জয়পুরহাট প্রতিনিধিঃ জয়পুরহাটের আক্কেলপুরে এক গৃহবধুকে গণধর্ষণের অভিযোগে থানায় মামলা দায়ের হয়েছে। এঘটনায় পুলিশ তিন জনকে আটক করেছে। মামলার বাদী হয়েছেন ভক্তভোগীর স্বামী।
ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার গোপীনাথপুর ইউনিয়নের একটি গ্রামের মাঠে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আক্কেলপুর থানার পরিদর্শক (ওসি) আনিছুর রহমান।
গ্রেপ্তারকৃত আসামীরা হলেন, মোহাম্মদপুকুর গ্রামের রুবেল হোসেন (৩৩), ফারুক হোসেন (৪০) এবং রামশালা গ্রামের একরামুল হক (৪২)।
থানার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ওই গৃহবধু প্রবাসে চাকুরির জন্য জয়পুরহাট কারিগরি প্রশিক্ষণ (টিটিসি) কেন্দ্রে তিন দিন ব্যাপী প্রশিক্ষনের জন্য ভর্তি হোন। সেখানে মামলার এক নম্বর আসামী রুবেল হোসেনের সাথে ওই গৃহবধুর সেখানে প্রশিক্ষণ নেয়। সেই সুবাদে তাঁদের সাথে পরিচয় হয়। এক পর্যায়ে গত বুধবার (৫ ফেবরুয়ারী) ওই গৃহবধুর প্রশিক্ষণ শেষে রুবেল তাঁর মোটরসাইকেলে তুলে বাড়ি পৌছে দেওয়ার কথা বলে ওই দিন রাতে মোহাম্মদপুকুর গ্রামের শান্তির মোড় থেকে কাশিড়া গামী রাস্তার পশের মামলার দুই নম্বর আসামী ফারুক হোসেনের গভীর নলকুপের ঘরে নিয়ে আসে। সেখানে পালাক্রমে ওই গৃহবধূকে গণর্ধষণ করে। একপর্যায়ে গৃহবধু অচেতন হলে তাঁরা সেখানে ফেলে রেখে পালিয়ে জান।
গত বৃহস্পতিবার সকালে ঘটনাটি গৃহবধু তাঁর স্বামীকে জানান। অসুস্থ্য অবস্থায় গৃহবধুর স্বামী চিকিৎসার জন্য তাকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করান। এরপর গত শুক্রবার রাতে আক্কেলপুর থানায় এসে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে গণর্ধষণের অভিযোগ তুলে থানায় মামলা দায়ের করেন। পরে পুলিশ অভিযান চালিয়ে তিনজন আসামীকে গ্রেপ্তার করে।
জানতে চাইলে থানায় মামলার এক নম্বর আসামী রুবেল হোসেন ধর্ষণের কথা স্বীকার করে বলেন, ওই গৃহবধু নিজ ইচ্ছায় আমাদের কাছে এসেছিলেন। সে তাঁর কিস্তির টাকার জন্য চুক্তিতে এসেছিলেন। আমরা জোরপূর্বক কোন কিছু করিনি। পরে তাঁর স্বামীকে দিয়ে থানায় মামলা দায়ের করে আমাদের ফাঁসিয়েছেন।
জানতে চাইলে ভ‚ক্তভোগীর স্বামী বলেন, বিদেশ যাওয়ার জন্য আমার স্ত্রীকে জয়পুরহাট কারিগরি প্রশিক্ষণ (টিটিসি) কেন্দ্রে তিন দিন ব্যাপী প্রশিক্ষনের জন্য ভর্তি করিয়েছিলাম। সেখানে মামলার এক নম্বর আসামীও প্রশিক্ষণ নিচ্ছিলেন। সে আমার স্ত্রীকে তাঁর মোটরসাইকেলে তুলে বাড়ি পৌছে দেওয়ার কথা বলে দুই নম্বর আসামীর গভীর নলক‚পে নিয়ে গিয়ে সর্বনাশ করে। একপর্যায়ে আমার স্ত্রী জ্ঞান হাড়িয়ে ফেললে তাঁরা স্ত্রীকে ওই ঘরে ফেলে রেখে পালিয়ে যায়। পরের দিন সকালে গুরুতর অসুস্থ্য অবস্থায় ওই গভীর নলক‚পের ঘর থেকে বের হয়ে ঘটনাটি আমাকে খুলে বলে। তখন আমি স্ত্রীকে চিকিৎসার জন্য বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করিয়ে থানায় মামলা দায়ের করি। আশা করি ন্যায় বিচার পাবো।
আক্কেলপুর থানার পরিদর্শক (ওসি) আনিছুর রহমান বলেন, মামলার ভিকটিমকে চিকিৎসার জন্য বগুড়ায় ভর্তি করিয়েছেন তাঁর স্বামী। সেখানে তাঁর আইনি সব পরীক্ষা হবে। ওই গৃহবধুর স্বামী বাদি হয়ে গতকাল শুক্রবার রাতে থানায় তিন জনকে আসামী করে একটি এজাহার দেন। এরপর বিষয়টি তদন্ত করে প্রাথমিক সত্যতা পেলে ওই এজাহার মামলা হিসেবে নিয়ে অভিযান চালিয়ে তিনজন আসামীকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁদেরকে আজ দুপুরে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।