গণতন্ত্র ফেরানোর আন্দোলন জোরদার করতে সবাইকে জেগে ওঠার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
বুধবার (২৯ মে) বিকালে জিয়াউর রহমানের ৪৩তম শাহাদতবার্ষিকী উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় গণতন্ত্র ফেরানোর আন্দোলনে নেতাকর্মীদের আত্মত্যাগের কথা উল্লেখ করে এই আহ্বান জানান তিনি।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এই যে আত্মত্যাগ, মায়ের অশ্রুধারা এটা কি বিফলে যাবে? আপনারা কি সেটা বিফলে যেতে দেবেন? এখন জেগে ওঠার সময় এসেছে। জেগে উঠবে সেই তরুণ-যুবক। আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে। সমস্ত ভয়-ভীতি সবকিছু তাচ্ছিল্য করে আমাদের দেশমাতৃকার ডাকে, বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করার লক্ষ্যে এবং তারেক রহমানের ডাকে আসুন আমরা সবাই বেরিয়ে পড়ি। আমরা এমন একটা প্রতিরোধ গড়ে তুলি যাতে সত্যিকার অর্থে একটা জনগণের রাষ্ট্র, গণতন্ত্রের রাষ্ট্র নির্মাণ করতে সক্ষম হই।’
তিনি বলেন, ‘আমি একটা কথাই বলতে চাই, আজকে যে আমাদের সংকট এই সংকট মহাসংকট। আমাদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে লড়াই করতে হবে।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এই যে তথাকথিত বিনাভোটে ইলেক্টেড এমপিকে বাজারের কিনতে পাওয়া গোশতের মতো টুকরা টুকরা করে কেটে নাকি মেরে ফেলে দিয়েছে। কোন অবস্থায় বাংলাদেশকে নিয়ে এসেছে তারা। যেখানে সাবেক পুলিশপ্রধান তার আজকে হাজার হাজার দুর্নীতির চিত্র পত্রপত্রিকায় বেরিয়ে আসছে। তাকে আপনি লালন করেছেন। একইভাবে সাবেক সেনাপ্রধান তাকে স্যাংশন দেওয়া হয়েছে একটা মাত্র কারণে, সে বাংলাদেশে লুট করেছে, চুরি করেছে এবং নির্বাচনে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই দায় কি শুধু ওদের? এই দায় এই সরকারের যারা আজকে জোর করে ক্ষমতা দখল করে বসে আছে।’
বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘এজন্য আমি বারবার বলছি, আপনাদের রিজাইন করা উচিত এই কারণে। তাহলে আজিজদের মতো কেউ তৈরি হবে না। শুধু তারাই দুর্নীতি করেননি। এমন অসংখ্য আজিজ আপনারা তৈরি করেছেন যারা লুট করে খাচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘নির্বাচন দেন না কেন। একটা নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে আমরা একটা সুষ্ঠু নির্বাচন চেয়েছি। আমরা কখনও বলিনি বিএনপিকে ক্ষমতায় বসিয়ে দাও। আমরা একাই নই, ৬৩টা বিরোধী দল। বাম-ডান সবাই একসঙ্গে সেই লড়াইটা লড়ছি, আমাদের অধিকার, ভোটের অধিকারের জন্য লড়ছি।’
‘সুষ্ঠু নির্বাচন দিন, জনগণ সিদ্ধান্ত নিক। কিন্তু তারা সেটা কোনো দিনই করবে না, তারা জানে নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে ১০ শতাংশ আসনও পাবে না।’
জিয়াউর রহমানকে রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে অভিহিত করে তার যুগান্তকারী কর্মকাণ্ডের কথা তুলে ধরেন বিএনপি মহাসচিব।
রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ৪৩তম শাহাদতবার্ষিকী উপলক্ষে বিএনপি এই আলোচনা সভার আয়োজন করে। লন্ডন থেকে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান স্কাইপেতে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে আলোচনা সভায় বক্তাদের বক্তব্য শুনেন।
দলের প্রচার সম্পাদক শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানির সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, ড. আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান; অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক মাহবুবউল্লাহ, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, আবদুল্লাহ আল নোমান, এজেডএম জাহিদ হোসেন, শামসুজ্জামান দুদু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আবদুস সালাম, অধ্যাপক মামুন আহমেদ প্রমুখ বক্তব্য দেন।
আলোচনা সভায় বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটি ও অঙ্গসংগঠনের কয়েক হাজার নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।