কোটা আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে বিএনপি। ইন্টারনেট সেবা পুরোপুরি চালু না হওয়ায় নীতিনির্ধারণী পর্ষদ জাতীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠক করতে পারছে না দলটি।
এর মধ্যেও প্রতিদিন ব্রিফিং কিংবা সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে দেশের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে দলীয় বক্তব্য উপস্থাপন করছেন তারা। তবে নীতিনির্ধারকদের সঙ্গে বৈঠক হওয়ার পরই বর্তমান পরিস্থিতিতে দলের করণীয় নির্ধারণ করবে দলটি।
বর্তমান পরিস্থিতিতে করণীয় হিসেবে বিএনপি কী চিন্তা করছে- এমন প্রশ্নে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘আমরা এখন পর্যন্ত স্থায়ী কমিটির বৈঠক করতে পারিনি। কমিটির বৈঠক হলে তাতে আমাদের চিন্তাভাবনা নিয়ে আলোচনা হবে।
কর্মসূচির সিদ্ধান্ত হলে তা জানানো হবে।’
গত ৯ জুলাই স্থায়ী কমিটির বৈঠকে দলের চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার মুক্তি ও ভারতের সঙ্গে সম্পাদিত চুক্তিসহ অন্তত পাঁচটি ইস্যুতে কর্মসূচি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় বিএনপি।
এর মধ্যে কয়েকটি কর্মসূচি সরকার পতনের যুগপৎ আন্দোলনের শরিক জোট ও দলগুলোর সঙ্গে পালন করার সিদ্ধান্ত ছিল দলটির। দলীয় জ্যেষ্ঠ নেতা ও সমমনা দলগুলোর সঙ্গে কথা বলার পরই কর্মসূচি ঘোষণা করার কথা ছিল।
এর মধ্যেই যুগপতের শরিক দলগুলোর সঙ্গে পরবর্তী কর্মসূচি নিয়ে সংলাপও শেষ করে বিএনপি।
তবে গত ১৫ জুলাই স্থায়ী কমিটির বৈঠকে কোটা আন্দোলন জোরদার হলে সরকারের মনোভাবসহ সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে পরবর্তী কর্মসূচি নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন দলীয় নীতিনির্ধারকরা।
এর মধ্যেই কোটা আন্দোলনে নিহতদের মাগফিরাত কামনায় ঢাকাসহ সারা দেশে গায়েবানা জানাজা কর্মসূচি দেয় বিএনপি। এ ছাড়া দলটি গত ১৯জুলাই রাজপথে জাতীয় ঐক্যসমাবেশ ও মিছিলের কর্মসূচি দিয়েছিল।
তবে পুলিশ সেদিন ঢাকায় সভা-সমাবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিলে ঘোষিত সমাবেশ আর হয়নি।
এর মধ্যে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে গোয়েন্দা পুলিশ অভিযান চালিয়ে বিস্ফোরক ককটেল ও লাঠিসোঠা উদ্ধারের কথা জানিয়ে কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে ক্রাইম সিনের অধিনে নেওয়া হয়।
এর মধ্যেই গ্রেপ্তার হন স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, কেন্দ্রীয় নেতা সাইয়েদুল আলম বাবুল, নিপুণ রায় চৌধুরীসহ কেন্দ্রীয় নেতারা।
এ বিষয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘যোগাযোগ ব্যবস্থা সরকার বন্ধ করে রাখায় আমরা বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছি। নেতাকর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হচ্ছে না। আমাদের অফিসে অভিযান চালিয়ে সবকিছু নিয়ে গেছে। ফলে আমরা সব কিছু এখনও শুরু করতে পারিনি।’
যুগপতের দলগুলো কী ভাবছে জানতে চাইলে গণতন্ত্র মঞ্চের অন্যতম নেতা ও বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, ‘জুলাই মাসের প্রথম দিকে বিএনপির সঙ্গে আমরা বৈঠক করেছি।
সেখানে কর্মসূচি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। বর্তমান পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে আবার আমরা বৈঠকে বসে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করব।’