আদমদীঘি (বগুড়া) প্রতিনিধি ঃ ’ছি কুতকুত তানিয়া/ নৌকা দিমু
বারাইয়া/ নৌকা যদি ডুবে/ বিয়া দিমু পূবে।’.. এক সময় এমন কত
খেলাতেই না মেতে উঠত গ্রামবংলার শিশু-কিশোররা। আজ নানা কারনে
বিলুপ্তির পথে গ্রাম বাংলার এসব জনপ্রিয় খেলা ও কথা। বর্তমান প্রজন্মের
কাছে এসব ছড়া একেবারেই অপরিচিত। এসব খেলাধুলা একসময় আমাদের
সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য বহন করত।
কালের বিবর্তনে অজপাড়াগাঁয়েও বহুল
প্রচলিত কাপাডি, দাঁড়িয়াবান্ধা, গোল্লাছুট, কানামাছি প্রভৃতি
খেলার প্রচলন যেন হারাতে বসেছে। হা-ডু-ডু,ডাঙ্গুলি,গোছত তোলা,
চিক্কা, কুতকুত, ল্যাংচা, বোমবাষ্ঠিং, হাঁড়িভাঙা, বৌছি, কাঠি
ছোয়াঁ, দড়ি লাফানো, বরফ পানি, দড়ি টানাটানি, চেয়ার সিটিং, রুমাল
চুরি, চোখ বোজা, ওপেন্টি বায়স্কোপ, এক্কা-দোক্কা, এলাটিং বেলাটিং,
আগডুম বাগডুম, ইচিং বিচিং, ইকড়ি মিকড়ি, ঝুম ঝুমা ঝুম,
নোনতা বলরে, কপাল টোকা, বউরানী ছক্কা, লাঠিখেলা, বলী খেলা, আইচ্চা
ভাঙা, রাম শাম যদু মধু, চোর-ডাকাত, মার্বেল, সাতচড়া,ষোলগুটি, চিল
মোড়ক, বোঝাবুঝি,বদন, লাফালাফি, ডালিম খেলা, তাশ খেলা,দাবা খেলা
ইত্যাদি।
সান্তাহার ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য শিপলু খান বলেন, গ্রাম বাংলার এসব
খেলাধুলা ক্রমেই হারিয়ে যাচ্ছে। ঐতিহ্যবাহি এসব খেলাধুলা হারিয়ে
যাচ্ছে। এসব খেলাধুলা এখন আর তেমন কোথাও চোখে পড়ে না। নতুন
প্রজন্মের কাছে এগুলো এখন শুধুই গল্প। মাঠে খেলতে না গিয়ে এখনকার শিশু,
কিশোররা মোবাইলে বা কম্পিউটারে ভিডিও গেমস খেলে।
সান্তাহার ইতিহাস লেখক,গবেষক সাজেদুল ইসলাম বলেন, মহামারি করোনার
কারনে স্কুল-কলেজ দির্ঘদিন বন্ধ ছিল। এই বন্ধ সময় ঐতিহ্যবাহি গ্রাম
বাংলার খেলাগুলি হারিয়ে যাবার ফলে অনেক শিক্ষার্থীরা পর্যন্ত এসব খেলা না
খেলে প্রায় সারাটা দিন মোবাইলে ফ্রি-ফায়ার,পাবজি গেমস খেলেছে। ফলে
কিশোর অপরাধ বেড়ে গেছে। আমাদের উচিত হবে পুরোনো সেসব খেলা
আবার ফিরে আনা।