1. dailybogratimes@gmail.com : dailybogratimes. :
ওরা সিন্ডিকেট করে গরিব-মিসকিনদের হক মেরে খাচ্ছে? » Daily Bogra Times
Logo শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:৪১ অপরাহ্ন
সর্বশেষ :
হিলিতে কমেছে পেঁয়াজের দাম কেজি ৬০ টাকা রাণীনগরে মাদক ব্যবসায়ী আটক সুন্দরগঞ্জে ১শ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার ২ কারবারি গ্রেফতার বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের সংঘর্ষের ঘটনায় রাজশাহী মহানগর ছাত্রদলের সাংবাদিক সম্মেলন রাজশাহীতে বিচারের মীমাংসার সময় বিএনপি নেতাকে ছুরিকাঘাত আদানির সঙ্গে ২৫০ কোটি ডলারের চুক্তি বাতিল করল কেনিয়া আচরণবিধি ভঙ্গের দায়ে ৮ ক্রিকেটার ও একজন ক্লাব কর্মকর্তাকে নিষিদ্ধ সাড়ে ৫০০ ফ্রিজ করা একাউন্টে ১৪ হাজার ৫০০ কোটি টাকা প্রতিবেশী সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে শত্রুতা নয় : ডা. শফিকুর রহমান পাকিস্তানে যাত্রীবাহী গাড়িতে ভয়াবহ বন্দুক হামলা, নিহত বেড়ে ৪২ নৌকার সঙ্গে ভারতীয় সাবমেরিনের সংঘর্ষ, নিখোঁজ ২ বেনাপোল সীমান্ত থেকে ৮৯৫ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার এমন দেশ গড়তে চাই, যেখানে জনগণই হবে সব ক্ষমতার মালিক : ড. ইউনূস ভারত থেকে ৫৬ টাকা কেজিতে ৫০ হাজার টন চাল আমদানি করবে সরকার লিটারে ১৫ টাকা কমানো সম্ভব জ্বালানি তেলের দাম : সিপিডি

ওরা সিন্ডিকেট করে গরিব-মিসকিনদের হক মেরে খাচ্ছে?

নওগাঁ প্রতিনিধিঃ-
  • সোমবার, ১৭ জুন, ২০২৪
ওরা সিন্ডিকেট করে গরিব-মিসকিনদের হক মেরে খাচ্ছে?
print news

কোরবানি শেষে সরকার নির্ধারিত মূল্যে একটি ষাঁড় গরুর চামড়া বিক্রি করতে নওগাঁ শহরের মুক্তির মোড়সহ চামড়া গুদাম এলাকায় বার বার রিকশা নিয়ে ঘুরপাক খাচ্ছিলেন সদর উপজেলার তিলকপুর ইউনিয়নের তিলকপুর গ্রামের কোরবানি দাতা সাধ আহমেদ। প্রায় এক ঘণ্টা ঘুরে বেরিয়েও সরকার নির্ধারিত দামে চামড়া বিক্রি করতে পারেননি তিনি। একপর্যায়ে বাধ্য হয়ে মাত্র ৪০০ টাকায় স্থানীয় চামড়া ব্যবসায়ীর কাছে বিক্রি করেন।

সাধ আহমেদ আক্ষেপ করে বলেন, ৯১ হাজার টাকা দিয়ে একটি ষাঁড় গরু ৫ ভাগে কিনে কোরবানি দিয়েছি। এই চামড়া মাত্র ৪০০ টাকায় বিক্রি করতে হলো। চামড়ার টাকা গরিব মিসকিনদের হক। ওরা (চামড়া ব্যবসায়ী) সিন্ডিকেট করে কম দামে চামড়া কিনে গরিব-মিসকিনদের হক মেরে খাচ্ছে।

