পাবিপ্রবি কর্মকর্তাদের অবস্থান, দুই ঘণ্টা পরই প্রত্যাহার ।
মাসুদ রানা ,পাবনা প্রতিনিধিঃ পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পাবিপ্রবি) আপগ্রেডেশন বোর্ডের সভা ঘিরে উত্তেজনা দেখা দেয়। ৯ দফা দাবি তুলে ধরে প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নেয় পাবিপ্রবি কর্মকর্তা সমিতির সদস্যরা।
তবে প্রশাসন বলছেন- আপগ্রেডেশন বোর্ডের সভা বাধাগ্রস্ত করতে তৃতীয় কোনো পক্ষের ইন্ধনে কর্মসূচি দেয় কর্মকর্তারা।
সোমবার (২৮ আগস্ট) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে আপগ্রেডেশন বোর্ডের সভা শুরু হয়। এর আগে সকাল ১০টা থেকে প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন শুরু করে সমিতির সদস্যরা।
সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উপাচার্য প্রশাসনিক ভবনে প্রবেশ করতে গেলে সমিতির সদস্যরা বাধা দেন। এতে উপাচার্যের সহযোগিদের সঙ্গে সমিতির সদস্যদের ধাক্কাধাক্কির ঘটনা ঘটে।
পরে বাধা উপেক্ষা করেই উপাচার্য কার্যালয়ে আপগ্রেডেশন বোর্ডের সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভা শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে অবস্থান কর্মসূচির ২ ঘণ্টার মাথায় কর্মসূচি সমাপ্ত করেন সমিতির সদস্যরা।
কর্মকর্তা সমিতির দাবি- নীতিমালা অনুযায়ী আপগ্রেডেশনের মেয়াদপুর্ন হওয়ায় কর্মকর্তাদের আপগ্রেডেশন দ্রুত সময়ের মধ্যে করতে হবে। এডহক ভিত্তিতে কর্মরত কর্মকর্তাদের স্থায়ী নিয়োগ দিতে হবে।
কর্মকর্তাদের নিয়োগবিধি সংশোধন করতে হবে। কর্মকর্তাদের শিক্ষাছুটি, লিয়েন ছুটিসহ যাবতীয় প্রাপ্য ছুটি হয়রানি ছাড়া প্রদান করতে হবে।
কর্মকর্তাদের সুযোগ-সুবিধা না পাওয়ার ক্ষেত্রে সরকারি বিধিমালা অনুসরণ করা হয় কিন্তু সুযোগ-সুবিধা পাওয়ার ক্ষেত্রে সরকারি বিধিমালা অনুসরণ করা হয় না, এমন দ্বৈতনীতি পরিহার করতে হবে।
প্রয়াত ডেপুটি চীপ মেডিকেল অফিসার ডা. মো. শহিদুল ইসলামের সহধর্মিনীর চাকরির ব্যবস্থা করতে হবে। ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি পরীক্ষার জন্য গঠিত উপ-কমিটির সকল কর্মকর্তাকে অন্তর্ভূক্ত করতে হবে এবং ৪% গৃহনির্মাণ ঋণ দ্রুত সময়ের মধ্যে বাস্তবায়ন করতে হবে।
নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক প্রশাসনের কয়েকটি সূত্র জানায়, দীর্ঘদিন ধরে এক পক্ষ পদোন্নতির জন্য চেষ্টা করছেন। তারা এবারও উপেক্ষিত। এজন্য আজকে তারা এই সভা বাধাগ্রস্ত করতে অবস্থান নিয়েছে। আজকে যারা প্রার্থী ছিলেন তারা তৃতীয় একটি পক্ষের প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে পরিচিত।
এবিষয়ে কর্মকর্তা সমিতির সাধারণ সম্পাদক সোহাগ হোসেন বলেন, ‘আমাদের দাবিগুলো দীর্ঘদিনের, কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আমাদের বারবার আশ্বাস দিয়েও বাস্তবায়ন করছে না।
এজন্য আমাদের আজকের কর্মসূচি। এখানে তৃতীয় কোনো পক্ষে ইন্ধন নেই। থাকলে তো আপগ্রেডেশন বোর্ডের সভা কক্ষে গিয়েই বাধা দিতাম। আর অবস্থান কর্মসূচি সাধারণত স্বল্পসময়ের জন্যই হয় এজন্য পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা দিয়ে অবস্থান শেষ করেছি।’
এব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক প্রক্টর আওয়াল কবির জয় বলেন, ‘সামগ্রিকভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো পদ যদি শূন্য থাকে তাহলে বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী নিয়োগ দিতে হবে।
এখানে পদোন্নতির কোনো সুযোগ নেই। আমার জানা মতো বিজ্ঞপ্তি দিয়ে কাউকে না পেয়ে দুইজনকে এরকম শূন্য পদে পদোন্নতি দিয়েছে। এজন্য কর্মকর্তা সমিতির সদস্যরা শূন্য পদে পদোন্নতির জন্য আজকের এই আন্দোলন করছেন বলে আমি জানতে পেরেছি।
তাদের দাবি- যদি একজন-দুজনকে দেয়া হয় তাহলে তাদেরকেও দেয়া হোক।
বিষয়টি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. হাফিজা খাতুনের বক্তব্য পাওয়া সম্ভব হয়নি। তবে প্রক্টর ড. কামাল হোসেন বলেন, ‘আমি নিজেও একজন প্রার্থী ছিলাম।
সকাল থেকেই আমি ওপরে (সভাকক্ষে) ছিলাম। বিষয়টি আমি পুরোপুরিভাবে জানি না। এখন তৃতীয় কোনো পক্ষের ইন্ধনে কর্মকর্তারা এই কর্মসূচি দিয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বা কেন তারা অবস্থান নিয়েছিল সেটা যাচাইয়ের চেষ্টা চলছে।