1. dailybogratimes@gmail.com : dailybogratimes. :
কুড়িগ্রামের উলিপুরে বছরের পর বছর শিকল বন্দী জীবন কাঠাছেন হাবিবুরও আসাদুল » Daily Bogra Times
Logo শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:২৭ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ :
শাজাহানপুরে জিয়া সাইবার ফোর্সের আলোচনা ও মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত বিএনপি বীরের দল ডাঃ এজেডএম জাহিদ হোসেন ৪দিনে শুল্কমুক্ত সুবিধায় ভারত থেকে ৪১০ মেট্রিক টন চাল আমদানি হিলিতে কমেছে পেঁয়াজের দাম কেজি ৬০ টাকা রাণীনগরে মাদক ব্যবসায়ী আটক সুন্দরগঞ্জে ১শ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার ২ কারবারি গ্রেফতার বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের সংঘর্ষের ঘটনায় রাজশাহী মহানগর ছাত্রদলের সাংবাদিক সম্মেলন রাজশাহীতে বিচারের মীমাংসার সময় বিএনপি নেতাকে ছুরিকাঘাত আদানির সঙ্গে ২৫০ কোটি ডলারের চুক্তি বাতিল করল কেনিয়া আচরণবিধি ভঙ্গের দায়ে ৮ ক্রিকেটার ও একজন ক্লাব কর্মকর্তাকে নিষিদ্ধ সাড়ে ৫০০ ফ্রিজ করা একাউন্টে ১৪ হাজার ৫০০ কোটি টাকা প্রতিবেশী সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে শত্রুতা নয় : ডা. শফিকুর রহমান পাকিস্তানে যাত্রীবাহী গাড়িতে ভয়াবহ বন্দুক হামলা, নিহত বেড়ে ৪২ নৌকার সঙ্গে ভারতীয় সাবমেরিনের সংঘর্ষ, নিখোঁজ ২ বেনাপোল সীমান্ত থেকে ৮৯৫ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার

কুড়িগ্রামের উলিপুরে বছরের পর বছর শিকল বন্দী জীবন কাঠাছেন হাবিবুরও আসাদুল

মমিনুল ইসলাম বাবু জেলা প্রতিনিধি (কুড়িগ্রাম)
  • রবিবার, ৬ আগস্ট, ২০২৩
কুড়িগ্রামের উলিপুরে বছরের পর বছর শিকল বন্দী জীবন কাঠাছেন হাবিবুরও আসাদুল
print news

কুড়িগ্রামের উলিপুরে বছরের পর বছর শিকল বন্দী জীবন কাঠাছেন হাবিবুরও আসাদুল

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধিঃ ৬ আগস্ট কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার ধামশ্রেনি ও তবকপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা মোঃ হাবিবুর রহমান (১৪) ও আসাদুল ইসলাম (৩৬) মিয়া।অন্য দশজনের মত স্বাভাবিক জীবন যাপন করলেও এখন তাদের শিকলবন্দী জীবন কাঠাছেন। বেশ কয়েক বছর ধরে শিকল দিয়ে পা বেঁধে রেখেছে তাদের পরিবারের লোকজন।মানসিক ভারসাম্যহীন এই দুইজনের পা ঝিঞ্জির দিয়ে বাঁধা থাকলেও জীবনের গল্পটা কিন্তু একেবারেই আলাদা।সরে জমিনে গিয়ে জানা যায়, কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার তবকপুর ইউনিয়নের সাদুল্যা সরকার পাড়া গ্রামের মোঃ দেলাবর হোসেনের ছেলে আসাদুল ইসলাম।ছোট বেলা থেকে সুস্থ ছিলেন তিনি।চার ভাই বোনের মধ্যে দ্বিতীয় আসাদুল।বাবার অভাবের সংসারে হাল ধরতে দশম শ্রেনি পর্যন্ত পড়াশোনা করে ঢাকায় পাড়ি জমান। গার্মেন্টস কর্মী হিসাবে কাজ করেন দীর্ঘদিন।পরে পরিবারের লোকজনের সম্মতিতে বিয়ের পীড়িতে বসেন।বিয়ের এক বছরের মাথায় মারপিট ও অত্যাচার করার অভিযোগ তুলে একতরফা তালাক দিয়ে স্ত্রী চলে যায়।সেই শোকে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন আসাদুল ইসলাম। পরে পরিবার লোকজন একাধিক বিয়ে দিলেও আসাদুলের সংসার টিকে নি।সুস্থ সবল মানুষটি দিনদিন বেকারগস্ত হয়ে পড়েন।বউ নেই,মাকে হারনোর প্রায় ৮ বছর।সংসারে আসাদুলের বাবা ছাড়া কেউ নাই।বৃদ্ধ বয়সে চোখের সামনে ছেলের পা শিকলে বেঁধে রাখার যন্ত্রণা থেকে মুক্তি চান আসাদুলের বাবা দেলাবর হোসেন।

