আদমদীঘি(বগুড়া) প্রতিনিধি ঃ আদমদীঘির নামকরণের ইতিহাস । পশ্চিম বগুড়ার নানা স্মৃতি বিরচিত ঐতিহাসিক স্থান বলে
পরিচিত আদমদীঘি। আবার আদমদীঘি মৎস ও শষ্য ভান্ডার হিসেবেও খ্যাত। বাবা আদম ( রহঃ) এর
ঐতিহাসিক মাজার ও বিশাল দিঘীর নামকরণে এই জনপদের নাম হয় আদমদীঘি বলে বিভিন্ন
সূত্রে জানা গেছে।
স্থানীয় ও বিভিন্ন ঐতিহাসিক দলিল সূত্রে জানা যায়, হযরত বাবা আদম( রহঃ) এর নানা স্মৃতি
জড়িয়ে আছে এই আদমদীঘি নামকরণে। প্রাচীনকালে আদমদীঘি অঞ্চল পৌন্ড্র রাজ্যের এক অংশ
ছিল। সে সময় এলাকার নাম ছিল ’খট্রাপরগনা’। বগুড়ার মহস্থান গড়ের সুলতান ইব্রাহিম বখলির (
রহঃ) এর মৃত্যুর পর ক্রমান্বয়ে এই অঞ্চলের ইসলাম প্রচার স্থিমিত হয়ে আসে। এ সময় বিক্রমপুরের
রাজা বল্লাল সেন এই এলাকা শাসন করতেন। সেই সময় মুসলমানদের উপর বল্লাল সেন নানা
অত্যাচার করতেন। এই সংবাদ পেয়ে খোরসান এলাকা থেকে আদম(রহঃ) তাঁর ১২ জন সহচর নিয়ে
এই স্থানে আস্তানা গড়ে তোলেন। সেই সময় ইসলাম ধর্ম প্রসার লাভ করেন।
সেই সময় এই অঞ্চলে পানির সংকট সৃষ্টি হলে আদম( রহঃ) নাটোরের বিখ্যাত রাণী ভবানীর দৃষ্টি
আকর্ষণ করেন। রানী ভবানী আদম( রহঃ) ওপর আস্থা স্থাপন ও শ্রদ্ধাস্বরুপ একটি দীর্ঘ খনন করে দেন
এবং এই সাধকের নামে নামকরণ করেন। এর কিছুদিন পর এই দিঘীর পাশে আরে একটি দীঘি
খনন করা হয়। এই দিঘী এবং বাবা আদম( রহঃ) উপর শ্রদ্ধাস্বরুপ মানুষ এই অঞ্চলের নামকরণ করেন
’আদমদীঘি’। এই দিঘীর উত্তর পাশের্^ একটি বিশাল প্রাচীন মাজার ও মসজিদ আছে। বাবা
আদম( রহঃ) বড়পীর হযরত আব্দুল কাদের জিলানী (রহঃ) এর শীষ্য ছিলেন। এই মাজারে প্রতি বছর বিশাল
ওয়াজ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। তাঁর আমলে এই অঞ্চলে শত শত মানুষ ইসলাম ধর্ম গ্রহন করেন।
এই আদমদীঘিতে বিখ্যাত সাধক ফকির মজনু শাহ ও ইংরেজদের মধ্যে ঐতিহাসিক রক্তদহ বিলে এক
যুদ্ধ হয়। সেই যুদ্ধে উভয় পক্ষে প্রচুর জীবন যায়,প্রচুর হতাহত হয়। সেই যুদ্ধ সংগঠিত হয় বিল
ভোমররা নামক নদীতে। পরে এই বিলের নাম হয় রক্তদহ বিল।