শুধু সাধ আহমেদের থেকেই যে চামড়া কম দামে কেনা হয়েছে। বিষয়টি এমন নয়। নওগাঁয় কম দামে চামড়া কেনার এ চিত্র শহরজুড়ে। ঈদের দিন দুপুর ১২টার পর থেকেই এ চিত্র দেখা গেছে। ট্যানারি মালিকদের কাছে বকেয়া টাকা পাওনা থাকায় জেলার বেশিরভাগ ব্যবসায়ী এবার সরাসরি চামড়া কিনছেন না। মূলত এই সুযোগকেই কাজে লাগিয়েছেন শহরের গুটি কয়েক চামড়া ব্যবসায়ী। তাদের সিন্ডিকেটের কারণে কোরবানি দাতারা কম দামে চামড়া বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন। অনেকে এসব ঝামেলা এড়াতে মাদরাসা ও এতিমখানায় চামড়া দান করেছেন।

শহরের হাট নওগাঁ মহল্লার বাসিন্দা এমরুল হাসান শাহীন বলেন, ১ লাখ ১৩ হাজার টাকায় ৫ ভাগে মাঝারি আকারের একটি ষাঁড় গরু কিনে আমরা কোরবানি দিয়েছি। কুরবানি শেষে মাংস কাটা-বাছাইয়ের পর দুপুর ১টার দিকে পার্শ্ববর্তী চামড়া গুদাম এলাকার কিছু ব্যবসায়ীরা এসে চামড়ার দাম বলছেন মাত্র সাড়ে ৫০০ টাকা। সরকার নির্ধারিত দামে কোনোভাবেই তারা চামড়া কিনতে চায় না। তাই তাদের চামড়া না দিয়ে মাদরাসায় দান করেছি।

শহরের পার নওগাঁ মহল্লার থেকে পুরাতন বাসস্ট্যান্ড এলাকায় চামড়া বিক্রি করতে আসা মৌসুমী ব্যবসায়ী রাজু আহম্মেদ বলেন, লাভের আশায় সকাল থেকে বিভিন্ন মহল্লা ঘুরে ২৫টি গরু এবং ১২টি ছাগলের চামড়া কিনেছি। সেই চামড়া কিনে বিক্রি করতে এসে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। ৩ ঘণ্টা যাবত ব্যবসায়ীদের দ্বারে দ্বারে ঘুরেছি। কেউই ভালো দাম দিতে চাইছে না। সকালেও ব্যবসায়ীরা বলেছিল ভালো দাম দেবে। অথচ শেষ মুহূর্তে এসে তারা কথা রাখল না। পুরোটাই একটি সিন্ডিকেটের হাতে। এখন হয়তো লোকসান দিয়েই চামড়াগুলো বিক্রি করতে হবে।

চামড়া গুদাম এলাকার স্থানীয় চামড়া ব্যবসায়ী সাহেব আলী বলেন, এ বছর মানভেদে প্রতি পিস গরুর চামড়া ৩০০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ এক হাজার টাকা দাম দিয়ে কেনা হচ্ছে। ছাগল, বরকি এবং ভেড়ার চামড়া কেউ আনলেও সেটা নেওয়া হচ্ছে না। কারণ এসব চামড়ার আড়ৎ বা ট্যানারি মালিকদের কারোরই চাহিদা নেই। এই চামড়া কিনলে বিক্রি করা কঠিন হয়ে পড়ে। তাই ওইসব চামড়া যাতে যত্রতত্র ফেলে দিয়ে নষ্ট করা না হয় সেদিকটি মাথায় রেখে কিছু কিছু ক্ষেত্রে নামমাত্র দামে ১০ টাকা পিস হিসেবে নেওয়া হচ্ছে। অনেকে ছাগলের চামড়া ফ্রি দিয়ে যাচ্ছেন। তবে ভালো মানের ছাগলের চামড়া সর্বোচ্চ ৫০ টাকায় কেনা হচ্ছে।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এ বছর ঢাকায় প্রতি বর্গফুট লবণযুক্ত গরুর চামড়ার দাম নির্ধারণ করেছে ৫৫ থেকে ৬০ টাকা। ঢাকার বাইরে লবণযুক্ত প্রতি বর্গফুট গরুর চামড়ার দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ৫০ থেকে ৫৫ টাকা। গত বছর এ দাম ছিল ৪৫ থেকে ৪৮ টাকার মধ্যেই। সেই হিসেবে এবছর ঢাকায় লবণযুক্ত প্রতি পিস গরুর চামড়ার সর্বনিম্ন দাম হবে ১ হাজার ২০০ টাকা এবং ঢাকার বাইরে সর্বনিম্ন দাম হবে ১ হাজার টাকা। এছাড়া এ বছর সারাদেশে প্রতি বর্গফুট লবণযুক্ত খাসির চামড়ার দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ২০ থেকে ২৫ টাকা। প্রতি বর্গফুট লবণযুক্ত বকরির চামড়ার দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ১৮ থেকে ২০ টাকা।