আসাদুলের বাবা দেলাবর হোসেনের সাথে কথা হলে তিনি বলেন,ছেলেটা আগে ভালো ছিল। বউ ডিভোর্স দিয়ে চলে যাওয়া সে সইতে পারে নাই।সেই থেকে পাগলের মত আচরণ শুরু করেন আসাদুল।কেউ শাষন করলে তাকে মারতে যেত।আমাকেও একদিন মারতে এসেছিল।উপায় না পেয়ে দু’ পায়ে শিকল পড়িয়ে রাখেছি।তিনি আরো বলেন,আমরা গরীব মানুষ চিকিৎসা করার মত সম্বল নাই।সুষ্ঠু চিকিৎসা করতে পারলে ছেলেটা হয়তো স্বাভাবিক জীবন ফিরে আসতে পারে।অন্যদিকে মোঃ হাবিবুর রহমান (১৫) একই উপজেলার ধামশ্রেনি ইউনিয়নের পোদ্দার পাড়া গ্রামের দিনমজুর আবুদ্দির ছেলে।সেও শিকল বন্দী হয়ে আছেন প্রায় ৮ বছর।হাবিবুর জন্মের পর থেকে মানসিক প্রতিবন্ধি।জন্মের পর মা ক্যান্সার আক্রান্ত হয়ে মারা যান।ছেলেকে দেখাশোনা করার মত লোক না থাকায় দ্বিতীয় বিয়ে করেন তিনি। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাস তার ঘরে আরো একটি প্রতিবন্দী শিশুর জন্ম হয়।সংসারে অভাব অনটনের কারনে সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করতে না পারায় সরকার ও বিত্তবানদের সহযোগিতা কামনা করছেন হাবিবুর রহমানের বাবা।হাবিবুর রহমানের বাবা মোঃ আবদ্দি জানান,ছোট বেলা থেকে হাবিবুর এমন।ওর মা ক্যান্সার আক্রান্ত হয়ে মারা যায়।ওর সৎ মা হাবিবুরের দেখাশোনা করেন।৮ বছর ধরে হাবিবুরকে শিকল দিয়ে পা বেঁধে রাখছি।শিকল পড়া না থাকালে বিদ্যুৎতের খুঁটিতে উঠে,মন যেদিকে চলে যায়।বেশ কয়েকবার সে হারিয়ে গেছে। আমি গরীব মানুষ। দিনমজুরি করে সংসার চলে।শিকল না পড়ে ছেড়ে দিলে সে তো হারিয়ে যাবে তখন ছেলেটাকে কোথায় খুঁজবো।তিনি আরো বলেন, আমার টাকা পয়সা নাই যে ওকে ভালো চিকিৎসা করাবো।আল্লাহ যতদিন এভাবে রাখবে ততদিন এভাবে শিকল পড়িয়ে রাখবো।হাজারো হোক মা মরা ছেলেটাকে আর হারাতে চাই না।সরকার যদি উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করতো তাহলে হয়তো আমার ছেলেটা ভালো হত।হাবিবুরের প্রতিবেশী মোঃ নায়েব আলী বলেন,হাবিবুরের বাবা দিনমজুর।ঠিকমত দু্বেলা ভাত খেতে পারে না ছেলের চিকিৎসা করাবে কিভাবে। আমার বিশ্বাস হাবিবুরকে ভালো চিকিৎসা করাতে পারলে সে ভালো হয়ে উঠত।আসাদুলের প্রতিবেশী রুবেল মিয়া বলেন,আমি দেখেছি আসাদুল ইসলাম বউ পাগল ছিল। বউ তাকে ছেড়ে যাওয়ার কারনে সে মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে পড়েন।পরে আরো দুটো বিয়ে দিয়েও সে সংসার টিকে নাই।তার সঠিক চিকিৎসা করা গেলে হয়তো ভালো হয়ে যেত।

এ বিষয়ে উলিপুর উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা লুৎফর রহমান বলেন,হাবিবুর ও আসাদুল ইসলাম দু’ জনেই প্রতিবন্ধি ভাতার আওতাভুক্ত করা হয়েছে।তবে তাদের চিকিৎসার টাকার বিষয়ে সহযোগীতা করা সময় সাপেক্ষে ব্যাপার।কুড়িগ্রাম সিভিল সার্জন কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ মঞ্জুর -এ-মুর্শেদ বলেন, এসব রোগীদের শিকলে বেঁধে রাখা কোনো সমাধান নয়। তাদেরকে মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। রোগী কোন পর্যায়ে আছে সেটি পর্যবেক্ষণ করে চিকিৎসা করালে অনেক সময় সুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে বলে জানান তিনি।কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল আরীফ বলেন, মানসিক ভারসাম্যহীন ওই ব্যাক্তি দুজনের সম্পর্কে আমার জানা ছিল না।আমি ওই দুই ব্যাক্তির খোঁজ নিতে স্থানীয় প্রতিনিধি ও সমাজসেবা অফিসার পাঠিয়ে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন হবে।

AH/ Daily Bogra Times

আরো খবর
dbt
© All rights reserved by Daily Bogra Times  © 2023
Theme Customized BY LatestNews