1. editor@dailybogratimes.com : dailybogratimes. :
'ইফতারিতে' ভাজাপোড়া বাড়ায় হৃদরোগ-ফ্যাটিলিভারের ঝুঁকি » Daily Bogra Times বগুড়া টাইমস
Logo বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭:০৮ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ :
সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ নির্ধারণের প্রস্তাব আমদানি হবে ৬ লাখ টন চাল ও গম, খাদ্যের মজুদ বাড়াচ্ছে সরকার পিআইবির নতুন মহাপরিচালক ফারুক ওয়াসিফ কাজিপুরে আন্তঃশ্রেণি ফুটবলের ফাইনাল অনুষ্ঠিত রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসির নতুন পরিচালক ড. মুর্শিদা ফেরদৌস  ধামইরহাটে তালা ভেঙ্গে কাপড়ের দোকানে চুরির অভিযোগ মহাদেবপুরে নৃ-গোষ্ঠীর কারাম উৎসব পালিত রাজশাহীর উপজেলা ও পৌরসভায় সেবা পেতে জনগণের ভোগান্তি  জয়পুরহাট সরকারি কলেজের উদ্যোগে আন্তঃ বিভাগ ফুটবল টুর্নামেন্ট শুভ উদ্বোধন বিস্ফোরণে কাপলো লেবানন : নিহত ৯, আহত ২৮০০ পশ্চিমবঙ্গে বন্যার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারকে দায়ী করলেন মমতা সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান অধ্যাপক আলী রীয়াজ আমরা বাংলাদেশকে সম্মান করি : গৌতম গম্ভীর অনলাইনেও দেখা যাবে বাংলাদেশ-ভারত সিরিজ আ.লীগ সরকারের রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত সব প্রকল্প বাতিল : পরিকল্পনা উপদেষ্টা

‘ইফতারিতে’ ভাজাপোড়া বাড়ায় হৃদরোগ-ফ্যাটিলিভারের ঝুঁকি

নিউজ ডেস্কঃ
  • বৃহস্পতিবার, ৬ এপ্রিল, ২০২৩
  • ৯৯ বার পঠিত
print news

সারা দিন রোজা রাখার পর এসব মুখরোচক খাবার শরীরের জন্য কতটা জুতসই তা চিন্তা করেন না অধিকাংশ মানুষ। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা বলছেন, না জেনে পোড়া পুরোনো তেলে ভাজা এসব খাবার মারাত্মক বিপদ ডেকে আনছে। /এমনকি বাড়িয়ে দিচ্ছে হৃদরোগ, ফ্যাটিলিভারের মতো রোগের ঝুঁকি।

মঙ্গলবার (৪ এপ্রিল) দুপুরে রাজধানীর মহাখালী, বাড্ডা, ধানমন্ডি ঘুরে দেখা যায়, বিভিন্ন রেস্তোরাঁ ও ছোট দোকানে শুরু হয়েছে ইফতারির বিভিন্ন আইটেম তৈরির কাজ।/ কড়াই ভর্তি ডুবো তেলেই ভাজা হচ্ছে সব। কথা বলে জানা যায়, বেচে যাওয়া অতিরিক্ত তেল পরের দিনের জন্য কাজে লাগানো হয়।

মহাখালী এলাকার একটি সাধারণ খাবার হোটেলেও শুরু হয়েছে ভাজাপোড়া তৈরির প্রস্তুতি। হোটেলটিতে দেখা যায় কড়াই ভর্তি তেল।/ একের পর এক বেগুনি ছাড়া হচ্ছে তেলে। তেল শেষ হয়ে এলে পুরোনো তেলের ওপরেই ঢালা হচ্ছে নতুন তেল। এক কর্মচারী জানান, প্রতিদিনের বেচে যাওয়া তেল রেখে দেওয়া হয় পরের দিনের জন্য।

বিকেলে পেঁয়াজু, আলুর চপ, বেগুনি কিনতে এসেছেন শাহিনুল হক। পরিবারের পাঁচ সদস্য মিলে ইফতার করবেন। তিনি জানান, ঘরে তার মায়ের ডায়াবেটিস, প্রেশার ও আলসারজনিত সমস্যা আছে। /তাই ভাজাপোড়া খেতে পারেন না। তিনি চিড়া-মুড়ি দিয়েই ইফতারি সারেন। বাকিরা ছোলা-মুড়ির সঙ্গে ভাজাপোড়া মাখিয়ে তৃপ্তির সঙ্গে খান।

শাহিনুল ইসলাম বলেন, এটা ছোটবেলা থেকেই খেয়ে আসছি। বন্ধুদের সঙ্গে কিংবা যে কোনো আয়োজনে এসব ভাজাপোড়া থাকেই। /গ্যাস্ট্রিকজনিত সমস্যা তো এসব খাওয়ার পর হয়েই থাকে। কিন্তু এটিতে আমরা অভ্যস্ত হয়ে গেছি, ছাড়তে পারি না।

জাহিদ হাসান বাড্ডা এলাকার একটি মেসে থাকেন। মেসে সাত-আট জন মিলে একই সঙ্গে ইফতারি মাখিয়ে খান তারা। /তিনি বলেন, আমরা শুরুর দিকে চেয়েছিলাম একটু ভিন্নতা রাখতে ভাজাপোড়া না খেয়ে। কিন্তু দ্রব্যমূল্য এত বেশি যে এসব আয়োজনেই ব্যাচেলরদের অবস্থা খারাপ হয়ে যায়। অন্য ভালো জিনিস কীভাবে খাবো।