গত বছর প্রতি বর্গফুট খাসির চামড়ার দাম ছিল ১৮ থেকে ২০ টাকা এবং বকরির ১২ থেকে ১৪ টাকা।

অন্যদিকে বর্গফুট হিসেবে চামড়া কেনার কারণে বাজারে অস্থিরতা সৃষ্টি হয় জানিয়ে এ বছর পিস হিসেবে চামড়া কেনার সিদ্ধান্ত জানিয়েছে বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিটিএ)। এবার প্রতি পিস গরুর চামড়া ঢাকার ভেতরে ১ হাজার টাকা এবং ঢাকার বাইরে ১ হাজার ২০০ টাকা দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে সংগঠনটি। চামড়া লবণহীন হলে তা সাড়ে ৮০০ টাকা থেকে ৯০০ টাকা দাম পড়বে বলেও জানিয়েছে বিটিএ।

এরপরেও ব্যবসায়ীরা কেনো কম দামে চামড়া কিনছেন জানতে চাইলে নওগাঁ জেলা চামড়া ব্যবসায়ী গ্রুপের সাবেক সভাপতি শেখ আজাদ হোসেন বলেন, ট্যানারি মালিকরা সরকার নির্ধারিত দামে চামড়া কেনার কথা মুখে বললেও প্রকৃতপক্ষে আমরা লবণজাত চামড়া বিক্রি করতে গেলে বিভিন্নরকম ফন্দি আটে। চামড়ার নায্য দাম কখনোই আমাদের দেওয়া হয় না। তাদের (ট্যানারি মালিক) সিন্ডিকেটের কারণে ঈদে চামড়া কেনার পর আমাদের বিনিয়োগকৃত টাকা ওঠানোই কঠিন হয়ে পড়ে। তাই ইচ্ছে থাকলেও সরকার নির্ধারিত দামে চামড়া কেনা আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়। গরিব-মিসকিনদের হক আমার নয় যা ট্যানারি মালিকরা মেরে খাচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, দেশীয় চামড়া শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে ঋণ করে হলেও আমরা চামড়া কিনছি। ট্যানারিদের কাছে আমাদের পাওনা কোটি কোটি টাকা আটকে আছে। কাঁচা চামড়া কেনার নামে সরকারের কাছে থেকে প্রতি বছর যে টাকাগুলো ট্যানারি মালিকরা নেয় তার ছিটেফোঁটাও আমরা পাই না। পাওনা টাকা চাইতে গেলে সামান্য কিছু টাকা দিয়ে ট্যানারি মালিকরা আমাদের অপমান করে তাড়িয়ে দেয়। তাদের আবার চামড়া দিলে অর্ধেকেরও বেশি টাকা আটকে রাখে। এইভাবে হেনস্তা হতে হতে চামড়া ব্যবসায়ীরা বর্তমানে পুঁজি সংকটে পড়েছে। এই সংকট না কাটলে চামড়ার নায্যমূল্য কখনোই দেওয়া সম্ভব হবে না।

AH/ Daily Bogra Times

আরো খবর
dbt
© All rights reserved by Daily Bogra Times  © 2023
Theme Customized BY LatestNews