আদমদীঘি (বগুড়া) প্রতিনিধি ঃ প্রাচীন রেলওয়ে জংসন ষ্টেশনের কোল ঘেসে গড়ে উঠেছে
সান্তাহার শহর। এই উপজেলার উন্নয়নের দিক থেকে সান্তাহার শহর বরাবরই ছিল পিছিয়ে।
কিন্তু বর্তমান সরকার প্রধান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পিছিয়ে থাকা এই উপজেলা ও
সান্তাহারকে দিয়েছেন উন্নয়নের ছোঁয়া। তিনি এই জনপদকে তুলে দিয়েছেন উন্নয়নের
মহাসড়কে।
বিদ্যুৎ ব্যবস্থা ঃ বগুড়া জেলার আদমদীঘি উপজেলার সান্তাহার পৌর শহরের সাহেব পাড়ায়
দীর্ঘদিনের রেলওয়ের পতিত জমিতে প্রায় সোয়া ৩শ কোটি টাকায় ব্যয়ে ৫০ মেগাওয়াট
উৎপাদন ক্ষমতা সম্পন্ন পিকিং পাওয়ার প্লান্ট (জরুরী ভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র) স্থাপিত
হয়েছে এবং সম্পতি সান্তাহার ও উপজেলার নশরতপুরে প্রায় ৩০ কোটি টাকা ব্যায়ে
বিদ্যুতের দুটি উপকেন্দ্র নির্মাণ এবং ডজন খানেক ফিডার লাইন নির্মাণ করা হয়েছে।
এর প্রেক্ষিতে বিদ্যুত বিক্রয়-বিতরণ এবং সরবরাহ ব্যবস্থা মজবুত অবস্থানে পৌঁছে গেছে।
আদমদীঘি উপজেলায় শুধু পিডিবির গ্রাহক সংখ্যা বর্তমানে ৪২ হাজার ছাড়িয়েছে।
প্রায় চার বছ পূর্বে পিডিবি এবং আরইবি কর্তৃপক্ষ এই উপজেলাকে শত ভাগ বিদ্যুৎ
সুবিধা ভোগ করায় তালিকায় স্থান দিয়েছেন।
প্রায় সাড়ে তিনশ টাকা ব্যয়ে নির্মিত সান্তাহারের এই বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের নকশা
তৈরিসহ নির্মাণ কাজ করেছে গনচীনের ’ডং ফাং ইলেকট্রিক ইন্টারন্যাশনাল
কর্পোরেশন’ নামের একটি প্রতিষ্ঠান।বাংলাদেশে তাদের হয়ে কাজটি করেছে ঠিকাদারি
প্রতিষ্ঠান ’মেসাস বানরিকা ইন কর্পোরেশন’। এই প্রতিষ্ঠানটির সূত্রে জানা গেছে,
প্রতিষ্ঠানটি ২০১০ সালের ৩১ ডিসেম্বর বাংলাদেশের বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের সঙ্গে চুক্তি
করে। কাজ শুরু করে ২০১১ সালের ৩১ জানুয়ারী।
এই পিকিং পাওয়ার প্লান্ট প্রকল্পে কর্মরত নির্বাহী প্রকৌশলী ফরহাদ হোসেন দৈনিক ভোরের
দর্পণকে জানান, রাজশাহীর
কাটাখালীসহ দেশের অনান্য কেন্দ্রের চেয়ে সান্তাহার কেন্দ্রটির কাজ অনেক দ্রুত হওয়ায়
বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয় সন্তোষ প্রকাশ করে
জানা গেছে, সান্তাহারের পিকিং প্লান্টটি ফার্নেস অয়েল দ্বারা পরিচালিত। এই কেন্দ্রটির
উৎপাদিত বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রীডের সাথে যুক্ত হয়েছে।
আদমদীঘি উপজেলা আ.লীগের সাধারন সম্পাদক শেখ কুদরাত-ই-এলাহি কাজল বলেন,
সান্তাহারের এই কেন্দ্রটি স্থাপনে ঐ এলাকার বিদ্যুৎ ব্যবস্থা,রান্তাঘাট উন্নয়ন হয়েছে।
অনেকের কর্মস্থল হয়েছে। সঙ্গে সঙ্গে বর্তমান সরকারের উন্নয়ন সাফল্য দৃশ্যমান হয়েছে।
নেসকোর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রোকুজ্জামান উল্লেখিত তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করে
বলেছেন বর্তমান আদমদীঘি উপজেলায় বিদ্যুৎ ও সোলারের আলোতে গ্রাম- শহর বর্তমানে
একাকারপ্রায়। বিদ্যুতের লোড শেডিং এই উপজেলায় নাই বললেই চলে। বর্তমান শতভাগ
