বছরের শুরুতেই এবার বেগুনের বাজার ছিল নাগালের বাইরে। সে সময় অনেকে কেজিতে বেগুন কিনতে না পেরে প্রতি পিস বেগুন ১০ টাকায় কিনতে দেখা গিয়েছিল। তবে, রমজানের মাঝামাঝি থেকে কমতে শুরু করে বেগুনের দাম। এ সময় অনেক কৃষক দাম না পেয়ে ক্ষেতের বেগুন গাছ কেটে ফেলেন। অবশ্য কৃষক বেগুনের দাম না পেলেও খুচরা বাজারে বেগুনের দাম খুব একটা কমছে না। ঠাকুরগাঁওয়ে যে বেগুন কৃষক বিক্রি করছে ২ থেকে ৩ টাকা কেজি দরে সেই বেগুন পাইকারিতে বিক্রি হচ্ছে ৭ থেকে ১০ টাকায়। আর খুচরা বাজারে তা বিক্রি হচ্ছে ২০ টাকা কেজিতে।
গতকাল শনিবার (৬ এপ্রিল) ঠাকুরগাঁও জেলার বিভিন্ন উপজেলা ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার সীমান্তবর্তী এলাকার কৃষক শেখ মো. আনিসুরের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, অনেক আশা করে বেগুন চাষ করেছিলাম কিন্তু বর্তমানে বেগুন বিক্রি করতে হচ্ছে মাত্র ২ থেকে ৩ টাকা কেজিতে। অনেক বেগুন ক্ষেতেই নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। লোকসানেই বেগুন বিক্রি করতে হচ্ছে।
একই এলাকার বাসিন্দা মো. ফারুক বলেন, এবার বেগুন চাষ করে আমাদের অনেক ক্ষতির মুখে পড়তে হয়েছে। বেগুন তুলতেই খরচ পড়ছে ২-৩ টাকা। সেখানে এ দামে বেগুন বিক্রি করতে হচ্ছে।
নড়াইল থেকে আসা বেগুনের পাইকার মানিক বলেন, বাজারে বেগুনের আমদানি অনেক বেশি হওয়ার ফলে দাম কমে গেছে। আমরা ২ থেকে ৩ টাকা কেজিতে বেগুন কিনে নড়াইলে ৭ থেকে ৮ টাকা কেজিতে বিক্রি করি। এর মধ্যে আমাদের পরিবহন খরচ আছে। তাই একটু দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।
কিন্তু খুচরা বাজারে গিয়ে দেখা যায় তার ঠিক উল্টো চিত্র। প্রতি কেজি বেগুন বিক্রি হচ্ছে ১৫ থেকে ২০ টাকা কেজিতে। খুচরা বিক্রেতা মো. বকুল বলেন, আমি আড়ত থেকে ৮ টাকা কেজিতে বেগুন কিনে খুচরায় ১৫ থেকে ২০ টাকায় বিক্রি করছি।
বাজারে বেগুন কিনতে আসা মো. লেমন বলেন, আমরা শুনেছি বেগুনের দাম কম কিন্তু বাজারে এখনো বেগুন ২০ টাকা কেজি। কেউ এগুলো তদারকি করছে না। তাই যে যার মতো দাম নিচ্ছে।
এ বিষয়ে কৃষি সম্প্রসারণ উপপরিচালক মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, ঠাকুরগাঁওয়ের মাটি সবজি চাষের জন্য উপযোগী। এ বছর ব্যাপক সবজি চাষ হয়েছে। বেগুন উৎপাদন খুব ভালো হয়েছে তবে, কৃষক ন্যায্য দাম পাচ্ছে না। আমরা কৃষি বিভাগ থেকে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের সহযোগিতা করার চেষ্টা করছি।