হরতাল-অবরোধে শিক্ষায় কিছুটা প্রভাব পড়ছে। শিক্ষাপঞ্জির ব্যাঘাত ঘটতে পারে । সাংবাদিক,শিক্ষক রবিউল মেয়েকে অনবরত সাহস দিচ্ছে।
আদমদীঘি (বগুড়া) প্রতিনিধি ঃ দেশব্যাপি অবরোধের মধ্যে বগুড়ার সান্তাহার জংসন ষ্টেশনে
সকালে আন্তঃনগর ট্রেন চিলাহাটিতে ঢাকা যাওয়ার জন্য আজ ( রবিবার) বসে আছে রুবাইয়াৎ
জেসমিন রোদেলা। সে ইডেন কলেজে ১ম বর্ষে পড়ে। ২ দিন পর তার অনার্স ফাইনাল পরীক্ষা। ট্রেন
বিল্বম্ব, পরীক্ষা হবে কিনা, অবারোধে সে পথে সমস্যায় পড়বে কি না- এই ত্রিমুখী চিন্তা নিয়ে
সে বই হাতে ষ্টেশনেই পড়ছে। ১০ মাস আগে সে অনার্সে ভর্তি হয়েছে। প্রায় বছর হয়ে
গেল, সে ১ম বর্ষই শেষ করতে পারেনি। একটা পরীক্ষা হরতালের কারনে পিছিয়ে গেছে। ১ মাস পর
সেটা হওয়ার কথা। সাংবাদিক,শিক্ষক রবিউল মেয়েকে অনবরত সাহস দিচ্ছে।
বগুড়া জেলার আদমদীঘি উপজেলায় সরজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, অবরোধের কারনে স্কুল-কলেজে
শিক্ষার্থী কমতে শুরু করেছে। যদিও ক্লাস শতভাগ হচ্ছে অনেক স্কুল-কলেজে। তবে অনেক অভিভাবক
সহিংসতার আশঙ্কায় তাঁর সন্তানকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাঠান নি। যদিও বগুড়ার আদমদীঘিতে
অবারোধ তেমন পালিত হয়নি। রিকসা,চার্যার, অটোভ্যান চলেছে। জীবনযাত্রাও ছিল স্বাভাবিক।
নাম না প্রকাশ করার স্বার্থে একজন অভিভাবক জানান, সন্তানের জীবন আগে। কয়েকটা দিন
আমার সন্তানকে বাড়িতে থাকতে বলেছি।
রুবাইয়াতের মত আরো অনেক শিক্ষার্থী, অভিভাকের কপালে দুঃচিন্তার ভাজ পড়েছে রাজনৈতিক
কর্মসূচির কারনে। হরতাল-অবরোধের কারনে এখনই পরীক্ষা পিছিয়ে যেতে শুরু হয়েছে। ভবিষ্যতে
আরো বড় কর্মসূচি আসলে হয়তো স্কুল-কলেজ বন্ধ হয়ে যাবে কিনা- এই কঠিন এক চিন্তা
পেয়ে বসেছে ব্যবসায়ী শফিক, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী জসিমের মধ্যে। তখন এলোমেলো হয়ে পড়তে পারে
শিক্ষাপঞ্জির উপর। এ ছাড়া উচ্চবিদ্যালয়গুলোর বার্ষিক পরীক্ষা ও মূল্যায়ন নভেম্বরের মধ্যে শেষ করতে
বলেছে শিক্ষা বিভাগ।
করোনাভাইরাসের কারনে ২০২০ সালের মার্চ থেকে দীর্ঘদিন স্কুল-কলেজ বন্ধ ছিল। সেই ক্ষতির রেশ
কাটতে না কাটতে আবার হরতাল-অবারোধ শুরু হয়েছে। বছরও প্রায় শেষ। সামনে জাতীয়
নির্বাচন। তা হলে কি আবারো শিক্ষাপঞ্জি এলামেলো হবে? এমন প্রশ্ন দেখা দিয়েছে অনেক
অভিভাবকের মধ্যে।
আদমদীঘি রহিম উদ্দীন ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ আব্দুর রহমান জানান, এই মুহুর্তে শিক্ষাপঞ্জি বা
শিক্ষাক্ষেত্রে বড় ধরনের ক্ষতির আশঙ্কা নেই। তবে হরতাল অব্যহত থাকলে তার প্রভাব পড়বে।
সান্তাহার নাগরিক কমিটির সভাপতি সাবেক অধ্যক্ষ মোসলেম উদ্দীন জানান, শিক্ষার্থীদের বড়
ক্ষতি হয়-এমন কর্মসূচি থেকে সরে আসতে হবে দলগুলিকে। তবে পরিস্থিতি খারাপের দিকে গেলে
অনলাইন ক্লাস,আ্যসাইনমেন্টের মতো ব্যবস্থা গ্রহন করতে হবে।