1. editor@dailybogratimes.com : dailybogratimes. :
ওষুধের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধিতে উদ্বেগ ! » Daily Bogra Times বগুড়া টাইমস
Logo বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:০৪ অপরাহ্ন
সর্বশেষ :
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী  দেশপ্রেমিক দলের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সম্পাদক হলেন নওগাঁর হাবিবুর রহমান পিরোজপুরের ভাসমান পেয়ারা বাজারে ধস, চাষীরা ঋণগ্রস্ত ২৮ শতাংশ কমে গেছে বাংলাদেশে ভারতের রপ্তানি পরিবর্তন হচ্ছে জেলা-মেট্রোপলিটন পুলিশের ইউনিফর্ম-লোগো ফিফা র‌্যাঙ্কিংয়ে পয়েন্ট হারিয়েছে ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা বন্ধ করা হবে ৩ হাজার ৪৯১টি অবৈধ ইটভাটা সংবিধানকে এমনভাবে করব যাতে করে কোন মানুষ সুবিধা থেকে বঞ্চিত না হয় : ঠাকুরগাঁওয়ে মির্জা ফখরুল রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে করণীয় বিষয়ক সেমিনার রিমান্ডের নামে আসামিকে জামাই আদর করার অভিযোগ  মহাদেবপুরে স্বামীর লাঠির আঘাতে স্ত্রীর মৃত্যু মিরাজের লাশ না কাটতে মায়ের আকুতি বদলগাছীতে সাংবাদিকদের সঙ্গে নবাগত ওসি’র মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত দেবীনগরে গুম হওয়া আরিফুল ইসলামকে জিবীত ফিরে পেতে চায় স্ত্রী ও সন্তানেরা।  বাঁধনকে কৃতজ্ঞতা জানিয়ে যা বললেন পিনাকী ভট্টাচার্য দিল্লিতে মেয়ের সঙ্গে থাকছেন হাসিনা, দলবল নিয়ে ঘুরছেন পার্কে

ওষুধের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধিতে উদ্বেগ !

রিপোর্টার নামঃ
  • মঙ্গলবার, ২৩ মে, ২০২৩
  • ৮৩ বার পঠিত
print news

দেশে উৎপাদিত ওষুধের একটি বড় অংশের মূল্য নির্ধারণ ও নিয়ন্ত্রণে ঔষধ প্রশাসন অধিদফতরের এখতিয়ার না থাকায় যৌক্তিক মূল্যের বাধ্যবাধকতা আরোপ ও যথাযথ তদারকির অভাবে ওষুধের মূল্য সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ওষুধের কাঁচামাল, বিভিন্ন চিকিৎসা উপকরণ ও ওষুধ আমদানি কমে যাওয়ায় গত এক বছরে দেশে ওষুধের মূল্য প্রায় ৯০ শতাংশ বেড়ে গেছে। একই সঙ্গে গত এক বছরে চিকিৎসা সরঞ্জামের মূল্যও দ্বিগুণ থেকে চার গুণ বেড়েছে। অনতিবিলম্বে অতিপ্রয়োজনীয় ও জীবন রক্ষাকারী ওষুধসহ চিকিৎসা সরঞ্জামের মূল্য সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রেখে স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া অত্যন্ত জরুরি বলেও প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি মনিরুল ইসলাম সই করা প্রতিবেদনটি সম্প্রতি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সচিবের কাছে পাঠানো হয়। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ থেকে প্রতিবেদনটি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ, স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগ ও পুলিশের মহাপরিদর্শকের (আইজিপি) কাছে পাঠানো হয়েছে।

ঔষধ প্রশাসন অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক মো. আইয়ুব হোসেন বলেন, ‘সব ওষুধের দাম বৃদ্ধির সময় ঔষধ প্রশাসন অধিদফতর থেকে মূল্য সনদ নিতে হয়। কিন্তু অধিদফতর অল্প কিছু জেনেরিকের ওষুধের মূল্য নির্ধারণে নিজেদের পূর্ণ মতামত দিতে পারে। অন্য জেনেরিকের ওষুধগুলোর ক্ষেত্রে মূল্য নির্ধারণে অধিদফতরের আওতায় আনাটা আসলে সরকারের নীতি-নির্ধারণী পর্যায়ের বিষয়। এক্ষেত্রে অধিদফতরের লোকবলও বাড়াতে হবে। কারণ প্রতিটি ওষুধের মূল্য বৃদ্ধির ক্ষেত্রে একাধিক কমিটির মাধ্যমে অনুমোদন নিতে হবে।’

