প্লাস্টিকের বোতলে প্রচুর পরিমাণে প্লাস্টিক-কণা পানি সঙ্গে মিশে থাকে। এই প্লাস্টিক পানি খাওয়ার সময় শরীরে ঢোকে এবং শরীরে টক্সিনের মাত্রা বহুগুণে বাড়িয়ে দেয়। বেশি মাত্রায় এই প্লাস্টিকের কণা শরীরে ঢুকলে তা শরীরে ইনসুলিনের তারতম্য ঘটায়। টাইপ টু ডায়াবিটিসের ঝুঁকি বাড়ে।
সম্প্রতি আমেরিকান ডায়াবেটিক অ্যাসোসিয়েশন এসব দাবি করেছে। ক্যালিফোর্নিয়া স্টেট ইউনিভার্সিটির গবেষকেরা প্লাস্টিকের বোতলের ক্ষতিকারক দিক নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরেই গবেষণা করছেন।
গবেষকরা জানান, সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম প্লাস্টিকের কণাকে বলা হয় ‘ন্যানোপ্লাস্টিক’। গবেষণা বলছে, ১ লিটার প্লাস্টিকের বোতলের পানিতে (৩৩ আউন্স) কম করেও ২ লাখ ৪০ হাজার প্লাস্টিক-কণা মিশে থাকে। খালি চোখে এদের দেখা যায় না। এগুলো পানির সঙ্গে শরীরে ঢুকে রক্তের সঙ্গে মিশে যায়। এদের দৈর্ঘ্য ১ থেকে ৫০০০ মাইক্রোমিটারের মতো। অর্থাৎ, মানুষের মাথার চুলের চেয়েও সূক্ষ্ম। প্লাস্টিকের বোতলের পানিতে এই সূক্ষ্ম প্লাস্টিক-কণাগুলোই মিশে থাকে।
বাজারে যে পানির বোতলে কোমল পানীয় বিক্রি করা হয়, তার অধিকাংশই একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিকে তৈরি। এই ধরনের বোতলে দিনের-পর-দিন পানি পান করলে ক্যানসারের আশঙ্কাও বাড়ে। প্লাস্টিকের বোতল তৈরিতে ব্যবহৃত হয় ‘বিসফেনল এ’ বা ‘বিপিএ’সহ একাধিক উপাদান, যা শরীরের জন্য ক্ষতিকর।
গবেষকেরা আরও জানান, ন্যানোপ্লাস্টিক ও ‘বিসফেনল এ’ যদি বেশি মাত্রায় মানুষের শরীরে ঢোকে, তাহলে তা বিভিন্ন জটিল রোগের কারণ হয়ে উঠতে পারে। কী কী রোগ হতে পারে, সেই নিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা করতে গিয়েই গবেষকেরা দেখেছেন, বোতল তৈরিতে ব্যবহৃত হয় এমন কয়েক ধরনের প্লাস্টিক শরীরে ইনসুলিনের ক্ষরণে প্রভাব ফেলে। যা পরবর্তী সময়ে ডায়াবেটিসের কারণ হয়ে উঠতে পারে।
৪০ জন প্রাপ্তবয়স্কের ওপর পরীক্ষা করে এমন প্রমাণও পাওয়া গিয়েছে বলে দাবি গবেষকদের। শুধু তা-ই নয়, প্লাস্টিক ‘বিপিএ’ হরমোন ও ক্রোমোজোম ঘটিত সমস্যাও ডেকে আনতে পারে। অধিক মাত্রায় প্লাস্টিক-কণা শরীরে জমলে পুরুষদের ক্ষেত্রে শুক্রাণুর পরিমাণ কমিয়ে দেয়। নারীদের হরমোন ক্ষরণে বাধা তৈরি করে। বিশেষ করে, ইস্ট্রোজেন হরমোনের কার্যকারিতা কমে যেতে পারে।