মোঃ সাকিবুল ইসলাম স্বাধীন, রাজশাহী: রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে তদন্ত ছাড়াই মামলা নিয়ে বিপাকে পুলিশ এই মর্মে সংবাদ প্রকাশ হয় ২০ শে ফেব্রুয়ারি। এই সংবাদ প্রকাশের পর অনেক সংবাদ কর্মীর ভিতরে অনেক প্রশ্ন জেগে উঠে। প্রশ্নের উত্তর বের করে আনার জন্য অনেক সংবাদকর্মী বেরিয়ে পড়ে তথ্য সংগ্রহ করতে এবং ঘটনার সত্যতা যাচাই করার জন্য।
সাংবাদিক বা সংবাদপত্র নিয়ে যারা কাজ করেন তাদের মূল কাজ হচ্ছে সত্য বা সঠিক ঘটনা গোড়া হতে শেষ পর্যন্ত তথ্য বের করে আনা এবং তা গণমাধ্যমে প্রকাশ করা। প্রতিটা দপ্তরে কিছু অসাধু মানুষ থাকে এমন কিছু ঘটনা সংবাদ কর্মীর মাঝেও দেখা গেছে। নিজ স্বার্থ পূরণের জন্য মিথ্যা বানোয়াট তথ্য পরিবেশন করা হয়েছে যার ভুক্তভোগী গোদাগাড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ আব্দুল মতিন ।
সংবাদ প্রকাশ হয়েছে যেখানে লিখা হয়েছে দিন রাত এক করে মাদকের বিরুদ্ধে সোচ্চার রাজশাহী জেলা পুলিশের গোয়েন্দা (ডিবি) শাখা, আর সেখানে নাকি বড় বাধা গোদাগাড়ী থানা পুলিশ। প্রশাসনের দুই গ্রুপের এমন শত্রুতার কথা যা হতবাক করেছে অনেককে আর এমন শত্রুতা যা খুবই হাস্যকর।
মূল ঘটনায় আসা যাক, ২৬ শে জানুয়ারিতে একটি ঘটনা ঘটে রাশিদুল ইসলাম ওরফে বাবুর সাথে যেটা ১৬ই ফেব্রুয়ারিতে অভিযোগ দাখিল করা হয় প্রেমতলী পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে । অভিযোগটি ১৪৩ /১৪১/৩২৫ /৩০৭/৩৭৯ /৩৮৬/ ৫০৬ ধারাই এজাহার ভুক্ত হয়। যার মামলা নাম্বার ২৭। এজাহারটি এই মর্মে ছিল যে বাবু গোদাগাড়ী উপজেলার বিদিরপুর মাদ্রাসা মোড় এলাকার রশিদ কানাই এর ছেলে।
বাবু গরু কেনার উদ্দেশ্যে যাচ্ছিলেন আষাড়িয়া দহচরে অর্থাৎ নদীর ওই পারে। হঠাৎ নদীর মাঝপথে তাকে মারধর করে ১ লক্ষ ১০ হাজার টাকা জোর জবস্তি কেড়ে নেয়, নৌকার মাঝি নুরুল ইসলাম ওরফে নুরু মাঝিসহ কয়েকজন। এরপর ১৮ ফেব্রুয়ারি মামলায় ২ নং আসামি নুরু মাঝি কে গ্রেফতার করে পুলিশ। এই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ছিলেন ইন্সপেক্টর ওসমান গনি।
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে গোদাগাড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ আব্দুল মতিন এর সম্মান ক্ষুন্ন করার জন্য কিছু বানোয়াট মনগড়া তথ্য পরিবেশন করা হয়।
