দিনাজপুর প্রতিনিধিঃ- বাজারে ভালো দাম থাকায় এবার দিনাজপুরের খানসামায় সাদা সোনা খ্যাত রসুন গতবছরের তুলনায় চাষ বেশি এবং ভালো ফলন হয়েছে। বাজারে রসুনের ব্যাপক চাহিদা ও দাম থাকায় ক্ষেতের রসুন চুরি হওয়ার আশংকায় রাত জেগে পাহারা দিচ্ছেন কৃষকরা।
কিন্তু চলতি মৌসুমে রাতে পাহারা দিতে গিয়ে এ পর্যন্ত খানসামা উপজেলায় ১০ জন শিয়ালের কামড়ে আহত হয়েছেন বলে জানা যায়। মনির জীবন নামে এক যুবক তার ফেসবুক পোস্টে এ তথ্য দিয়েছে।
খানসামা উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে ৬টি ইউনিয়নে রসুন চাষ হয়েছে ১৬২০ হেক্টর। যা গতবছরে ছিল ১৫০০ হেক্টর। রসুন চাষে লাভবান হওয়ায় এবার বৃদ্ধি পেয়েছে চাষ।
রাতে খানসামার গোয়ালডিহি, নলবাড়ী, হাসিমপুর ও কাচিনীয়া গ্রামে দেখা যায়, জমিতে পলিথিন দিয়ে অস্থায়ী ঘর তৈরি করে কৃষকরা সেখানে রাত্রিযাপন করছেন। কৃষকরা রাত জেগে টর্চ লাইটের আলোয় রসুন খেত পাহারা দিচ্ছেন। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে শিয়ালের উৎপাত হওয়ায় তারা আতঙ্কে আছে। তবে ঈদের আগেই রসুন উঠানো ও ঘরে তোলার কাজ শেষ হবে বলে কৃষকরা জানায়।
খানসামার গোয়ালডিহি জমির শাহ পাড়ার রসুন চাষী রিশাদ শাহ জানান, প্রতি বিঘা জমিতে রসুন চাষে বীজ, সার, সেচ, হাল ও পরিচর্যা বাবদ এই বছর খরচ হয় প্রায় ৯০ হাজার থেকে ১ লক্ষ টাকা পর্যন্ত। যদিও এবার বীজের দাম বেশী হওয়ায় খরচ বেড়েছে। আর প্রতি বিঘায় ফলন হয় ৫৫-৭০ মণ। প্রতি মণের বর্তমান বাজার মূল্য ৩০০০-৩৫০০ টাকা। অন্য আবাদের চেয়ে রসুন চাষ লাভবান বেশী বলে জানান তিনি।
গোয়ালডিহি গ্রামের রসুন আশরাফ আলী (৬০) বলেন, সময়ের সাথে রসুন চাষে খরচ ও শ্রম বেড়েছে। কিন্তু এত কষ্টে চাষ করেও চোরের চিন্তায় রাত জাগতে হচ্ছে। কেননা রসুন দামী ফসল তাই পাহারা দিচ্ছি।
খানসামা উপজেলা ভারপ্রাপ্ত কৃষি কর্মকর্তা হাবিবা আক্তার বলেন, আবহাওয়া ভালো হওয়ায় চলতি মৌসুমে ভালো ফলন ও বর্তমান বাজারে রসুনের দাম বেশি পাওয়ার মাধ্যমে কৃষকরা লাভবান হবেন। চুরির বিষয়টি স্থানীয় কৃষক ও কৃষি কর্মকর্তার মাধ্যমে জানতে পেরেছি। চুরি রোধে কৃষকরা দিনে ও রাতে পাহারা দিচ্ছে শুনেছি।
এবিষয়ে খানসামা থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোজাহারুল ইসলাম বলেন, পুলিশ, গ্রাম পুলিশ ও রাত্রিকালীন পাহারাদাররা চুরি রোধে নিয়মিত টহল দিচ্ছে। এদের সাথে জনগণের সচেতন ভূমিকা চুরি রোধ ও অপরাধ কমাতে অনেক কার্যকর হবে।