চালতা গাছ মাঝির আকারের চিরহরিৎ বৃক্ষ জাতীয় উদ্ভিদ। চালতার ফল খুব আদরণীয় নয়। এই ফল দিয়ে সাধারণত চাটনি ও আচার তৈরি হয়। গাছটি দেখতে সুন্দর বলে শোভাবর্ধক তরু হিসেবেও কখনো কখনো উদ্যানে লাগানো হয়ে থাকে।
চালতা গাছ উচ্চতায় ১৫ মিটার পর্যন্ত হতে পারে। গাছের গায়ে লালচে রঙের চকচকে বাকল থাকে। পাতার কিনারা খাঁজ কাটা, শিরা উঁচু সমান্তরাল। চালতার সাদা রঙের ফুল দেখতে সুন্দর; এটি সুগন্ধযুক্ত। ফুলের ব্যাস ১৫-১৮ সেন্টিমিটার। ফুলে ৫টি মোটা পাঁপড়ি বেষ্টিত কেন্দ্রে প্রচুর হলুদ পুংকেশর থাকে; বৃতিগুলো সেসব পাঁপড়িকে আঁকড়ে ঘিরে রাখে। বছরের মে-জুন মাসে ফুল ফোটার মৌসুম।
চালতার রয়েছে দারুণ সব ঔষধি গুণাবলী। চালতায় রয়েছে ক্যালসিয়াম, শর্করা, আমিষের মতো প্রয়োজনীয় উপাদান। এ ছাড়া আরো আছে বিটা ক্যারোটিন, ভিটামিন বি, ভিটামিন সি, থায়ামিন ও রিবোফ্লাবিন। তাই চালতা শরীরে যেমন রোগ প্রতিরোধের কাজ করে, তেমনি পুষ্টি পূরণেও রাখে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা।
চালতার ঔষুধি গুণাবলী
(১) চালতা ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, আয়রন, ভিটামিন ‘এ’, ‘বি’ ও ‘সি’-এর ভালো উৎস।
(২) চালতায় রয়েছে বিশেষ ধরনের কিছু অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা জরায়ু ও স্তন ক্যান্সার প্রতিরোধ করে।
(৩) প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ‘সি’ থাকায় এই ফল স্কার্ভি ও লিভারের রোগ-প্রতিরোধ করে।
(৪) চালতায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণে আঁশ যা বদহজম ও কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে।
(৫) চালতায় থাকা আয়রন রক্তের লোহিতকণিকার কার্যক্রমে সহায়তা করে। রক্তের সংবহন ঠিক রাখে।
(৬) রক্তের খারাপ কোলেস্টেরল ও ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়তা করে চালতা। এছাড়াও ঠান্ডা ও কাশির জন্য পাকা চালতার রস চিনি মিশিয়ে খেলে উপকার পাওয়া যায়।
(৭) কিডনির নানা রোগ-প্রতিরোধেও সহায়তা করে চালতা।
(৮) গলা ব্যথা, জ্বর বুকে কফ জমা কিংবা সর্দি প্রতিরোধে চালতার আছে এক অনন্য গুণ। চালতা গাছের ছাল গুঁড়া করে খেলে কফ ও সর্দি ভালো হয়।