কুড়িগ্রামে বাড়ছে নদ-নদীর পানি, বন্যার শঙ্কা
কুড়িগ্রাম প্রতিনিধিঃ উজানের পাহাড়ি ঢলে ও ভারী বৃষ্টিতে ধরলা, তিস্তা, কালজানী, ব্রহ্মপুত্রসহ কুড়িগ্রামের ১৬টি নদ-নদীর পানি আবারও বাড়তে শুরু করেছে। পানি বৃদ্ধির কারণে নদী তীরবর্তী শতাধিক চরে প্লাবিত হয়েছে। সৃষ্টি হয়েছে জলাবদ্ধতা। এতে নতুন করে আবারও বন্যার শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
চর যাত্রাপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা আলম মিয়া বলেন, আমার বাড়ির সামনে ৩ দিন থেকে পানি বাড়ছে। ব্রহ্মপুত্র নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় সামনের অনেকটা অংশ ভেঙে গেছে।
পোড়ার চরের বাসিন্দা মো.আমিনুল বলেন,’আজ সকাল থাকি ব্রহ্মপুত্র পানি বেড়ে আমাদের উঠোনে উঠেছে। চলা-ফেরার খুব কষ্ট হইছে।’
শনিবার কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) এর বিকেল ৩টার দিকে দেওয়া তথ্যমতে, গত ২৪ ঘণ্টায় ব্রহ্মপুত্র নদের পানি নুন খাওয়া পয়েন্টে ১৩ সে.মি. বেড়ে বিপৎসীমার ৮৯ সে.মি, চিলমারী পয়েন্টে ৫ সে.মি বেড়ে বিপৎসীমার ৭৭ সে.মি, ধরলা নদীর পানি সেতু পয়েন্টে ৫ সে.মি বেড়ে বিপৎসীমার ১১১ সে.মি, তিস্তার পানি কাউনিয়া পয়েন্টে ১ সে.মি. বেড়ে বিপৎসীমার ২৬ সে.মি. নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)’র নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, কুড়িগ্রামের নদ-নদীর পানি ধীরগতিতে বৃদ্ধি পাচ্ছে। আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে এসব নদীর পানি বিপৎসীমার খুব কাছাকাছি অবস্থান করতে পারে। তবে বড় ধরনের বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ার কোন সম্ভাবনা নেই।’
এদিকে জেলায় গত কয়েকদিন ধরে অব্যাহত বৃষ্টিপাতের কারণে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। সব থেকে বেশি বিপাকে পড়েছেন শ্রমজীবী মানুষেরা।
শহরের পুরাতন জাহাজ ঘর এলাকায় মাছ বিক্রি করতে আসা সুধাংশু দাস বলেন, ‘আজ সকাল থেকে কখনো রোদ, আবার বৃষ্টি এমন করি চলছে। এভাবে ভিজেই সাইকেলে চেপে মাছ বিক্রি করতেছি।’
অটোরিকশা চালক আবুল মিযা বলেন,’কি করবো পেটে খায়। বৃষ্টিত ভিজি যাত্রী উব্যা(বহন) নাগে। বৃষ্টির কারণে সকাল থাকি ৭ টা মানুষক নিছি, কামাই নাই।’
জেলার রাজারহাট কৃষি আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের দেওয়া তথ্যমতে, জেলায় গত ২৪ ঘণ্টায় ৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় মাঝারি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।’