প্রকাশিত সংবাদটিতে অনেক প্রশ্ন উঠে এসেছে জনমনে। ঠিক তার পরই সকল প্রশ্নের সঠিক তথ্য বের করতে এবং রহস্যের জাল উন্মোচন করতে বেরিয়ে পড়ে মিডিয়াকর্মীরা।
প্রকাশিত সংবাদটিতে মামলার বাদী বাবু যে একাধিক মামলার আসামি। এই একাধিক মামলার আসামি বাবুর সকল মামলার বিবরণ দেয়া হয়েছে যা এই এজাহারের সাথে মূল্যহীন। অপরদিকে নৌকার মাঝি নুরুর কোন কথা তুলে ধরা হয়নি। এই নুরু হচ্ছে নাম মাত্র মাঝি। ভারত থেকে চোরাই ভাবে গরু বাংলাদেশে ঢুকানো এবং বিভিন্ন মাদক পারাপারের কাজ করে থাকে।
এলাকাবাসীর থেকে আর থানায় অনুসন্ধান করে জানা যায় যে এই নুরু মাঝি গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) সাথে কাজ করে এবং তাদের আটক কিত মাদকের কিছু অংশ ক্রয় করে ব্যবসা করে। নুরু মাঝির নামে থানায় পূর্বে ৪টি মাদক মামলা রয়েছে। তাহলে বুঝা যাচ্ছে বাদী বাবু ও আসামি নুরু টাকার নোটের এই পিঠ আর ওই পিঠ।
প্রশ্ন উঠেছে ঘটনার ২০ দিন পরে মামলা কেন এই প্রশ্নের উত্তর বের করতে গিয়ে জানা যায়, এই বাবুর সাথে আপোস করার জন্য প্রস্তাব দেয় নুরুমাঝি সহ তার লোকজন। আপোসের জন্য বাবুর বাসায় শুভ,সনি,সোহাগ সাথে আরো কয়েকজন আলোচনায় বসে। এখানে কথা হয় ৭ দিনের মধ্যে টাকা দিবে এই মর্মে আপোষ করে চলে যায়। ৭ দিন পার হয়ে যাওয়ার পরও টাকা পায়নি বরং ভয়-ভীতি দেখাতে শুরু করে বাবুর পরিবারকে। এভাবে ২০ দিন পর কোন পথ না দেখে বাধ্য হয়ে অভিযোগ করে বাবু।
আবার বলা হয়েছে, মামলার তদন্ত কর্মকর্তাকে বাদ দিয়ে ওসি আব্দুল মতিন ২০ শে ফেব্রুয়ারি কোর্টে হাজির হয়ে রিমান্ড আবেদন করে। এই বিষয়ে ওসি আব্দুল মতিন বলেন নুরু মাঝিকে ১৮ ফেব্রুয়ারি গ্রেফতার করে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়। ২০ শে ফেব্রুয়ারি তো নুরু মাঝির কোন শুনানি ছিল না আর আমি কেন রিমান্ড আবেদন করবো। এই মামলার দায়িত্বে যে ইন্সপেক্টর আছেন তিনি মামলার কার্যক্রম দেখবেন। ২০ শে ফেব্রুয়ারি ওসি আব্দুল মতিন এর নিজের দায়িত্বপ্রাপ্ত মামলার জন্য কোর্টে যান, যে মামলার জন্য কোর্টে যান সেই মামলার নাম্বার হচ্ছে ৪৫(১)/২০২৪ ।
আরো কিছু বানোয়াট তথ্য উঠে এসেছে, যে নুরু মাঝির ছোট ভাই নাঈম হোসেনকে ধরে ছেড়ে দেয় ফাঁড়ি পুলিশ। নাঈম নিজে বলে এমন কোন ঘটনাই ঘটেনি বা তাকে গ্রেফতার করাই হয়নি।
অবশেষে ওসি আব্দুল মতিন সংবাদ কর্মীদের বলেন , এমন মিথ্যা বানোয়াট তথ্য আমার নামে যে হতে পারে তা আমার কাছে কোনভাবেই বোধগম্য নয় এবং দুঃখ প্রকাশ করে