পাবনা প্রতিনিধিঃ- ক্ষতিপূরণের টাকার জন্য চাপ দিলে বন্ধুকে হত্যার সুযোগ খুঁজতে থাকেন সম্রাট। এরপর সুযোগ বুঝে একটি লিচু বাগানে ডেকে নিয়ে ছুরিকাঘাতে বন্ধু আজাদকে হত্যা করে।
পরে তার মরদেহ পাশের শিম গাছের শুকনা লতাপাতার নিচে ঢেকে রেখে ঘটনাটি লুকাতে চায় সম্রাট। গত ১১ মার্চ রাতে এমন হত্যাকাণ্ড ঘটেছে পাবনার দাপুনিয়া ইউনিয়নের ছয়ঘরিয়া গ্রামে।
ঘটনার দুদিন পর (১৩ মার্চ) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ওই লিচু বাগানে নিহত আজাদের মরদেহে দেখে স্থানীয়রা খবর দিলে মরদেহটি উদ্ধার করে পুলিশ। এরপর গত ১৬ মার্চ রাতে হত্যাকারী সম্রাটকে গ্রেফতার করা হয়।
রবিবার (১৭ মার্চ) সকালে পাবনা জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে দেয়া এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
নিহত আজাদ (২২) দাপুনিয়া ছয়ঘরিয়া গ্রামের আব্দুল হাকিমের ছেলে এবং গ্রেপ্তারকৃত আব্দুস সামাদ ওরফে সম্রাট (২৮) একই গ্রামের রবিউল ইসলামের ছেলে। তারা উভয়েই পেশায় রাজমিস্ত্রী ছিলেন।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আজাদ ও সম্রাট পরষ্পর ঘনিষ্ট বন্ধু এবং একসাথে রাজমিস্ত্রীর কাজ করতেন। মাসখানেক আগে আজাদের ব্যবহৃত মোটরসাইকেল নিয়ে বেড়াতে গিয়ে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
এতে মোটরসাইকেল মেরামত বাবদ দুই হাজার টাকা খরচ হয় আজাদের। তার মধ্যে এক হাজার টাকা দেন সম্রাট। বাকি এক হাজার টাকা চাওয়াকে কেন্দ্র করে দুই বন্ধুর মধ্যে মনোমালিন্যের সৃষ্টি হয়।
সেই থেকে অভিযুক্ত সম্রাট কিভাবে তার বন্ধু আজাদকে হত্যা করবে তার সুযোগ খুঁজতে থাকে। পরে গত ১১ মার্চ রাতে তাকে ডেকে নিয়ে ধারালো চাকু দিয়ে আজাদের গলায় ও চোখের নিচে আঘাত করলে তার মৃত্যু হয়।
এদিকে আজাদকে খুঁজাখুঁজির পর সন্ধান না পেয়ে তার বাবা আ: হাকিম বাদী হয়ে পাবনা সদর থানায় একটি নিখোঁজ ডায়েরী করেন। এরপর গত ১৩ মার্চ দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে নিখোঁজ আজাদের ক্ষত বিক্ষত মরদেহ দাপুনিয়া ইউনিয়নের ছয়ঘরিয়া গ্রামের মোশাররফ চেয়ারম্যান এর খামারের পাশে লিচু বাগানে পাওয়া যায়।
এ ঘটনায় নিহতের বাবা বাদি হয়ে একটি মামলা দায়ের করলে সদর থানা ও ডিবি পুলিশের যৌথ একটি টিম। হত্যাকারী আব্দুস সামাদ ওরফে সম্রাটকে ১৬ মার্চ দুপুরে নিজ এলাকা থেকে সম্রাটকে গ্রেপ্তার করা হয়।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়, হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত ধারালো চাকু ঘটনাস্থলের পাশে ধান ক্ষেতে ফেলে দেয় সম্রাট। আজাদের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন পুকুরে ফেলে দিয়ে তার গায়ে থাকা রক্তমাখা জ্যাকেট
এবং মোটরসাইকেলের ডিজিটাল নম্বর প্লেট সম্রাট তার শোবার ঘরে রেখে মোটরসাইকেল নিয়ে নাটোরের লালপুর উপজেলার মোহরকয়া গ্রামে জনৈক ফারুক শেখের বাড়িতে রেখে আসে।
এব্যাপারে পাবনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অর্থ ও প্রশাসন) মাসুদ আলম জানান, আসামির জবানবন্দি অনুযায়ী তাকে সাথে নিয়ে নিহতের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন, মোটর সাইকেল,
রক্তমাখা জ্যাকেট ও হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত চাকু জব্দ করা হয়। ১৬৪ ধারায় আদালতে জবানবন্দি দেবার পর তাকে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।