মোঃ সাকিবুল ইসলাম স্বাধীন, রাজশাহী: দেশের পরিস্থিতি খারাপের দিকে যাচ্ছে বৃদ্ধি পাচ্ছে দ্রব্যমূল্যের দাম। ভোক্তা অধিকার কত দিকে দৌড়াবে এখনও কেন নীরব কৃষি সম্প্রসারণ অধিপ্তর, প্রাণীসম্পদ বিভাগ ও মৎস্য বিভাগ । এই সিন্ডিকেটের ভাঙতে কি কি পদক্ষেপ নিয়েছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিপ্তর, প্রাণীসম্পদ বিভাগ ও মৎস্য বিভাগ। আড়ালে থেকে সিন্ডিকেটের কমিশন, বসে বসে সরকারী বেতন আর অনুদানের টাকা লুট করতে ব্যস্ত তারা। তাদের আশেপাশে কে বা কারা সিন্ডিকেট শুরু করছে সেটার কোন তথ্য থাকেনা তাদের কাছে। কৃষকরা কি কি সমস্যার মুখে পড়ে সেগুলি সমাধান তারা করেছে কি আদৌ।
এই দিক দ্রব্যমূল্যের দাম বৃদ্ধি পেলেই সরকার ও গণমাধ্যমে আসে সিন্ডিকেটের কথা। কিন্তু আদৌ কি তাই, নাকি সঙ্কট থেকে হয় দাম বৃদ্ধি? আবার কৃষক বা খামারিরা সেই সুবিধা কি পাচ্ছেন? দিনে দিনে কৃষি ফসল ও হাঁস-মুরগি, মাছ এবং গরু-ছাগল উৎপাদনে ব্যবহৃত সার-কীটনাশক থেকে শুরু করে অন্যান্য জিনিসপত্রের যে হারে দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে-তাতে কয়জন খামারি বা কৃষক সুফল পাচ্ছেন বা শান্তিতে আছেন? অধিকাংশ কৃষক ও খামারিরা রাত-দিন পরিশ্রম করে যান।দিনশেষে লাভ হোক আর লোকসান, তাঁরা তাঁদের কর্মকেই প্রাধান্য দেন আগে।কিন্তু মধ্যসত্বভোগীদের আগে মাথায় থাকে লাভের কথা। হে তাদেরও যে লোকসান হয় না তেমন না।সে ক্ষেত্রে কেবলই যারা মাঠ পর্যায়ের স্বল্প পুঁজিওয়ালা মধ্যসত্বভোগী তারা লাভ-লোকসান দুটোরই মুখোমুখি হতে হয়।তবে এদেশের বড় বড় টাকাওয়ালা মধ্যসত্বভোগীরা দেখেন শুধু লাভ আর লাভ।তাদের কখনো লোকসান হয় বলে জানা নাই। কারণ দাম কমলে তারা পণ্য বিক্রি করেন না।আটকে রাখেন। দাম বাড়লেই কেবল তারা মার্কেটে ছাড়েন পণ্য।কিন্তু আমাদের মতো ৯৯ ভাগ চাষি বা খামারিদের উৎপাদিত পণ্য আটকে রাখার মতো সে সাধ্য নাই।টাকার প্রয়োজনে আমাদের উৎপাদিত পণ্যগুলো মার্কেটে ছাড়তেই হয়। দাম কমুক আর বাড়ুক তখন দেখার থাকে না।টাকার প্রয়োজনে উৎপাদিত পণ্য বিক্রি করতেই হয়।
প্রক্ষান্তরে বাজারে যখন প্রচুর আমদানি ও দাম থাকে, তখন টাকাওয়ালারা পণ্য কিনে আটকে রাখেন। যখন দাম বাড়ে কেবল তখনোই তাঁরা সেসব মজুদজাত পণ্য বিক্রি করেন।এমনকি বড় বড় খামারিরাও সে কাজ করেন।কিন্তু ডিম তো আটকে রাখার জিনিস নয়।তিন-চারদিনের মধ্যে বিক্রি করতেই হয়।তাহলে দাম বাড়াচ্ছে কারা? এখানে শুধু সিন্ডিকেটের দোষ খুঁজে লাভ নাই।আমার কাছে এখন যেটুকু মনে হয়, ডিমের দাম বৃদ্ধির মূল কারণ খামারিরা বর্ষায় ক্ষতিগ্রস্থ হওয়া ও লোকসানে অনেক খামার বন্ধ হয়ে যাওয়া। এর ফলে ডিমের উৎপাদন কমে গেছে।দামও বেড়েছে।কিন্তু আমরা ছুটছি সিন্ডিকেটের পেছনে। এর ফলে মূল সমস্যাওয়ালা যারা তারা থাকছে আড়ালে।
আমি মনে করি দেশের বাজারে হঠাৎ কৃষিপণ্য, মাছ-মুরগি, ডিম বা মাংসের দাম বৃদ্ধি বা কমার জন্য সরকারি দায়িত্বশীল প্রতিষ্ঠানগুলো থাকে আড়ালে। এদের কোনো দায়ভার থাকে না বলে দিনে দিনে অথর্ব প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিপ্তর, প্রাণীসম্পদ বিভাগ ও মৎস্য বিভাগ।এরা শুধু কেনাকাটাতে ব্যস্ত। আর সরকারি অনুদানগুলো নিজেদের পছন্দের লোকজনকে দিয়ে ভাগ-বাটোয়ারায় ব্যস্ত। আদৌ কৃষক বা খামারিদের প্রয়োজের এরা কোনো কাজে আসে না।মাঠপর্যায়ের কোনো তথ্য এদের কাছে থাকে না। ঘরে বসে দায়সারা জরিপ পাঠানো গেলেই এদের কাজ শেষ। আদৌ দেশের মানুষের চাহিদা এবং জোগান নিয়ে এরা কোনো কাজ করে না। কৃষক এবং খামারিদের বিপদে যদি এরা পাশে থাকত, তাহলে কখনোই দেশে হঠাৎ দ্রব্যমূল্যের দাম আকাশচুম্বি বা তলানিতে গিয়ে ঠেকত না।সরকারের সুবিধাগুলো যদি আসল কৃষক ও খামারিদের মাঝে সঠিকভাবে বন্টন হয়, বা সঠিক পরামর্শ পান তাহলে অনেকটায় কেটে যাবে সঙ্কট।কাজেই সিন্ডিকেটের পেছনে না দৌড়িয়ে এদের আগে ধরুন।