সচিবালয়ের ভেতরে ঢুকে নাশকতার অভিযোগে গ্রেফতার ২৬ শিক্ষার্থীকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। তারা ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত বলে জানিয়েছে পুলিশ।
ওই ঘটনায় প্রথমে ৫৪ জনকে আটক করা হলেও ২৮ জনকে মুচলেকায় ছেড়ে দেওয়া হয়। বৃহস্পতিবার শুনানি শেষে ঢাকার মহানগর হাকিম বেলাল হোসেন জামিন নামঞ্জুর করে তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপকমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান বলেন, গ্রেফতার ২৬ জনকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, তারা নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের সঙ্গে জড়িত। তাদের আদালতে হাজির করা হয়। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই একরামুল হক এই মামলার তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাদের কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন।
২৬ শিক্ষার্থী হলেন-জহিরুল ইসলাম (২০), ফয়সাল হাসান (২১), রায়হান হোসেন (২১), রুবেল আহম্মেদ (১৮), রিয়াদ মাহমুদ (২১), মেজবাউল রহমান মিল্লাদ (১৮), মেহেদী হাসান (১৮), সোয়ান (২১), ইমরান হোসেন আরমান (১৮), মেহেদী হাসান অন্তর (১৯), সাগর (১৮), রোহান (১৮), শাহারিয়ার হোসেন সোয়াদ, আহাদ মোল্লা (২২), সোহান (১৮), মাসনুন (১৮), নাঈম (১৮), ইমাম হাসান (১৮), শাকিল (১৮), সেলিম (১৮), সাকলাইন মুস্তাক (১৮), হানজালাল (২২), মশিউর রহমান (১৮), প্রান্তিক (১৮), তাছিম রহমান (১৮) ও রবিন মিয়া (১৮)।
বুধবার এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফলে বৈষম্যের অভিযোগে সচিবালয়ের ভেতরে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সামনে বিক্ষোভ করেন কিছু শিক্ষার্থী। ওই দিন বেলা পৌনে ৩টার দিকে এইচএসসির ফলাফল নতুন করে মূল্যায়নের দাবিতে ৬০-৭০ জন শিক্ষার্থী সচিবালয়ের ভেতরে ঢুকে বিক্ষোভ শুরু করেন। তাৎক্ষণিকভাবে সচিবালয়ের সব ফটক বন্ধ করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বিক্ষোভকারীদের লাঠিপেটা করে ছত্রভঙ্গ করে দেয় এবং এ সময় ৫৪ জনকে আটক করা হয়। পরে তাদের শাহবাগ থানায় হস্তান্তর করা হয়।
শাহবাগ থানার মামলায় বৃহস্পতিবার গ্রেফতারদের আদালতে হাজির করে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা থানার উপপরিদর্শক ইকরামুল হক। অন্যদিকে আসামিদের আইনজীবী জামিন চেয়ে আবেদন করেন। দুপক্ষের শুনানি শেষে আদালত তাদের কারাগারে পাঠান। শুনানির একপর্যায়ে বিচারক জানতে চান, যাদের আটক করা হয়েছে তাদের ছাড়েনি কেন?
তখন আইনজীবীরা বলেন, তাদের গার্ডিয়ান যেতে না পারার কারণে ছাড়েনি। আদালত তখন জানতে চান, তারা কেন সচিবালয়ে গিয়েছিল? আইনজীবীরা বলেন, পত্র-পত্রিকায় দেখেছি এইচএসসির ফল বাতিলের দাবিতে গিয়েছিল। তখন বিচারক বলেন, যারা ফেল করেছে তাদের রেজাল্ট শিট দেখান। তখন কয়েকজন আইনজীবী বলেন, তার আসামি পাশ করেছে। এ সময় বিচারক বলেন, ফেল না করলে সেখানে গিয়ে কাজ কী।
আইনজীবীরা বলেন, বন্ধুদের জন্য গেছে। বিচারক বলেন, কয়েক দিন হাজতখানায় থেকে আসুক। এরপর তিনি জামিন নামঞ্জুর করে তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ইকরামুল জানান, সচিবালয়ে বিশৃঙ্খলার অপরাধে শাহবাগ থানার মামলায় ২৬ জনকে গ্রেফতার করে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করি। পরে আদালত তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। তাদের সবাই শিক্ষার্থী।