কাহালুর বিষ্ণুপুরে আতঙ্ক কাটেনি স্কুলে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি কম। কাহালু (বগুড়া) প্রতিনিধি: বগুড়া জেলার কাহালু উপজেলার মুরইল ইউনিয়নের বিষ্ণুপুর গ্রামবাসীর মাঝে এখনও অপহরণ আতঙ্ক কাটেনি। স্কুলে স্কুলে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি কম লক্ষ্য করা গেছে।
এদিকে, সোমবার ( ২ অক্টোম্বর) দুপুরে জেলা পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্ত্তী সরেজমিনে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। তিনি গ্রামের মানুষের সাথে কথা বলে তাদের স্বাভাবিকভাবে চলাফেরা করার আহ্বান জানিয়েছেন।
এছাড়া চাঁদার দাবিতে বাড়ি বাড়ি পোষ্টার লাগানো সন্দেহে কাহালু থানার পুলিশ ওই গ্রামের ৩ জনকে আটক করে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করছে।
উল্লেখ্য গত শনিবার গভীররাতে দুর্বৃত্তরা বিষ্ণুপুর গ্রামের প্রায় ৫০০ বাড়ির দেয়াল ও দরজায় সর্বনিম্ন ২’ আর সর্বোচ্চ ৫ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে কম্পিউটারে কম্পোজ করা ছোট আকৃতির পোষ্টার লাগায়। চলতি মাসের ৬ তারিখের মধ্যে এই টাকা পরিশোধ করতে বলা হয়।
অন্যথায় গ্রামবাসির শিশু সন্তানদের অপহরণ করা হবে। এ ঘটনায় পুরো গ্রামের মানুষের মধ্যে চরম আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। অনেকের প্রশ্ন, দু’একজনের পক্ষে প্রায় ৫শ’ বাড়ি পোস্টার লাগানো সম্ভব নয়। সংক্ষিপ্ত ও দ্রুততর সময়ের মধ্যেও এ ধরনের পোষ্টার লাগাতে কমপক্ষে ১৫ থেকে ২০ জন মানুষকে ভিন্ন ভিন্ন গ্রুপের মাধ্যমে কাজ করতে হয়েছে।
অনেকের মতে সামনে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে অরাজকতা সৃষ্টি করার উদেশ্যে এধরনের কাজ করা হয়েছে। আর এত স্বল্প সময়ের মধ্যে পোস্টার লাগানোর কাজ বাহির থেকে কোন মানুষ এসে করা সম্ভব নয়। বিষয়টির এখনও কোন কুলকিনারা হয়নি।
এদিকে, এ ঘটনার প্রেক্ষিতে আজ সোমবার (২ অক্টোম্বর) দুপুরে জেলা পুলিশ সুপার বিষ্ণুপুর গ্রাম পরিদর্শন করে গ্রামবাসীর উদ্দেশ্য বলেন, আমরা এ ঘটনাকে কোনভাবেই বিষয়টি হালকা করে দেখার কোন অবকাশ নেই। আর ব্যক্তিগত কোন দ্বন্দের কারনে এ কাজ করা হয়নি। কাজটি সম্পূর্ন পরিকল্পিতভাবে করে মানুষকে আতঙ্কিত করা হয়েছে।
যারা এ কাজের সাথে জড়িত তাদেরকে চিহিৃত করে আইনের আওতায় আনা হবে। পুলিশ সুপার বলেন, এ ঘটনায় আতঙ্ক বা ভয় পাবার কিছুই নেই। কারণ পুলিশ প্রশাসন সর্বদা আপনাদের সাথে রয়েছে। এলাকায় পর্যাপ্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। আগের মতই স্বাভাবিকভাবে জীবন যাপন করতে তিনি গ্রামবাসির প্রতি আহবান জানান।
এ সময় পুলিশ সুপারের সাথে ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) মো. আব্দুর রশিদ, কাহালু-নন্দীগ্রাম সার্কেলের দায়িত্ব প্রাপ্ত সহকারী পুলিশ সুপার মো. নাজরান রউফ,কাহালু থানা অফিসার ইনচার্জ মো. মাহমুদ হাসান, ইন্সপেক্টর তদন্ত এ.বি.এম ফিরোজ ওয়াহিদ,মুরইল ইউ’পি চেয়ারম্যান মো. আব্দুল জলিল।
অপরদিকে, অপহরণ আতঙ্কে বিষ্ণুপুর গ্রামের বেশিরভাগ শিক্ষার্থী আজ সোমবার ( ২ অক্টোম্বর) স্কুলে যায়নি। আর দু একজন শিক্ষার্থী যারা বিদ্যালয়ে গেলেও তাদের সাথে অভিভাবক ছিল।
এ বিষয়ে মুরইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শাইদুল ইসলামের সাথে কথা বলা হলে তিনি বলেন ওই গ্রামের কিছু শিক্ষার্থী বিদ্যালয়ে আসেনি বলে লক্ষ্য করা গেছে।