরেজী বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠান। দিল্লীর দরবারে ইনি আর্নাস
( সন্মান) সার্টিফিকেট পেয়েছিলেন। তাঁর দুই কণ্যা ও এক পুত্র। পুত্রের নাম সুরেন্দ্রনাথদাস।
তাঁর জমিদার বনমালী দাস ও তাঁর এক আত্মীয় পরমেশ^র বাবুর একান্ত প্রচেষ্ঠায় ’সান্তাহার
বনমালি পরমেশ^র বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়’ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।,’বনমালি চ্যারিটিবল
ডিপেনসারি’ (১৯২৭), ’সান্তাহার ইউনিয়ন পরিষদ ভবন’ (১৯২৭) প্রতিষ্ঠা লাভ করেছে এবং এই
সকল প্রতিষ্ঠান আজও টিকে আছে এবং মানুষ তার সুফোল ভোগ করছেন। সুরেন্দ্রনাথ ছিলেন
সান্তাহার ইউনিয়ন বোর্ডের প্রেসিডেন্ট। তিনি সান্তাহার বনমালী পরমেশ^র বহুমুখি উচ্চ
বিদ্যালয়ের সেক্রেটারি। সুরেন্দ্রনাথ দাস সান্তাহার বালিকা বিদ্যালয়েরও সেক্রেটারি ছিলেন।
পরবর্তিকালে এই প্রতিষ্ঠানটিই ’ মুসলিম স্কুল’ এবং পরে সান্তাহার কলেজে পরিনত হয়েছিল
আর তা বর্তমানে সান্তাহার সরকারি কলেজে হয়েছে। আবার তিনি তাঁর পিতৃদেবের নামে
দাতব্য চিকিৎসালের প্রেসিডেন্ট ছিলেন।
মোট কথা সুরেন্দ্রনাদ দাসের পিতা বনমালী দাস যে যে স্থানে যে সব জনহিতকর কাজ করে
গিয়েছিলেন তিনি তা শক্তহস্তে চালিয়ে নিয়ে গেছেন। বর্তমানে এই বংশধরদের নির্মিত
সান্তাহার বনমালী পরমেশ^র বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় অতি সুনামের সাথে পরিচালিত হচ্ছে।
সান্তাহার ইউনিয়ন ও সান্তাহার স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে শত শত মানুষ চিকিৎসা সেবা পেয়ে যাচ্ছে।
জমিদারবাড়ির উত্তরে আছে প্রকান্ড এক দিঘী, পুর্ব্বদিকে একটি পুস্করিনী এবং দক্ষিণ
আছে একটি বৃহৎ পুস্কররিণী। সান্তাহার আধুনিক স্টেডিয়ামেও সান্তাহার ২০ শয্যা
হাসপাতালে তাঁরা জমি দান করেছেন। তিনি সান্তাহারের রথবাড়িতে রাধামাধব মন্দ্রির স্থাপন
করেন। ( সূত্র ঃ জ্ঞানেন্দকুমার সংকলিত বংশ-পরিচয়- দ্বাদশ অধ্যায়)

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ১৯৭১ সালের মার্চ মাসে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলেও পাক বাহিনী
সান্তাহারে প্রবেশ করে ১৯৭১ সালের ২২ এপ্রিল। কিছু বিহারী ও স্বাধীনতা বিরোধীদের
প্রচারনায় ঐ দিন পাক বাহিনী সান্তাহার ও পাশর্^বর্তি গ্রামগুলিতে প্রায় ১৮৭ জন বাঙালী
ও অজ্ঞাতানামা মানুষকে নিধন করেন। এরই ধারাবাহিকতায় পাক বাহিনী দুপুর ১ টার দিকে
রথবাড়ি এলাকায় এসে জমিদার বাড়িতে প্রবেশ করে। পাক বাহিনী ও কিছু অবাঙালী পুরো
জমিদার বাড়ি লুটপাট করে এবং আগুন লাগিয়ে দেয়।

dailybogratimes 139

অনেকে সুরেন্দ্রেনাথকে পালিয়ে যেতে অনুরোধ করলেও তিনি যাননি। তাছাড়া তা^ঁর একটা
আত্মবিশ^াস ছিল, কেউ তাকে মেরে ফেলবে না। কিন্তু একটা সময় প্রানভয়ে প্রায় সবাই
পালিয়ে যায়। বিভিন্ন সূত্র হতে অনুমান করা গেছে, পাক বাহিনী, কিছু অবাঙালী ও
স্বাধীনতাবিরোধীরা জমিদার বাড়িতে প্রবেশ করেই সুরেন্দ্রনাথ দাস ও তার স্ত্রী ভাবানী
দাসকে নৃশংসভাবে হত্যা করে ইন্দ্রিরায় ফেলে দেয়, ফলে সুরেন্দ্রনাথ ও তাঁর স্ত্রীর মরদেহও পাওয়া
যায়নি। সুরেন্দ্রনাথ দাসের একজন স্বজন দাবী করেন যে, দেশ স্বাধীন হবার পর তাঁরা ইন্দ্রিরার
পানি বের করেলে সেখানে জমিদার সুরেন্দ্রনাথ ও তাঁর স্ত্রীর ব্যবহার করা নানা অলংকার পাওয়া
গেছে। সান্তাহার পৌরসভা সুরেন্দ্রদাসের স্মরনে একটি সড়ক নির্মাণ করে দিয়েছেন।
জমিদারবাড়ির সামেন নেই সড়কের একটি নামফলক আছে।
বর্তমানে এই জমিদার বাড়িতে জমিদার বংশধর ও প্রয়াত সুধীর ভৌমিকের পুত্রগন বসবাস
করছেন। তাঁরা সবাই সুশিক্ষিত ও প্রগতিশীল হিসেবে সমাজে স্বনামধণ্য। তাঁদের এবং
সান্তাহারবাসীর দাবী এই পরিবারকে শহীদ পরিবার হিসেবে ঘোষনা দেওয়া হোক। সান্তাহার
নাগরিক কমিটিও এই দাবী করেছেন।
মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ও বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মোরশেদ বলেন, এই এলাকার শিক্ষা বিস্তারে
অবদান রেখে গেছেন সেই উচ্চমানের শিক্ষিত,প্রগতিশীল সুন্দ্রেনাথকে পাক বাহিনী ও তাদের
দোষরারা হত্যা করে যুদ্ধপরাধ করেছে। তাই তিনি এবং বর্তমান তাঁর বংশধর পরিবারকে শহীদ
পরিবার হিসেবে ঘোষনার দাবী জানাচ্ছি।


এনাম হক / ডেইলি বগুড়া টাইমস

আরো খবর
© All rights reserved by Daily Bogra Times  © 2023
Theme Customized BY LatestNews