ঢাকায় নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন বলেছেন, সাম্প্রতিক চীন সফরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের মধ্যে ‘সংক্ষিপ্ত’ বৈঠককে ‘অবাস্তব’ বলে দাবি করেছেন ঢাকায় নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন।
সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন,“আমি আপনাদের বলতে পারি। আমি সেখানে (মিটিংয়ে) ছিলাম। এটি ছিল প্রায় একঘণ্টাব্যাপী। ৩০ মিনিট ধরে বৈঠক হয়েছে বলে যে দাবি করা হয়েছে তা ‘অবাস্তব’।”
গত ১০ জুলাই চীনের রাজধানী বেইজিংয়ে গ্রেট হল অব দ্য পিপলে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠকের মাধ্যমে বাংলাদেশ ও চীন তাদের সম্পর্ককে একটি ‘ব্যাপক কৌশলগত সহযোগিতা’ অংশীদারিত্বে উন্নীত করেছে।
সফরের ফলাফল নিয়ে সমালোচনা সম্পর্কিত এক প্রশ্নের জবাবে রাষ্ট্রদূত বলেন, এগুলো সমালোচকদের মূল্যায়ন। চীন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মূল্যায়ন একত্রিত হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দ্রুত বাংলাদেশে ফিরে আসার কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে রাষ্ট্রদূত বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দ্রুত ফিরে আসার কারণ সম্পর্কে খুব স্পষ্টভাবে কথা বলেছেন
এবং বেইজিং ত্যাগের আগে সকল দাপ্তরিক কর্মসূচি সম্পন্ন হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে দূতাবাসের ডেপুটি চিফ অব মিশন লিউ ইউয়িন উপস্থিত ছিলেন।
প্রেসিডেন্ট শি বলেছেন, কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের পর থেকে বাংলাদেশ ও চীন সবসময় একে অপরকে সম্মান ও সমর্থন করেছে। একে অপরকে সমান বিবেচনা করেছে। এবং অভিন্ন স্বার্থের জন্য সহযোগিতা করেছে।
বিশেষ করে গ্লোবাল সাউথের দেশগুলোর মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ বিনিময় এবং পারস্পরিক উপকারী সহযোগিতার নজির তৈরি করেছে।
শি আরও বলেন,‘চীন দু’দেশের প্রবীণ প্রজন্মের নেতাদের মধ্যে গড়ে ওঠা গভীর বন্ধুত্বকে লালন করে এবং আগামী বছর কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার ৫০তম বার্ষিকীকে উচ্চমানের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ গভীর, বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতা সম্প্রসারণ এবং চীন-বাংলাদেশ সমন্বিত কৌশলগত সহযোগিতা অংশীদারিত্বের স্থিতিশীল ও দীর্ঘমেয়াদী উন্নয়নের সুযোগ হিসেবে নিতে ইচ্ছুক।’
বাংলাদেশের স্বাধীন পররাষ্ট্রনীতি অনুসরণ, জাতীয় সার্বভৌমত্ব, স্বাধীনতা ও আঞ্চলিক অখণ্ডতা রক্ষা এবং যেকোনো বহিঃস্থ হস্তক্ষেপের বিরোধিতা করে বাংলাদেশকে সমর্থন করে চীন।
তিনি বলেন, চীন বাংলাদেশকে স্বাধীন পররাষ্ট্রনীতি মেনে চলা, জাতীয় সার্বভৌমত্ব, স্বাধীনতা ও আঞ্চলিক অখণ্ডতা রক্ষা এবং যেকোনো বহিঃস্থ হস্তক্ষেপেরও বিরোধিতা করে।
শি বলেন, চীন বাংলাদেশের সঙ্গে শাসন ও উন্নয়ন নীতির অভিজ্ঞতা বিনিময়, উন্নয়ন কৌশলের সমন্বয় জোরদার এবং অর্থনীতি, বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও যোগাযোগের ক্ষেত্রে সহযোগিতা গভীর করতে চায়।
শি জিনপিং বলেন,বাংলাদেশের জাতীয় উন্নয়ন অর্জনে সহায়তা করতে শিল্প ও সরবরাহ চেইনের সমন্বিত উন্নয়ন এবং বাংলাদেশের সঙ্গে শিল্প বিনিয়োগ সহযোগিতা বাড়াতে চীনা উদ্যোক্তাদের উৎসাহিত করা হচ্ছে।