চিকিৎসকদের মতে, সারাদিন রোজা রেখে অস্বাস্থ্যকর তেলেভাজা ইফতারি হৃদরোগ-স্ট্রোকসহ বিভিন্ন ধরনের স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়িয়ে দিতে পারে। একই তেল দিনের পর দিন ব্যবহার করে তৈরি খাবার নিয়মিত গ্রহণে ফ্যাটিলিভার থেকে শুরু করে লিভার সিরোসিস ও লিভার ক্যানসার পর্যন্ত হতে পারে। তাই রোজার মাসে ইফতারিতে এসব খাবার পরিহার করে ফলমূলজাতীয় সুষম খাবার খেতে হবে।

সারাদিন রোজা রাখার পর এই ভাজাপোড়া খাওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে ইবনে সিনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কনসালট্যান্ট ডায়েটিশিয়ান সিরাজাম মুনিরা বলেন, অনেক ক্ষেত্রেই ইফতারির জন্য বাইরের ভাজাপোড়া খাবার তৈরিতে একই তেল বারবার ব্যবহার করা হয়। তেলের মান নির্ভর করে স্মোক পয়েন্ট অর্থাৎ, তেল কত ডিগ্রি তাপমাত্রায় ফোটানো হয় তার ওপর। অতিরিক্ত তাপে ভাজা হলে স্মোক পয়েন্ট বেশি হয়। তখন সেটি র্যানসিড তথা হাইড্রোজেনেটড অয়েলে পরিণিত হয়ে তেলের স্বাভাবিক গঠন ভেঙে যায়। যার আরেক নাম ট্রান্সফ্যাট।

‘ট্রান্সফ্যাটের স্বাস্থ্যঝুঁকি অনেক বেশি।/ ফলে ছোলা, বেগুনি, আলুর চপ, পিঁয়াজুসহ ভাজাপোড়া খাবারে প্রোটিনসহ নানা উপাদান থাকলেও অতিরিক্ত ট্রান্সফ্যাটে বারবার ভাজা হলে সেটি গ্রহণে ফ্যাটি লিভার, ক্যানসার, টাইপ-২ ডায়াবেটিস বেড়ে যেতে পারে।’

তিনি আরও বলেন, সয়াবিন, সরিষা, অলিভ অয়েলসহ সব তেলেই আলাদা স্মোক পয়েন্ট থাকে। হোটেল-রেস্তোরাঁয় ভাজাপোড়ার ক্ষেত্রে ডিপ ফ্রাইড তথা ১০০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড বা অতিরিক্ত তাপামাত্রায় ভাজাপোড়া খাবার তৈরি করা হয়। ডিপ ফ্রাইয়িংয়ে সাধারণত ২৬০ ডিগ্রি পর্যন্ত স্বাভাবিক তাপমাত্রা ধরা হয়। কিন্তু চিকেন ফ্রাইসহ বিভিন্ন ভাজাপোড়ায় তাপমাত্রা ৬শ ডিগ্রি পর্যন্ত পেরিয়ে যায়। /যে তেল দিয়ে কোনো কিছু পুনরায় ভাজা ঠিক নয়। এছাড়া একই তেল দ্বিতীয়বার ব্যবহারের আগে স্মোক পয়েন্টে যাওয়ার পর সেটিকে ভালোভাবে ছেঁকে পোড়া অংশ ফেলে দিতে হবে। বাকি তেল রান্নায় ব্যবহার করা যাবে। তবে কোনোভাবেই তিনবারের বেশি হওয়া যাবে না।

ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের রোগতত্ত্ব ও গবেষণা বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. সোহেল রেজা চৌধুরী বলেন, ধর্মীয়ভাবে এ মাসে সংযমের কথা বলা হয়েছে। কিন্তু দেখা যায় এ মাসেই অতিরিক্ত খাওয়া হয়। আর যা খাওয়া হয় ইফতার বা সেহরিতে স্বাস্থ্যের জন্য খুবই ক্ষতিকর। আমাদের দেশে ইফতার মানেই ভাজাপোড়া বেশি খাওয়া, তৈলাক্ত জিনিস বেশি খাওয়া। এটা বিশেষ করে যারা হার্টের রোগী, যারা ডায়াবেটিসের রোগী, তাদের জন্য খুবই ক্ষতিকর/।

তিনি বলেন, এমন খাবার খেলে প্রথমত হজমের সমস্যা হয়। পরে কোলেস্টেরল লেভেল, ব্লাড সুগার লেভেলের কন্ট্রোল ঠিক থাকে না।/ এজন্য ভাজাপোড়া কম খেয়ে শাক-সবজি, চিড়া-মুড়ি, দই- এ ধরনের খাবার বেশি খাওয়া উচিত। এগুলো হজমের জন্য ভালো, আবার কোলেস্টেরল, সুগার লেভেলও ভালো রাখে।

শেখ রাসেল জাতীয় গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. গোলাম কিবরিয়া বলেন, যে কোনো ধরনের তৈলাক্ত খাবার স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরির কারণ।/ যাদের পরিপাকতন্ত্র ও লিভারের সমস্যা আছে তাদের ক্ষেত্রে ঝুঁকি আরও বেশি। একই তেল নিয়মিতভাবে উত্তপ্ত বা ভাজার ফলে সেটির কিছু রাসায়নিক গুণগত পরিবর্তন হয়। যেটিতে তৈরি খাবার লিভারের স্বাভাবিক কার্যক্ষমতা কমিয়ে দিতে পারে। ফ্যাটিলিভার তৈরি হতে পারে।

এনাম হক / ডেইলি বগুড়া টাইমস

আরো খবর
© All rights reserved by Daily Bogra Times  © 2023
Theme Customized BY LatestNews