বিদ্যুতায়িত উপজেলা হিসেবে আদমদীঘিকে ঘোষনা করা হয়েছে।
মোঃ রবিউল ইসলাম (রবীন)
আদমদীঘি (বগুড়া) প্রতিনিধি
মোবাইল ঃ ০১৭২-৫০৪৫১০৫
তারিখ ঃ ৩১.৭.২৪আদমদীঘিতে শ্রাবণেও বৃষ্টি নেই, শুকিয়ে কাঠ আমন
ক্ষেত।খরচ বাড়বে
আদমদীঘি (বগুড়া) প্রতিনিধি ঃ বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার কৃষকেরা আমন আবাদ নিয়ে
বিপাকে পড়েছে। বৃষ্টি না হওয়ায় জমি তৈরি ও চারা লাগাতে পারছেন না তারা। এ ছাড়া পাট
জাগ দেওয়া নিয়েও ভোগান্তির শেষ নেই তাদের। পর্যপ্ত পানি না থাকায় লাঙল হাল চাষ দিতে
পারছেন না কৃষকেরা। বাধ্য হয়ে উপজেলার কোন কোন অঞ্চলে গভীর নলকুপ চালু করে পানি সেচ
দিয়ে হালচাষ করা হচ্ছে।
বাংলা দিনপঞ্জির হিসাবে শ্রাবণ মাসের দুই সপ্তাহ চলে যাচ্ছে। আষাঢ়-শ্রাবণ দুই মাস
বর্ষকাল। কিন্তু এই ভরা বর্ষাতেও স্বাভাবিক বৃষ্টির দেখা নেই আদমদীঘি উপজেলায়। এতে উপজেলার
কৃষকেরা বিপাকে পড়েছেন আমন আবাদ নিয়ে। খাল-বিলের পানি শুকিয়ে যাওয়ায় পাট জাগ
দেওয়া নিয়েও সমস্যায় আছেন তারা। এ অবস্থায় উপজেলার কোন কোন স্থানের কৃষকেরা প্রতি
শতাংশ ৩০ টাকা হারে খরচ করে জমিতে পানি দিচ্ছেন তারা।
আজ ( বৃহস্পতিবার) সরজমিনে উপজেলার কয়েকটি স্থানে গিয়ে দেখা যায়, বৃষ্টির অভাবে অনেক
জমি শুকয়ে কাঠ হয়ে গেছে। যেসব জমিতে চারা রোপণ করেছেন,সেগুলির পানি শুকিয়ে মাটি
ফেটে কাঠ হয়ে গেছে। কোন কোন এলাকায় নিচু অঞ্চলে কুষকেরা ধান রোপণ করছেন। উচু
অঞ্চলের প্রায় জমি বৃষ্টি না হওয়ায় জমি ফেটে গেছে। বাধ্য হয়ে অনেক কৃষক ক্ষেতে সেচ
দিচ্ছেন শ্যলো যন্ত্র বা বৈদুতিক মোটর দিয়ে।
উপজেলার নশরৎপুর ইউনিয়নের কৃষক রব্বানি বলেন, আমি ৩ বিঘা জমিতে আমন ধান রোপণ
করেছি। কিন্তু একটানা খরার কারণে বড় বিপাকে পড়েছি। সেচযন্ত্র দিয়ে জমিতে পানি দিতে
হচ্ছে। এতে খরচ বেশি পড়ে যাবে। এরপরও জমি দ্রুত ফেটে যাচ্ছে। বর্ষা মৌসুসেও বৃষ্টির দেখা
নেই। প্রচন্ড রোদে লালচে হয়ে যাচ্ছে ।
কৃষি বিভাগের হিসেবে ১৫ জুলাই রোপণ মৌসুম শেষ হয়েছে। এই সময়ে ১২ হাজার ১০০
হেক্টর জমিতে আমন আবাদ রোপাণ শেষ হয়েছে বলে জানা গেছে।মূলত বর্ষা মৌসুমে আমনের
আবাদ হয়। তবে এবার বৃষ্টি কম। রোপণ মৌসুমের আগে আমনের বীজতলা প্রস্তত করতে হয়।
বৃষ্টির পানিতে সাধারনত কৃষকেরা আমন আবাদ রোপণ করেন।সাধারনত চারার বয়স ২৫-৩০ দিন
হলে তা জমিতে রোপণ করতে হয়।কিন্তু অনেক কৃষকের চারার বয়স দেড় মাস পার হয়েছে, বৃষ্টির
অভাবে তা রোপণ করা যাচ্ছে না।
আদমদীঘি উপজেলা কৃষি অফিসার মিঠু চন্দ্র অধিকারী জানান, এ অবস্থায় কৃষকদের সম্পূরক
সেচ চালিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। এতে বাড়তি খরচ হলেও উৎপাদনের ওপর খুব একটা
প্রভাব ফেলবে না। আদমদীঘি উপজেলায় এবার ১২ হাজার ১০০ হেক্টর জমিতে রোপা আমন ধান
চাষের লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। ইতমধ্যে ৩হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে আমন আবাদ রোপণ করা
হয়েছে।