ঔষধ প্রশাসন অধিদফতরের ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘ওষুধের কাঁচামালের আমদানি মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় দাম বাড়ে। এছাড়া কোম্পানি ভেদেও দামের তারতম্য রয়েছে। আমরা অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধির ক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে ব্যবস্থাও নিয়ে থাকি।’

ঔষধ প্রশাসন অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, ১৯৯৪ সালে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এক আদেশে ঔষধ প্রশাসন অধিদফতরকে ১১৭টি জেনেরিকের অত্যাবশ্যকীয় ওষুধের মূল্য নির্ধারণের এখতিয়ার প্রদান করা হয়। তবে দেশে বর্তমানে প্রায় দেড় হাজার জেনেরিকের ২৭ হাজারেরও বেশি ওষুধ তৈরি হয়। ১১৭টি ছাড়া বাকি সকল উৎপাদিত ওষুধের মূল্য প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানগুলো নিজেরাই নির্ধারণ করে। তারা শুধু দামের বিষয়টি ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরকে অবহিত করে। ফলে দেশে উৎপাদিত ওষুধের একটি বৃহৎ অংশের মূল্য নির্ধারণ ও নিয়ন্ত্রণে ঔষধ প্রশাসন অধিদফতরের এখতিয়ার না থাকায় যৌক্তিক মূল্যের বাধ্যবাধকতা আরোপ ও যথাযথ তদারকির অভাবে ওষুধের মূল্য সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে।

গোয়েন্দা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ওষুধের মোড়কীকরণ সামগ্রী, পরিবহন ও বিপণন ব্যয়, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি তেলের মূল্য, ডলারের বিনিময়ে মূল্য ইত্যাদি বৃদ্ধির কারণে সার্বিকভাবে ওষুধের উৎপাদন ব্যয় বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে উৎপাদন ব্যয় বৃদ্ধির সাথে ওষুধের বর্তমান মূল্যবৃদ্ধি সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। ওষুধের এই অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধির কারণে দরিদ্র ও নিম্ন আয়ের জনগোষ্ঠীর চিকিৎসা গ্রহণ দুরূহ হয়ে পড়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, স্কয়ার ও বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের ওষুধের সবচেয়ে বেশি মূল্য বৃদ্ধি করা হয়েছে। এছাড়া এসকেএফ ফার্মাসিউটিক্যালসহ আরও কিছু কোম্পানির ওষুধেরর মূল্য যথেষ্ট বৃদ্ধি পেয়েছে। পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, অতিপ্রয়োজনীয় ও দৈনন্দিন চিকিৎসাসেবায় ব্যবহৃত হয় এমন ওষুধগুলোর মূল্য বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে।

প্রতিবেদনে ৪৪টি অতিপ্রয়োজনীয় ও দৈনন্দিন চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয় এমন ওষুধের জেনেরিকের নাম উল্লেখ করে আগের ও বর্তমান মূল্য তুলে ধরা হয়েছে। এতে দেখা গেছে, প্যারাসিটামল ৫০০ মিলিগ্রাম ট্যাবলেট আগে ৭০ পয়সা মূল্য ছিল, বর্তমানে তা এক টাকা ২০ পয়সা বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া প্যারাসিটামল ৫০০ মিলিগ্রাম ট্যাবলেট (র‌্যাপিড) আগে ৭০ পয়সা ছিল, বর্তমানে ১ টাকা ৩০ পয়সা, প্যারাসিটামল ৬৫০ মিলিগ্রাম ট্যাবলেট (এক্সআর) আগে ১ টাকা ৩১ পয়সা ও বর্তমানে দুই টাকা ২০ পয়সা, প্যারাসিটামল ৬৫০ মিলিগ্রাম ট্যাবলেট (এক্সআর) আগে ১ টাকা ৪ পয়সা ও বর্তমানে দুই টাকা ২৫ পয়সা, প্যারাসিটামল ৮০ মিলিগ্রাম ড্রপস ও ১৫ মিলিলিটার বোতল আগে ১২ টাকা ৮৮ পয়সা ও বর্তমানে ২০ টাকা, প্যারাসিটামল ৮০ মিলিগ্রাম ড্রাপস ও ৩০ মিলিলিটার বোতল আগে ১৮ টাকা ও বর্তমানে ৩০ টাকা, প্যারাসিটামল ১২০ মিলিগ্রাম/৫ মিলিলিটার সাসপেনশন/৬০ মিলিলিটার বোতল আগে ১৮ টাকা ও বর্তমানে ৩৫ টাকা, প্যারাসিটামল ১২০ মিলিগ্রাম/৫ মিলিলিটার সাসপেনশন/১০০ মিলিলিটার বোতল আগে ৩০ টাকা ৮০ পয়সা ও বর্তমানে ৫০ টাকা,

