মোঃ সাকিবুল ইসলাম স্বাধীন, রাজশাহী: রাজশাহীর গোদাগাড়ী থানাধীন গ্রোগ্রাম ইউনিয়নের একটি নির্মাণাধীন ভবনের বাথরুম হতে খুন হওয়া অজ্ঞাতনামা তরুণীর লাশ উদ্ধারের ঘটনায় অভিযুক্ত ২ জনকে গ্রেফতার করেছে রাজশাহীর গোদাগাড়ী থানা পুলিশ। অভিযুক্তরা হলো শ্রী ফুলবাবু রবিদাস ওরফে বাবু (২২) ও আদিল আহমেদ পলক (১৯)। শ্রী ফুলবাবু রবিদাস ওরফে বাবু গাইবান্ধা জেলার সুন্দরগঞ্জ থানার শশিবাজার গ্রামের হরি লালের পুত্র এবং আদিল আহমেদ পলক রাজশাহী জেলার গোদাগাড়ী থানার লালপুকুর গ্রামের মো: আওয়াল হোসেনের পুত্র।
আজ ২৭ মার্চ ২০২৪ খ্রি. সকাল ০৯:০০ টায় রাজশাহীর গোদাগাড়ী থানাধীন গ্রোগ্রাম ইউনিয়নের মো: মুরসালিন পিয়াসের নির্মাণাধীন ভবনের দুইতলা ভবনের বাথরুমের ভিতরে একটি অজ্ঞাতনামা মেয়ের লাশ পড়ে থাকার সংবাদের ভিত্তিতে গোদাগাড়ী পুলিশ দ্রুততার সাথে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। গোদাগাড়ী থানা পুলিশ সিআইডি, রাজশাহী ত্রাইমসিন টিমের সহায়তায় লাশের পরিচয় সনাক্ত করে। প্রাথমিক তদন্তে জানা যায়, নিহতের নাম সন্ধ্যা রাণী (২০)। তিনি গাইবান্ধা জেলার সুন্দরগঞ্জ থানাধীন শীশা বাঁশপীর গ্রামের হরিলালের কণ্যা। ভিকটিমের সুরতহালে প্রাথমিকভাবে পেট ও গলায় ছুরিকাঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়।
রাজশাহী পুলিশ সুপার সো: সাইফুর রহমান, পিপিএম(বার)-এর নির্দেশে অজ্ঞাতনামা তরুণীর হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচন করতে গোদাগাড়ী সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার সোহেল রানা এবং গোদাগাড়ীর অফিসার ইনচার্জ মো: আব্দুল মতিন দ্রুততার সাথে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। প্রাথমিক তদন্তের অংশ হিসেবে ভিকটিমের একটি মোবাইল ফোন প্রাপ্তির মাধ্যমে খুনের ঘটনার সাথে জড়িত অভিযুক্তের রহস্য উন্মোচিত হয়। তা ছাড়া পুলিশ তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় ঘটনার সাথে জড়িত অভিযুক্তদের সনাক্ত করে এবং গ্রেফতার করতে সমর্থ হয়। এ ঘটনায় পুলিশ আদিল আহমেদ পলককে রাজশাহী মহানগরীর লক্ষ্মীপুর হতে এবং রবিদাসকে রাজশাহী মহানগরের কর্ণহার থানাধীন মোল্লাপাড়া হতে গ্রেফতার করে।
ঘটনাসূত্রে জানা যায়, ভিকটিম সন্ধ্যা রাণী রাজশাহী মহানগরের কর্ণহার থানাধীন তার সৎ ভাই শ্রী ফুলবাবু রবিদাস ওরফে বাবুর বাসায় থাকতো। পারিবারিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে সৎ ভাই ও ভাবীর সাথে ভিকটিমের ঝগড়া বিবাদ চলে আসছিলো। তাই ভিকটিমের সৎ ভাই ফুলবাবু রবিদাস বাবু সন্ধ্যাকে হত্যার পরিকল্পনা করে। এরই ধারাবাহিকতায় গত ২৬ মার্চ ২০২৪ খ্রি. দিবাগত রাত ০৯.০০ টার পরে ভিকটিমের সৎভাই রবিদাস তার বন্ধু আদিল আহমেদ পলকের সহযোগিতায় ভিকটিমকে ঘুমের ঔষধ খাইয়ে অচেতন করে ঘটনাস্থলে নিয়ে আসে এবং গোদাগাড়ী থানাধীন গ্রোগ্রামের নির্মাণাধীন ভবনের দুইতলায় নিয়ে ছুরিকাঘাত করে মৃত্যু নিশ্চিত করে লাশ বাথরুমে ফেলে চলে যায়।
হত্যাকাণ্ডের রহস্যের উন্মোচিত হওয়া সম্পর্কে রাজশাহীর পুলিশ সুপার বলেন, রাজশাহীর গোদাগাড়ী থানা পুলিশ অত্যন্ত পেশাদারিত্বের সাথে কাজ করে দ্রুততম সময়ের মধ্যে অজ্ঞাতনামা তরুণীর খুনিদের গ্রেফতার করতে সমর্থ হয়েছে। এ ঘটনার সাথে আরও কেউ জড়িত কিনা , তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
হত্যাকাণ্ডের এ ঘটনায় রাজশাহীর গোদাগাড়ী থানায় মামলা রুজুর বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন।