সত্যপ্রেম কি কথা , ট্রু লাভ স্টোরি।
গত বছর ‘ভুলভুলাইয়া ২’-এর পর থেকেই কার্তিক আরিয়ান এবং কিয়ারা আডবাণী জুটিকে দর্শক বড় পর্দায় দেখতে চাইছিলেন। আরও একবার দর্শককে সেই সুযোগ করে দিয়েছে ‘সত্যপ্রেম কি কথা’। এই ছবিকে শুরু থেকেই ‘ট্রু লভ স্টোরি’ হিসেবে প্রচার করেছেন নির্মাতারা।
তথাকথিত বলিউডি ছাঁচেই ছবির গল্প শুরু হয়। আপাতভাবে মনে হবে এই গল্পের কাঠামো সহজ-সরল। তবে গল্প যত এগোয়, সেই ভাবনাকেই ভেঙে চুরমার করে দেয় চিত্রনাট্য। প্রথম দর্শনেই কথার (কিয়ারা) প্রেমে পড়ে সত্যপ্রেম ওরফে সত্তু (কার্তিক)। সত্তু আইনের ফাইনাল পরীক্ষায় পাশ করতে পারেনি। মধ্যবিত্ত গুজরাতি পরিবারে সাংসারিক কাজ করেই খুশি এই বিয়েপাগল ছেলে। অন্য দিকে, উচ্চবিত্ত ব্যবসায়ী পরিবারের মেয়ে কথা তার প্রেমিকের সঙ্গে সম্পর্কে রয়েছে। কিন্তু সেই সম্পর্কেও আসে বিচ্ছেদ। নেপথ্যে রয়েছে কথার জীবনের এক অন্ধকার দিন। দুই পরিবারের মধ্যে বিস্তর ফারাক সত্ত্বেও ঘটনাচক্রে সত্যপ্রেম এবং কথার বিয়ে হয়। স্ত্রীকে আপন করে নিতে সত্তুর লড়াই ঘিরেই ছবি এগিয়েছে পরিণতির দিকে।বক্স অফিসে ‘শেহজাদা’ ফ্লপ করার পর কার্তিকের উপর চাপ ছিল অনেকটাই। এই ছবিতে আবার ঘুরে দাঁড়িয়েছেন তিনি। কমিক চরিত্রে তাঁর অভিনয় দক্ষতা নিয়ে নতুন করে কিছু বলার নেই। এই ছবিতেও কার্তিক প্রত্যাশা পূরণ করেছেন। অন্যদিকে, এই ছবিতে সম্ভবত কিয়ারা তাঁর ক্যারিয়ারের অন্যতম সেরা অভিনয় উপহার দিলেন। তাঁর অভিনীত চরিত্রটি জটিল, তার সফরও সহজ নয়।
ছবির অন্যান্য চরিত্রেও শক্তিশালী অভিনেতারা রয়েছেন এবং প্রত্যাশাপূরণ করেছেন। সত্তুর বাবা এবং মায়ের চরিত্রে যথাক্রমে গজরাও রাও এবং সুপ্রিয়া পাঠক আলাদা করে নজর কেড়েছেন। কথার বাবার চরিত্রে গুজরাতি নাট্য জগতের পরিচিত নাম সিদ্ধার্থ রন্দ্রেরিয়ার পরিমিত অভিনয় ভাল লাগে। তবে ক্যামিয়ো চরিত্রে রাজপাল যাদবের মতো শক্তিশালী অভিনেতাকে জায়গাই দেওয়া হয়নি। গুজরাতি সংস্কৃতিকে মাথায় রেখে তৈরি ছবির গানগুলো ব্যয়বহুল সেটে শুট করা হয়েছে। দৃষ্টিনন্দন হলেও তা আলাদা করে মনে দাগ কাটে না।
অন্যদিকে, পাকিস্তানি শিল্পী আলি শেট্টি এবং শায়ে গিলের গাওয়া জনপ্রিয় ‘পাসুরি’ গানটিকে ছবিতে নতুন ভাবে ব্যবহার করা হয়েছে। এই নিয়ে বিতর্কও চোখে পড়েছে। দুঃখের বিষয়, অরিজিৎ সিং এবং তুলসী কুমারের গাওয়া এই ভার্সান ছবিতে কোনও ম্যাজিক সৃষ্টি করতে পারেনি।