তাছাড়া, মেট্রোনিডাজল ২০০ মিলিগ্রাম ট্যাবলেট আগে ৬০ পয়সা ও বর্তমানে এক টাকা, মেট্রোনিডাজল ২৫০ মিলিগ্রাম ট্যাবলেট আগে ৯২ পয়সা ও বর্তমানে এক টাকা ২৫ পয়সা, মেট্রোনিডাজল ৪০০ মিলিগ্রাম ট্যাবলেট আগে এক টাকা ৩৭ পয়সা ও বর্তমানে এক টাকা ৭০ পয়সা, মেট্রোনিডাজল ৫০০ মিলিগ্রাম ট্যাবলেট আগে এক টাকা ৬৬ পয়সা ও বর্তমানে দুই টাকা, মেট্রোনিডাজল ২০০ মিলিগ্রাম/৫ মিলিলিটার সাসপেনশন/৬০ মিলিলিটার বোতল আগে ২৬ টাকা ও বর্তমানে ৩৫ টাকা, মেট্রোনিডাজল ২০০ মিলিগ্রাম/৫ মিলিলিটার সানপেনশন/১০০ মিলিলিটার বোতল আগে ৩৪ টাকা ৯২ পয়সা ও বর্তমানে ৪৫ টাকায়, মেট্রোনিডাজল ৫০০ মিলিগ্রাম/১০০ মিলিলিটার ইনফিউশন/১০০ মিলিলিটার বোতল আগে ৭৪ টাকা ৩৫ পয়সা ও বর্তমানে ৮৫ টাকায়, এমোক্সিসিলিন বিপি ১২৫ মিলিগ্রাম/১.২৫ মিলিলিটার সাসপেনশন/১৫ মিলিলিটার বোতল আগে ২৬ টাকা ৩৪ পয়সা ও বর্তমানে ২৫ টাকা, এমোক্সিসিলিন বিপি ১২৫ মিলিগ্রাম/৫ মিলিলিটার সাসপেনশন/১০০ মিলিলিটার বোতল আগে ৪১ টাকা ৪০ পয়সা ও বর্তমানে ৭০ টাকা, এমোক্সিসিলিন বিপি ২৫০ মিলিগ্রাম/৫ মিলিলিটার সাসপেনশন-জিএস/১৫ মিলিলিটার বোতল আগে ৬৭ টাকা ৯৪ পয়সা ও বর্তমানে ১০০ টাকা, এমোক্সিসিলিন বিপি ২৫০ মিলিগ্রাম ক্যাপসুল আগে ৩ টাকা ১৫ পয়সা ও বর্তমানে ৪ টাকা, এমোক্সিসিলিন বিপি ৫০০ মিলিগ্রাম ক্যাপসুল আগে ৫ টাকা ৯০ পয়সা ও বর্তমানে ৭ টাকা ৪ পয়সা, এমোক্সিসিলিন বিপি ৫০০ মিলিগ্রাম ইনজেকশন আগে ২৪ টাকা ২০ পয়সা ও বর্তমানে ৫৫ টাকা হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে আন্তর্জাতিক বাজারে সব ধরণের পণ্যের মূল্য বেড়েছে। পৃথিবীর অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশের অর্থনীতিতে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাব পড়েছে। দেশের ২১৩টি ফার্মাসিউটিক্যাল প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন দেশ থেকে কাঁচামাল আমদানি করে থাকে। সারা বিশ্বে ওষুধের কাঁচামাল মূল্য বৃদ্ধি পাওয়া ও পরিবহন ব্যয় বেড়ে যাওয়ার পাশাপাশি দেশের ওষুধ প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানগুলোর অস্বাভাবিক মুনাফা লাভের উদ্দেশ্যে ওষুধের অযৌক্তিক মূল্য বৃদ্ধির প্রবণতা দেখা যাচ্ছে।

এনাম হক / ডেইলি বগুড়া টাইমস

আরো খবর
© All rights reserved by Daily Bogra Times  © 2023
Theme Customized BY LatestNews